19/07/2025
মুগ্ধ'র আইডিটা কখনো ঘুরে দেখেছেন.?
প্রোফাইল পিকচারে চোখ পিটপিট করা হাস্যেজ্জ্বল চেহারার একটা ছবি। কভার ফটোতে ট্যুরে গিয়ে বাইকের সাথে তোলা ছবি।
ছেলেটা ট্যুর পাগল ছিল। ট্যুরে গিয়েই তুলেছিল হাসিমাখা ছবিগুলো। মৃত্যুর আগে সে লিখেছিল- এখন আমি আপনিই মিডিয়া, দেশে আর কোন মিডিয়া নাই সব বেইচ্চা দিছে।
আবু সাঈদের আইডিটা খেয়াল করেছেন.?
কপালে পতাকা বাঁধা, হাতেও বাংলাদেশের বিশাল পতাকা নিয়ে বীরের বেশে ঠায় দাঁড়িয়ে। কভার ফটোতেও হাস্যেজ্জ্বল ছবি।
মৃত্যুর আগে সে লিখেছিল- আমি শহীদ হলে আমার লাশটা রাজপথেই ফেলে রাখবেন।
শহীদ ওয়াসিমের প্রোফাইলটা খেয়াল করলে দেখবেন সাদা শার্ট পড়ে একজন সুদর্শন তাগড়া যুবক দাঁড়ানো, কভার ফটোতে ঝর্ণার পানিতে হাসি হাসি মুখ করে বসে আছে।
মৃত্যুর আগে সে সবাইকে একত্রিত করতে লিখেছিল- চলে আসুন ষোলশহর
শহীদ শান্তর আইডিটা লক্ষ্য করলে দেখবেন হাসিখুশি বাচ্চা একটা ছেলে, কাঁধে এখনো স্কুল ব্যাগ। সে বের হয়েছিল টিউশন করানোর জন্যে। তারপর ফিরেছে লাশ হয়ে।
মৃত্যুর আগে সে লিখেছিল- আমি আমার রবের কাছে ফিরব ডানামেলা পাখির মতো।
নাফিসা মারওয়ার আইডিটা খেয়াল করলে দেখবেন কি হাসি হাসি মুখ করে দাড়িয়ে আছে মেয়েটা। এইচএসসি এক্সামও দিয়েছিল। কিন্তু রেজাল্টের আগেই শহীদ হয়েছে সে।
মৃত্যুর আগে কল করে সে বাবাকে বলেছিল- আব্বু আমার গায়ে গুলি লেগেছে, আমি বোধহয় মারা যাব। আমার লাশটা এসে নিয়ে যেও
মাঝেমধ্যে জুলাই আন্দোলনের এই শহীদদের আইডিগুলো ভিজিট করবেন। কি স্নিগ্ধ ছিল ছেলেমেয়েগুলো। তাদের সরকারি চাকরির এত দরকার ছিল না, চাহিদা ছিল না।
মুগ্ধ একাই ফ্রিল্যান্সিং করে হাজার হাজার ডলার কামাতো। এই ছেলেমেয়ে গুলোর কোন স্বার্থ ছিল না, ক্ষমতার লোভ ছিল না। ছিল শুধু জেদ। ভাইয়ের রক্তের প্রতিশোধের জেদ।
তারা রাজপথে নেমেছিল শুধুমাত্র ভাইয়ের রক্তের বদলা নিতে।
বেঁচে থাকলে হয়তো এই ছেলেমেয়ে গুলোও আজকে হাসতো, ছবি তুলতো, ট্যুর যেতো। অথচ ওরা আজ অতীত।
এই ছেলেমেয়ে গুলোর রক্তের উপর ভর করেই আজকের নেতারা ক্ষমতায় এসেছে, বড় বড় স্লোগান দিতে পারছে।
মাঝেমধ্যে সময় পেলেই এই ছেলেমেয়ে গুলোর আইডিটা ভিজিট করবেন। তাদের নিষ্পাপ চেহারাগুলোর দিকে তাকাবেন। কতটা স্নিগ্ধতা নিয়ে ওরা তাকিয়ে আছে সেটা খেয়াল করবেন।
ক্ষমতা আর চেয়ারের লোভে পড়ে কেউ এই ছেলেমেয়ে গুলোকে ভুলে যাইয়েন না
- Ibrahim Khalil