28/05/2025
দামেস্কে একজন দরিদ্র ট্যাক্সি ড্রাইভার ছিল, একদিন তিনি যাত্রাপথে ভুলবশত মেডিসিন বিভাগে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থীর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিলো যার কারণে সেই ছাত্রটি সেখানেই মৃত্যুবরণ করে।
যেহেতু ট্যাক্সি ড্রাইভারটি অনেক দরিদ্র ছিলো তাই শায়খ মুহাম্মাদ আয়ওয়াদ এবং অন্যান্য আলেমগণ সকলে মিলে ছেলেটির বাবার কাছে গিয়েছিলেন। আর ছেলেটির বাবা ও ছিলেন একজন বিচারপতি তাই সকলে মিলে আবেদন করেন যে, বিচারপতির ছেলেকে যে দরিদ্র ট্যাক্সি ড্রাইভার এক্সিডেন্ট করিছিলো তাকে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ করলেন এবং তারা তাকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে কিছু অর্থ প্রদান করতে চেয়েছিলেন।
সবাইকে অবাক করে বিচারপতি পিতা আশ্চর্যজনকভাবে উত্তর দিলেন, 'আল্লাহর কসম, আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং আমি তার কাছে একটি পয়সাও চাই না। আগামীকাল আমি কারাগারে যাব এবং তাকে আমার নিজের হস্তক্ষেপে তকে বের করে আনব।'
তখন বাবা বললেন, 'শাইখ আয়ওয়াদ, আপনি আমার বাড়িতে এসেছেন এবং আমি আপনাকে হতাশ হয়ে যেতে দেব না!'
তাই ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ক্ষমা করা হয়েছে।
বহু বছর পরে, এই বিচারপতি পিতা প্যারালাইজড এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাই তার পরিবার তাকে মক্কা শরীফে শেষবারের দর্শনের জন্য নিয়ে যায়। তারা তাকে স্ট্রেচারে বসিয়ে তাওয়াফ করালেন।
যখন তাঁকে তাওয়াফ করানো হচ্ছিল, তখন তিনি অশ্রুসিক্তভাবে বললেন, "হে আল্লাহ, শায়খ 'আয়ওয়াদ আমার কাছে একজন ব্যক্তির জন্য ক্ষমা চাইতে এসেছিল যে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে এবং আমি বলেছিলাম, 'আমি আপনাকে আমার বাড়ি থেকে হতাশ হতে দেব না।' আজ, আমি প্যারালাইজড নিয়ে আপনার বাড়িতে এসেছি এবং অনুরোধ করছি যে আপনি আমাকে হতাশ হতে দেবেন না!'
যতক্ষণ পর্যন্ত উনার শরীর সুস্থ হয়নি ততক্ষণ তিনি তার দু'আ শেষ করেননি, এরপর দয়াবান মহান রাব্বুল আলামীন তাকে সুস্থতা দান করেন এবং তিনি এরপর সম্পূর্ণ সুস্থতার সাথে হেটে হেটে পুরো তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। (সুবহানাল্লাহ)
সেদিন যারা যারা এই ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল তারা সবাই তাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
এই ঘটনাটি থেকে আমাদের জন্য মূল শিক্ষা হচ্ছে যদি কেউ আপনার সাথে অন্যায় করে তাহলে তাদের ক্ষমা করুন,
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'লা আপনাকেও এমন অলৌকিক ঘটনা দেখাবেন
শাইখ আয়ওয়াদ রাহিমাহুল্লাহ দামেস্কে মিম্বরের সিংহ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শায়খ জীবনের শেষ বছরগুলো মদীনায় অতিবাহিত করেছেন।
তথ্য সংগ্রহ: শায়খ মুহাম্মদ আসলাম হাফিজাহুল্লাহ।