21/05/2025
কথা বললে গ্রেপ্তার, প্রতিবাদ করলে গুম আর রাজপথে নামলে গুলি - এই নিয়মে মিশরে ৩০ বছর স্বৈরশাসন
চালান হোসনি মোবারক।
২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় মোবারকের। তার কয়েক মাস পর ক্ষমতায় আসেন মোহাম্মদ মুরসি।
প্রথমবারের মতো গণতন্ত্র পেয়ে এটা চাই, ওটা চাই, এরকম সংবিধান চাই, ওরকম সংবিধান চাই, ডানপন্থি নিপাত যাক, বামপন্থি নিপাত যাক - এসব আন্দোলন করতে করতে এক পর্যায়ে বামপন্থিরা দাবি তুলল মুরসিকেই চাই না।
এ দাবিতে প্রতিবেশী ইসরাঈল, সৌদি আরবসহ মুরসি বিরোধী অভ্যন্তরীন শক্তিও সমর্থনও দিয়েছিল। ফলে ২০১৩ সালে আবার রক্তপাত হয়।
সরকার অচল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশে কাজকর্ম সব বন্ধ অবস্থা। অস্থিরতার সুযোগে ক্ষমতা দখল করলেন "জেনারেল সিসি"। এরপর থেকে মিশরে আন্দোলন দূরে থাক, টু শব্দও নাই! কোন বেডার সাহস নাই সরকার বিরোধিতা করে কিছু বলার।
মুরসি সমর্থকদের হত্যার পর, মুরসি বিরোধী বামদের আদর্শের সঙ্গে পাছাও লাল করে দেন সিসি। স্বৈরাচার হোসনি মোবারকেও জেল থেকে ছেড়ে দেন। তিনি আয়েশে বাকি জীবন কাটিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত হয়েছেন।
"মোবারকের " আমলের নিপীড়করা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এখন সম্মানিত ব্যক্তি। কেউ বড় পদে, কেউ অবসরে। ডান, বাম, মধ্যপন্থীসহ সব ধারার অভ্যুত্থানকারী হয় জেলে, নয়তো বিদেশ কিংবা দৌড়ের ওপরে।
কথা বললে গ্রেপ্তার, প্রতিবাদ করলে গুম আর রাজপথে নামলে গুলি - এই নিয়মে বিগত ১২ বছর মিশর চালাচ্ছেন "জেনারেল সিসি"।(মনসূর আলী)
এবার আসেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের ও ভবিষ্যত কল্পনা করি।
বিগত ১৬ বছর হাসিনা কার্যক্রম ছিলো ঠিক ৩০ বছরের স্বৈরশাসক "হোসনি মোবারকের "মতো অবস্থা।
বিএনপি ,ডান ,বাম,জামাত কাউকে ছাড় দেয়নি গ্রেফতার ,গুম ,খুন,মামলার কথা সবাই জানেন।
তারপর হয় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন , ক্ষমতায় আসে ঠিক ড. মোহাম্মদ মুরসির মতো ড. মোহাম্মদ ইউনূস।
তারপর পূর্ণ গণতন্ত্র পাইলো বাংলাদেশ!
ক্ষমতা নেয়ার ১০ মাস, সবার এই চাই ,সেই চাই ,অবরোধ , ব্লকেড , মার্চ টু যমুনা এরকম সংবিধান চাই, ঐরকম সংবিধান চাই, এদিকে বিএনপি, জাতীয় পার্টির নির্বাচনের প্রেশার, গুজব লীগের কথা বাদই দিলাম ইত্যাদি।
বিএনপি ইউনূসকে একটা কাজও ঠিক মতো করতে দিচ্ছেনা ,দৌড়ের উপরে রাখছে সব সময়। ঐদিকে ভারত ইউনুস বিরোধী , করিডোর ইস্যুতে ইউনূসের বিরুদ্ধে জনগণকে দিচ্ছে লেলিয়ে। অজানা কোন কারণে নারী নীতির সংস্কার বিরোধী আন্দোলনকে আমলে নিচ্ছে না সরকার!
হয়তো তা রাজনৈতিক দলগুলো সমালোচনা ছাড়াই আলোচনা করে সমাধান করতে পারতো।
একদিন হুট করে শুনবেন , ড.ইউনূস আউট। মানে মিশরের মুরসির মতো অবস্থা।
তারপর হুট করে শুনবেন, হয়তো পরবর্তী নির্বাচিত সরকার কিংবা তৃতীয় একটা শক্তি জেনারেল সিসি এর মতো কেউ ক্ষমতায় আসবে।
তারপর এই অভাগা জাতি কঠোর স্বৈরাচারী আচরণের শিকার হবে। ২৪ এর আন্দোলনকারীরা জেল ,গুম, খুনের স্বীকার হবে। যারা সরকারের কাছে ন্যায্য অধিকার চাইতে যাবে তাদেরকেও ইচ্ছেমতো দমন করা হবে। সরকারের বিরোধিতা করলে তো দেশ ছাড়া করবেই।
এই জাতির ক্ষমতার লোভ বেশি। গোলামী করার স্বভাবের কারণে কখনো ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবেনা।
এই অভাগা প্রজম্মের ভবিষ্যত অন্ধকার বলেই মনে হয়! সামনে ভয়ংকর বিপদ অপেক্ষা করছে।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বলছে ,আমাদের ভাগ্যে সুখ বলতে কিছু আসবে বলে মনে হচ্ছেনা।
সামনের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে।
অতএব, সাধু সাবধান! সময় এখনো হয়তো আছে! আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। নীতি নির্ধারকদের শুভ বোধদয় ঘটুক/ আমিন।