02/07/2024
পবিত্র যোগিনী একাদশীর শুভেচ্ছা!
যোগিনী একাদশীর মাহাত্ম্য:
মহাপাপ নাশকারী এই তিথি ভবসাগরে পতিত মানুষের উদ্ধার লাভের একমাত্র নৌকাস্বরূপ। ব্রত পালনকারীদের পক্ষে এটি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্রত বলে প্রসিদ্ধ।
অলকা নগরে শিবভক্ত পরায়ণ কুবের নামে এক রাজা ছিলেন। তার হেমমালী নামে একজন মালী ছিল। প্রতিদিন শিব পূজার জন্য মানস সরোবর থেকে সে ফুল তুলে যক্ষরাজ কুবেরকে দিত। বিশালাক্ষী নামে হেমমালীর এক পরমা রূপবতী পত্নী ছিল। সে তার সুন্দরী পত্নীর প্রতি অত্যন্ত আসক্ত ছিল। একদিন সে তার স্ত্রীর প্রতি কামাসক্ত হয়ে রাজভবনে যাওয়ার কথাও ভুলে গেল। বেলা দুই প্রহর অতীত হলে অর্চনের সময় চলে যাচ্ছে বলে রাজা ক্রুদ্ধ হয়ে মালীর বিলম্বের কারণ অনুসন্ধানে এক দূত প্রেরণ করলেন। দূত তার স্ত্রী সাথে তার আনন্দে মত্ত হওয়ার কথা জানালে কুবের অত্যন্ত রেগে তখনই মালীকে তার সামনে হাজির করতে আদেশ দিলেন। দেরি হয়ে যাওয়ায় স্নান না করেই সে রাজার কাছে উপস্থিত হলো। তাকে দেখা মাত্র রাজা রেগে তাকে অভিশাপ দিলেন যে সে শ্বেতকুষ্ঠগ্রস্ত হবে এবং প্রিয়তমা ভার্যার সাথে তার চিরবিয়োগ সংগঠিত হবে। এই স্থান থেকে ভ্রষ্ট হয়ে অধঃগতি লাভ হবে। কুবেরের এই অভিশাপে হেমমালী পত্নীর সাথে স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে দীর্ঘকাল যাবৎ কুষ্ঠ রোগ ভোগ করতে লাগল। কিন্তু দীর্ঘদিন মহাদেবের অর্চনের ফুল সংগ্রহের সুকৃতি ফলে সে শাপগ্রস্ত হয়েও বৈষ্ণবশ্রেষ্ঠ শিবের বিস্মরণ কখনও হয়নি। একদিন হেমমালী ভ্রমণ করতে করতে হিমালয়ে শ্রীমার্কণ্ডেয় ঋষির আশ্রমে উপস্থিত হলো। কুষ্ঠরোগে পীড়িত সপত্নী হেমমালীকে দর্শন করে শ্রীমার্কণ্ডেয় তাকে তার এই অবস্থার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে সব কথা জানিয়ে ক্ষমা চায়। তারপর মার্কণ্ডেয় মুনি তাকে আষাঢ় মাসের কৃষ্ণপক্ষের 'যোগিনী' নামক একাদশী ব্রত পালন করতে বললেন। ঋষির উপদেশ শ্রবণ করে হেমমালী তাকে প্রণাম জানালো। পরে অত্যন্ত আনন্দে ঋষির আদেশমতো নিষ্ঠার সঙ্গে যোগিনী একাদশী ব্রত পালন করল। এইভাবে হেমমালী সমস্ত রোগ থেকে মুক্ত হলো ও পত্নীসহ সুখে জীবন যাপন করতে লাগল।
এই ব্রত পালনে ৮৮ হাজার ব্রাহ্মণকে ভোজন করানোর ফল লাভ হয়। যে ব্যক্তি এই মহাপাপ বিনাশকারী ও পুণ্যফল প্রদায়ী যোগিনী একাদশীর কথা পাঠ এবং শ্রবণ করে সে অচিরেই সর্বপাপ থেকে মুক্ত হবে।