Ashik blogs

Ashik blogs থাকবো আমি সবার পাসে

13/10/2023

নিজের বিয়ে করা বউকে স্পর্শ করার অপরাধে যেদিন বাসর ঘরে চরম অপমান সহ্য করতে হয়েছিল সেদিনও আমি চুপ করেছিলাম। অনেক ভালোবাসা নিয়ে যখন মেয়েটার হাতে হাত রেখেছিলাম তখন মেয়েটা তাঁর হাত সরিয়ে নিয়ে বলেছিলো,

"আপনাদের মতো ছেলেদের লজ্জা বলতে কোনো কিছু নেই। মেয়ে দেখলে নিজেদেরকে ঠিক রাখতে পারেন না। ভালো ভাবে যে মেয়েটাকে চেনেন না,জানেন না। সে মেয়েটার অনুমতি না নিয়েই তাঁর হাতে হাত রেখে ফেললেন। তাকে ভোগ করার জন্য উঠেপড়ে লাগলেন। আচ্ছা বলেন তো বিয়ের আগের আমার সাথে আপনার তেমন কোনো পরিচয় হয়েছে কি? যে পরিচয়ে আপনি লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে আমার হাতে হাত রেখেছেন? আপনি আমাদের অনেক বড় উপকার করেছেন। সেটা আমরা কোনোদিন ভুলবো না। কিন্তু তাই বলে বাবা যখন বলল আমার কথা তখনই বিয়ে করতে রাজী হয়ে গেলেন? একটা বারও আমার কথা ভাবলেন না? আমার আপনাকে পছন্দ হবে কিনা এটা চিন্তা করলেন না? আপনি আমাকে ভুলেও স্পর্শ করার চেষ্টা করবেন না। আমি আপনাকে কোনোদিন নিজের স্বামী হিসেবে মেনে নিবো না। আপনি আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছেন।"

কথাগুলো যখন নাদিয়া বলেছিলো তখন আমি নীরবে কিছুক্ষণ অনেক অপরাধী চোখে তাঁর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তারপর বাহিরে গিয়ে অঝড় ধারায় চোখের পানি ফেলেছিলাম।

কিছুদিন পরে নাদিয়ার এক চাচাতো বোনের বিয়েতে যাই। সেখানে পরিবারের সবার সাথে যখন কথা বলছিলাম তখন নাদিয়া আমার একটা কথায় রাগ করে ফেলে। সেই রাগে সে সেখান থেকে চলে আসে। সবার অনুরোধে আমি পেছন থেকে নাদিয়াকে আটকানোর জন্য তাঁর হাত ধরে ফেলি। আমি ভেবেছিলাম বিয়ে বাড়িতে এতো মানুষের সামনে সে আমাকে কিছু বলতে পারবে না। হয়তো পরে বলবে। তাই তাকে আটকানোর জন্য তাঁর হাত ধরলাম। কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিলো। আমি যখন পেছন থেকে নাদিয়ার হাত ধরলাম তার এক সেকেন্ড পরেই নাদিয়া আমার গালে একটা থাপ্পড় মারলো। সেদিন আমি সত্যি বোবা হয়ে গিয়েছিলাম। কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। বিয়ে বাড়ির সবাই নাদিয়ার ব্যবহারে অনেক অবাক হলেও আমি হয়নি। কারণ ভুলটা আমারই ছিলো। তাঁর অনুমতি ছাড়া তাকে স্পর্শ করেছি। এর শাস্তি আমি পেয়েছি। লজ্জা,ঘৃণায় চুপ করে সেখান থেকে চলে আসি আমি।

ফুটপাত দিয়ে উদেশ্যেহীন ভাবে হাঁটতে থাকি আর নিজের অতীতটাকে ভাবতে থাকি।

আমার জীবনে দুঃখের তুলনায় সুখের পরিমাণ খুবই নগন্য। দশ বছর বয়সে যখন আমার মা মারা যান সেদিনই আমার জীবন থেকে সুখ নামক জিনিসটা চিরতরে হারিয়ে যায়। নাদিয়াকে পেয়ে ভেবেছিলাম আমার দুঃখের অধ্যায় শেষ হয়েছে,হারিয়ে যাওয়া সুখ আবার আমার জীবনে ফিরে এসেছে। কিন্তু সুখ ফিরে আসেনি। বরং দুঃখ গুলো সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস এর মতো হানা দিয়েছে।

মা মারা যাওয়ার পরের দিনই বাবা বিয়ে করে নিয়ে আসেন। প্রথম প্রথম নতুন মা পেয়ে আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পর সে খুশি আর থাকলো না। আমি বুঝতে পারলাম আমার নতুন মা কারো সাথে সবসময় কথা বলেন। একদিন সাহস করে বাবাকে কথাগুলো বললাম। সেদিন বাবা কিছু বলেনি। শুধু বলেছিলো তুমি এসব নিয়ে চিন্তা করো না। পড়াশোনায় মনোযোগ দাও।

তার কিছুদিন পরেই আমার নতুন মায়ের ছোট বোন আমাদের বাড়িতে আসে। একদিন ভুল করে আমি তাকে ভেজা কাপড়ে দেখে ফেলি,তখন আমার বয়স ছিলো তেরো বছর। তখন তখনই আমি তাঁর কাছে ক্ষমা চাই। কারণ সে আমার থেকে বয়সে প্রায় ছয় সাত বছরের বড়। আমি তাকে বলি আমি ইচ্ছে করে আপনার সামনে আসিনি। তারপরেও আমি ক্ষমা পাইনি।

দুইদিন পর যখন বাবা বাসায় আসলেন তখন মা কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলো,
"তোমার ছেলে লুকিয়ে লুকিয়ে আমার বোনকে গোসল করা অবস্থায় দেখেছে,আজকে আবার ভেজা কাপড়ে দেখেছে। আমি যদি ওর নিজের মা হতাম তাহলে কি আমার বোনের সাথে এই নোংরা কাজটা করতে পারতো? বল তুমি।"

বাবা মায়ের চোখের পানি বিশ্বাস করেছিলো কিনা জানি না। আমাকে শুধু বলেছিলো এসব করেছিস নাকি?

আমি বলেছিলাম ভুল করে ভেজা কাপড়ে দেখে ফেলেছি। তবে..

কিছু বলার আগেই বাবা আমাকে লাঠি দিয়ে পিটাতে পিটাতে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলো। আমি মায়ের বোনকে গোসল করা অবস্থায় দেখিনি এইটুকু বলার সুযোগও বাবা আমাকে দিয়েছিলেন না। সেদিন মায়ের পা ধরে কান্না করেছিলাম,বলেছিলাম।
" আমাকে বাসা থেকে বের করে দাও সমস্যা নেই। আমি খুশি মনেই চলে যাবো। কিন্তু এরকম খারাপ একটা অপবাদ আমাকে দিও না।"
কেউ আমার কথা শোনে নি সেদিন। খালি হাতে বাসা থেকে বের হয়ে এসেছিলাম।

তেরো বছর বয়স থেকেই আমার জীবন যুদ্ধ শুরু হয়। মামাদের বাড়িতে এক বছরের মতো ছিলাম। সেখানে বেশিদিন টিকতে পারিনি।
মাঝেই মাঝেই বাবার কাছ থেকে আমি টাকা নিতাম। বাবার কাছ থেকে টাকা নিতে অনেক খারাপ লাগতো। কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য টাকার দরকার। আমি যখন বাবার কাছ থেকে টাকা নিতাম তখন নিজের প্রতি অনেক ঘৃণা হতো। যারা আমাকে এতো অপমান করলো আজ তাদের কাছেই আমাকে হাত পাততে হচ্ছে।

হঠাৎ করেই দেখলাম একটা রিকশা আমার পাশে এসে থামলো। চেয়ে দেখলাম তানিয়া। এই মেয়েটা আমার জীবনের অনেক মূল্যবান জায়গায় জুড়ে রয়েছে। ভার্সিটিতে একমাত্র এই মেয়েটার সাথেই আমি মিশতাম, কথা বলতাম। আমার সাথে কেউ মিশতে চাইতো না। কারণ আমার টাকা ছিলো না,স্মার্ট ছিলাম না,ছাত্রও ভালো ছিলাম না। সবসময় একা একাই থাকতাম। কিন্তু আমার একাকিত্বটাকে কিছুটা হলেও দূর করেছিলো তানিয়া নামের মেয়েটা।

আমিনুল তুমি? রিকশায় উঠে এসো।

সরি তোমার বিয়েতে আসতে পারিনি।
- ইটস ওকে।
- তোমার বউ কোথায়?
- বাসায়।
- তোমার বউকে বলো ভালো করে রান্না বান্না করতে। বলো তোমার আরেকটা বউ আসছে।

তানিয়ার কথা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। তাকে নাও বলতে পারবো না। আবার বাসায় নিয়ে যেতেও পারবো না।

কিছুক্ষণ পর যখন তানিয়া বলল,
"আজ না। অন্য একদিন আমি আর আমার স্বামী তোমার বাসায় গিয়ে তোমার বউকে দেখে আসবো। আজ তুমি আমার বাসায় যাবে।"

তখন প্রশান্তির একটা শ্বাস নিলাম। কারণ আমি ভেবেছিলাম তানিয়া হয়তো আমার বাসায় যাবে।

তানিয়ার বাসায় গিয়ে কেনো জানি খুব খারাপ লাগলো। তবে তানিয়া আর তানিয়ার হাসবেন্ডকে দেখে অনেক ভালো লাগলো। কারণ তারা আমার সামনেই দুজন দুজনের হাত ধরে বসে ছিলো। এটাই হয়তো স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা।

আফসোস,নাদিয়া যদি একটু মায়া নিয়ে কখনো এক সেকেন্ড এর জন্যও আমার হাতটা ধরতো। তাহলে হয়তো আমার জীবনের সমস্ত বেদনা আমি ভুলে যেতাম।

আজ নাদিয়ার জন্মদিন। জন্মদিনে আমার কোনো বন্ধুকে সে দাওয়াত দেয়নি। সে হয়তো আরও খুশি হতো যদি তাঁর জন্মদিনে আমি না থাকতাম। কিন্তু সবার দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়েছে।

এমন তো হতে পারতো। নাদিয়া আমাকে পাশে নিয়ে কেক কাটতো। আমি তাঁর হাত ধরে তাকে কেক কাটাতাম। প্রথম আমাকে সে খাইয়ে দিতো। তারপর দুষ্টুমি করে আমি তার নরম গালে একটু ছুঁয়ে দিতাম। কিন্তু এরকম কিছুই হলো না। নাদিয়া তাঁর বান্ধবীদের সাথে নিয়ে কেক কাটছে। সে আমাকে তাঁর পাশে ডাকেনি। আমিও ইচ্ছে করে যাইনি।

হঠাৎ করে শুনতে পেলাম নাদিয়া কিছু বলছে।

"পৃৃথিবীর সব পুরুষই এক। যখন তারা বউ এর ভালোবাসা পাই না তখন তারা অন্য মেয়ের কাছে ভালোবাসা খোঁজে। কোনো কোনো পুরষতো আবার বউ এর সাথে বিছানায় শুতে না পেরে বাহিরের মেয়েদের সাথে রিকশায় চিপাচিপি করে ঘুরে বেড়ায়। আবার তাঁর সাথে তাঁর বাসায়ও যায়।

আমি যখন বুঝতে পারলাম কথাগুলো নাদিয়া আমাকে উদ্যশে করে বলছে। তখন আর ঠিক থাকতে পারলাম না। সবার সামনে নাদিয়ার নরম গালে কষে একটা চড় বসিয়ে দিলাম। চড় খেয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়।

"তোমার মনমানসিকতা যে এতোটা নিচু জানতাম না। না জেনে তুমি একটা মেয়ে সম্পর্কে এতো বাজে কথা বলতে পারলে? আসলে তোমার ভিতরটা পঁচে গেছে। তোমার শুধু বাহিরের দিকটাই সুন্দর। ভিতরে অনেক আবর্জনা জমে গেছে। যদি পারো ভিতরটাকে সুন্দর করো।"

(চলবে♥ হ্যাপি রিডিং❤️)ধন্যবাদ আপনাকে💖, উৎসাহিত করার জন্য🙏, পেজে লাইক👍 দিয়ে অ্যাক্টিভ থাকুন💯

#গল্পঃ_মনের_মানুষ
পর্ব: ০১
লেখাঃ আমিনুর রহমান

(তিন পর্বে সমাপ্ত হবে গল্পটা। সবাই রেসপন্স করবেন কমেন্টে। 🍁আগামীকাল🔗 একই সময়ে পরবর্তী পর্ব পড়তে পেজটি 👍লাইক করুন আর Follow করুন!! ❤️হ্যাপি রিডিং❤️)

নিবেদিতা ❤️👉 Taking over BD 👈

ছেলেকে দেওয়া একজন আদর্শ বাবার উপদেশঃ১. জুতা সেলাই বা রং করতে চাইলে মেরামতকারীর দোকানের সামনে পা বাড়িয়ে দিও না, বরং জুতাট...
03/10/2023

ছেলেকে দেওয়া একজন আদর্শ বাবার উপদেশঃ
১. জুতা সেলাই বা রং করতে চাইলে মেরামতকারীর দোকানের সামনে পা বাড়িয়ে দিও না, বরং জুতাটা খুলে নিজে একবার মুছে দিও।

২. কখনও কাউকে কামলা, কাজের লোক বা বুয়া বলে ডেকো না। মনে রেখো তারাও কারো না কারো ভাই, বোন, মা, বাবা। তাদেরকে সম্মান দিয়ে ডেকো।

৩. বয়স, শিক্ষা, পদ বা পদবীর দিক দিয়ে কেউ ছোট হলেও কখনও কাউকে ছোট করে দেখ না। নইলে তুমি ছোট হয়ে যাবে।

৪. পড়াশুনা করে জীবনে উন্নতি করো, কিন্তু কারো ঘাড়ে পা দিয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করো না।

৫. কাউকে সাহায্য করে পিছনে ফিরে তাকাইও না, সে লজ্জা পেতে পারে।

৬. সব সময় পাওয়ার চেয়ে দেয়ার চেষ্টা করো বেশি । মনে রেখ, প্রদানকারির হাত সর্বদা উপরেই থাকে।

৭. এমন কিছু কর না যার জন্য তোমার এবং তোমার পরিবারের উপর আঙুল ওঠে।

৮. মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েছো, তাই দায়িত্ব এড়িয়ে যেও না।

৯. তোমার কি আছে তোমার গায়ে লেখা নেই। কিন্তু তোমার 'ব্যবহার' বলে দিবে তোমার পরিবারের অবস্থান কোথায় ?

১০. কখনও মার কথা শুনে বউকে এবং বউয়ের কথা শুনে মাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিও না। কাউকে ফেলতে পারবে না।

১১. কারও বাসায় নিমন্ত্রন খেতে গেলে বাসায় দু-মুঠো ভাত খেয়ে যেও। অন্যের পাতিলের ভাতের আশায় থেক না।

১২. কারো বাসার খাবার নিয়ে সমালোচনা করো না। কেউ খাবার ইচ্ছে করে স্বাদহীন করার চেষ্টা করে না।

১৩. বড় হবার জন্য নয়, মানুষ হওয়ার জন্য চেষ্টা কর।

১৪. শ্বশুর কিংবা শাশুড়িকে এতটা সম্মান দিও, যতটুকু সম্মান তোমার বাবা-মাকে দাও। এবং তাদের প্রতি এমন আচরন কর, যাতে করে তাদের মেয়েকে তোমার বাড়ি পাঠানোর জন্য উতলা থাকে।

১৫. সব সময় ভদ্র ও নম্রভাবে চল এবং সেভাবে কথা বল। কিন্তু অন্যায়ের সাথে আপোষ কর না।

Address

Riyadh

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Ashik blogs posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share