27/04/2025
গাইরতহীন স্বামীর প্রতি স্ত্রীর চিঠি
ভাগ্যবিড়ম্বিতা আফিফা। তার নামের মতোই সে পবিত্র ও দ্বীনদার এক নারী। বিয়ের আগে দ্বীনের ওপর ছিল অটল। কিন্তু বিয়ের পর তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। স্বামী শুধু গাইরতহীনই নয়, বরং দ্বীন-ধর্মে উদাসীন, রুক্ষ ও রগচটা।
মুখে কিছু বললে হয়তো আরও সমস্যা বাড়বে—তাই হৃদয়ের কান্না মিশিয়ে সে একদিন লিখে ফেলে একটি চিঠি, তার প্রিয়তম স্বামীর উদ্দেশে—
প্রিয় স্বামী,
একটু মন দিয়ে আমার কথাগুলো শুনো।
তুমি জানো, আমি সবসময় চাই তোমাকে সম্মান দিতে। কিন্তু এমন কিছু বিষয় আছে, যা চুপ থাকতে পারি না।
তুমি যখন আমার পর্দা, অজু, ইবাদতের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখাও, আমি ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ি।
তুমি যখন অন্য পুরুষদের দৃষ্টির সামনে আমাকে তুলে ধরো, আমি কাঁদি।
তুমি যখন অন্যায় আচরণ দেখেও চুপ থাকো, আমি অসহায় বোধ করি।
তুমি কি জানো, আমি একা বাইরে বের হলে কেমন অনিরাপদ বোধ করি?
আমার আব্রু যেন আমারই দায়, অথচ তোমার কোনো দায়বোধ নেই!
তুমি কি ভুলে গেছো, স্ত্রীকে রক্ষা করা স্বামীর অন্যতম দায়িত্ব?
তুমি আমার নেকাব খুলে দিতে বলেছিলে, বলেছিলে "তোমাকে কেউ চিনবে না।"
কিন্তু আমি তখনই বুঝে গেছি—তোমার জন্য আমার লজ্জা ও ইজ্জতের কোনো মানে নেই।
আমি জানি, তুমি রেগে যাও সহজেই—
কখনো আমাদের সন্তানের ছোট ভুলে,
কখনো বাসার ছোটখাটো গণ্ডগোলে,
কিন্তু নিজের দ্বীন, দায়িত্ব আর গাইরতহীনতাকে নিয়ে কখনোই তুমি বিচলিত হও না।
আমি চাই তুমি বদলাও,
আমি চাই তুমি আমার দিকে গর্বভরে তাকাও,
আমি চাই তুমি এমন একজন স্বামী হও, যার পাশে আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করি, গর্বিত মনে করি।
তুমি যদি আমার এই কান্নাভেজা চিঠিটা পড়ে একটুও কষ্ট পাও,
তাহলে বুঝবো, তোমার হৃদয় এখনো পুরোপুরি মরেনি।
তুমি বদলাতে পারো। তুমি আবারো আমার “নায়ক” হতে পারো।
—তোমার স্ত্রী, আফিফা
নোট:
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, “গাইরত” শব্দটি অনেকের কাছে অপরিচিত হতে পারে।
গাইরত হলো—নিজের পরিবার, স্ত্রী-সন্তান, ইজ্জত ও দ্বীনের ব্যাপারে দায়িত্ববোধ, আত্মমর্যাদা ও ঈমানদারির পরিচায়ক।
একজন পুরুষের মূল গুণাবলির একটি।
( সংগৃহীত )