05/10/2025
উপমহাদেশের ঐতিহ্যের জনপদ ও অন্যতম প্রাচীন জেলা কুমিল্লা।উপজেলার সংখ্যানুসারে কুমিল্লা বাংলাদেশের 'এ' শ্রেণিভুক্ত জেলা। ৬২ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস এ জেলায়। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য কোন কিছুতেই পিছিয়ে নেই কুমিল্লার মানুষ। কুমিল্লার বহু শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, কৃষিবিদ, চিকিৎসক, শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অভিনেতা, ক্রীড়াবিদ, বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ দেশ পরিচালনার কাজে নিয়োজিত। একসময় ব্যাংক এবং ট্যাংকের শহর বলা হতো এই কুমিল্লাকে। এছাড়াও কুমিল্লা ইপিজেড, বিবির বাজার স্থলবন্দর, কৃষিক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন, দাউদকান্দির প্লাবন ভূমিতে মৎস্য চাষ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে আসছে। প্রবাসীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হওয়ায় জাতীয় অর্থনীতি ও স্থানীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখে আসছে এই কুমিল্লা। এমনকি রেমিটেন্স প্রবাহেও শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা। কুমিল্লার খাঁদি, তাঁতশিল্প, কুটিরশিল্প, মৃৎশিল্প, মাতৃভান্ডারের রসমালাইসহ ময়নামতির শীতলপাটি পৃথিবী জুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। কুমিল্লায় রয়েছে অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত কোটবাড়ির শালবন বৌদ্ধবিহারসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ, রয়েছে ময়নামতি জাদুঘর, লালমাই পাহাড় এবং ড. আখতার হামিদ খানের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), ব্রিটিশ আমলের কুমিল্লা সেনানিবাস, ওয়্যার সিমেট্রি, বিমানবন্দর, সুদীর্ঘ রেললাইন। কুমিল্লায় রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। এছাড়াও রয়েছে শতবর্ষের ঐতিহ্যে লালিত দেশের একমাত্র সার্ভে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সার্ভে ইনস্টিটিউট। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ,কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা ইস্পাহানি স্কুল এন্ড কলেজ, সোনার বাংলা কলেজ, আবদুল মজিদ কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কুমিল্লা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা জিলা স্কুল, নবাব ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়, মিশনারি স্কুল, কুমিল্লা মডার্ণ হাই স্কুল, কুমিল্লা হাই স্কুল, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজসহ আরো নামকরা বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে জন্ম নিয়েছেন নারী জাগরণের অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী, ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত,গীতিকার, সুরকার, শিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক শচীন দেব বর্মন, পল্লী উন্নয়নের কারিগর ড. আখতার হামিদ খান, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায়সহ বিখ্যাত অনেক ব্যক্তিবর্গ। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা আন্দোলনে কুমিল্লার মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। বিভাগ হওয়ার মতো সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমরা বিভাগ হওয়া থেকে বারবার বঞ্চিত হচ্ছি।
আমরা আর বঞ্চিত হতে চাই না, তাই সবাই আওয়াজ তুলুন, কুমিল্লা নামেই বিভাগ চাই।