18/07/2025
জীবনে বেচে থাকলে সন্তানকে বলে যাবো নিহায়েত বিপদে না পরলে কখনো চাকরি না করতে। ছোট হোক কিংবা বড় হোক ব্যবসাটাই যেন সে করে।
আজকের ফেইসবুক স্ট্যাটাসটা বেশ বড় হবে তবে টা আমার জীবনের সমস্ত পড়াশোনা আর অভিজ্ঞতার আলোকে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসা ২টা মূল কারনে পছন্দ করি।
১. ইসলামে ব্যবসা (সতভাবে) করার প্রতি বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের প্রতি আলাদা পুরষ্কার আল্লাহ বন্দোবস্তো করবেন।
২. আমি এখন সফল, পরিশ্রমী আর নীতিবান ব্যবসায়ী বাবার গর্বিত সন্তান। তাই বাবার ব্যবসায়ী জীবন থেকেও এটা আমাকে অন্যভাবে টানে।
*ব্যবসাতে লাভ/লস আছে, কিন্তু শান্তি আছে, স্বাধীনতা আছে যা লাখ লাখ টাকা বেতনের অফিসে নাই। আপনার ব্যবসায় আপনি রাজা, যখন খুশি তখন ডিসিশন নিবেন, পরিশ্রম করবেন আবার বিশ্রামও নিবেন।
ধনী অমুসলিমরা কিংবা ওয়েস্টার্নরা ব্যবসা করেন আর চাকরির সুযোগ করে দেন অন্যদের (যেটা ইসলাম ইন্সপায়ার করে), আর আমরা মুসলিমরা সবাইকে পুশ করি চাকরি করতে, চাকরিতে নাকি সম্মান বেশি কম রুজি হলেও। এই মানদন্ডটা কে করে দিল তাদেরকে আমার প্রশ্ন? এটা আসলে আমাদের তৈরি বিপরিতগামী সমাজ আর সমাজের নিজস্ব চিন্তাভাবনা যা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় যার কোন ভিত্তি নেই।
সম্মান তো ব্যবসাতে আরো বেশি আছে। যদি না হতো আপনারা বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট কিংবা ইলন মাস্কদের অসম্মানি ব্যক্তি ভাবেন?
লেখাপড়া করলে চাকরি করা উচিত এই মানদন্ড যদি হয় তবে ড: ইউনুস তাহলে একজন বলদ!!?
বিল গেটস কিংবা ফেইসবুকের মার্ক জাকারবার্গ হার্ভার্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র, তবে তারাও বলদ??
চাকরি করে লোন নিবেন? দেখেন কত টাকা লোন পান। ব্যবসা করে লোন নেবেন? ব্যাংকাররা আপনার বাসায় আসবে লোন দিতে। এগুলো আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনেও বাবার ক্ষেত্রে দেখেছি। উনি চাচ্ছেন না নিতে কিন্তু ব্যাংকাররা প্রতিদিন এসে পাগল করে দিচ্ছে।
ব্যাংকে যে চাকরি করেন সেখানে একবার ভেবেছেন যে আপনার আর আমার টাকা দিয়ে এই ব্যাংক ব্যবসাই করে, চাকরি করেনা।
চাকরি হলো ব্যবসার লাভের খুবই খুবই একটা নগন্য অংশ।
চাকরি করে কেউ কোটিপতি কিংবা মিলিয়নিয়ার হতে শুনিনি, কিন্তু ব্যবসাতে বিলিয়নিয়ার আছে। দুনিয়ায় যত ধনী ব্যক্তিরা আছেন তারা মেক্সিমামই ব্যবসায়ী।
আমি ব্যবসার প্রশংসা করছি কারণ আমি নিজেও একজন চাকরিজীবি, নিউজিল্যান্ডে আমার চাকরির টাকায় আমার স্ত্রী সন্তান চলছে। তাই আমি বুঝি চাকরিটা আসলে কি।
বিদেশে বসে যতই মোটা অংকের অফিস জব করিনা কেন আমি জানি আমি কখনো ধনী হতে পারবনা। আমার ছুটি নিতে গেলে এনুয়েল লিভ জমাতে হয়, ডে ইন লু ডে, কিংবা সিক লিভ জমাতে হয়। আর ছুটি চাইতে গেলে লম্বা প্রসেসের মধ্যে যেতে হয়। কখনো এপ্রোভ হয়না কিংবা কখনো হয়না। চাকরি বদলিয়ে নতুন কোম্পানিতে সুন্দর চেয়ারে বসে অফিস করা যায় তবে প্রথম ১২ মাসের আগে ছুটি নাম নিতে পারবেন না। মানে আপনি গরিবও থেকে যাবেন, বন্দিও থাকবেন, সাথে চাকরানি করে যাবেন আজীবন তাদের আন্ডারে যারা আসলে ব্যবসায়ী।
বেতন পেলে প্রথম গরম গরম খরচ, পরে মাস কিংবা সপ্তাহ শেষে আপনার ফুটানি শেষ।
আমার মত যারা সীমিত বা সীমাবদ্ধ চিন্তার লোক তারাই কেবল গাধার মত চাকরি করবে কিন্তু যারা নিজেকে অনেকটা ব্রড মাইন্ডেড কিংবা প্রগতিশীল ভাবেন তারা ব্যবসা করবেন।
মূল কথায় আসি, জীবনের অভিজ্ঞতায় আর লেখাপড়ায় যা শিখলাম। আমরা মুসলিম জাতি খোদার আদেশ না মেনে উলটা পথে হাটি, আর অমুসলিমরা মুসলিম না হয়েও এরা ইসলামের আদর্শের অনুসারী যা একটা চাকরি কিংবা ব্যবসার গল্প দিয়েই উধারণ শেষ করা যায়।
©Sifat Mohammad Azwad