04/07/2025
একটু দাড়ান!
প্রবাসে থাকছেন,কাজ করছেন। আপনার ভালোর জন্য ৫ টি টিপস। এই ৫ টি ক্ষুদ্র টিপস মেনে চললে আপনার জীবনও অসুন্দর পরিস্থিতি থেকে বেচে যেতে পারে।চলুন দেড়ি না করে আলোচনায় আসি-
১/ অন্যদের সাথে নয়,নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করুন।
২/ নিজেকে গরিব ভাবুন।
৩/ নিজের সম্পদের ৯০% নিয়ন্তা হোন।
৪/ সুসময়ের মাঝে কঠিন সময়ের প্রস্তুতি নিন।
৫/ নিজেকে ভালবাসুন।
এবার আসুন পয়েন্ট গুলি বুঝিয়ে বলি।
১/ অন্যদের সাথে নয়,নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করুন---- আমাদের প্রবাসী জীবনের প্রাথমিক ও বেশি মর্মান্তিক ধাক্কাটাই খাই এই জায়গাতে। কিন্তু আসলে আমরা বুঝতেও পারিনা,এটা আমাদের জীবনকে আরো পিছিয়ে নেবে। প্রবাসে আসার পর প্রাথমিক কিছু দেনা উঠার সাথে সাথেই আমাদের একটা ভবন বা ধাপট দেখাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ি। যেমন, শহিদ কাকায় জায়গা নিছে,আমারো লাগবে। সঞ্জয় দাদা ভাল একটা বিল্ডিং তুলছে, আমাকেও মান সম্মানের ভয়ে তা করতে হবে। তা না হলে বিদেশি বিদেশি লাগে না ইত্যাদি।
এখানেই গুটির চালে ভুল হয়। এটা করতে গিয়ে বেশির ভাগ প্রবাসীই শুরুতে বাধায় পড়ে। তাই বলে কি ঘর বাড়ির প্রয়োজন নেই? আছে। কিন্তু সেটা আপনার নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করে করুন। মানে সহজ ভাষায়,আপনার সামর্থের সাথে মিল রেখে,কারো সাথে অর্থহীন প্রতিযোগিতা করে নয়।
২/ নিজেকে গরীব ভাবুন ---- এটা মানেটা খুব সহজ। নিজেকে প্রশ্ন করুন। কেন পরিবার সংসার বন্ধু বান্ধব ছেড়ে বিদেশে এসেছেন? নিশ্চয় পেটের দায়ে।
এবার প্রশ্ন করুন,কেন থাকছেন? উত্তর এটাই আসবে,পেটের দায়ে।
তারপর যখন আবার প্রশ্ন করবেন, কেন থাকবেন,সেটাও পেটের দায়ে।
তার মানে আপনি যতক্ষণ দেশে গিয়ে সেটেল্ড না হচ্ছেন ততক্ষণ আপনি গরিব। সেটা টাকাপয়সা জনিত গরিব ও হতে পারে বা অবস্থানগত গরীব। তাই হঠাত হঠাত বড়লোকি হুটানি মারা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। বিয়েতে অঢেল খরচ,দামি ড্রেস, দামি ফোন, দামি বাইক ছাড়া কি হয়? এসব ফুটানি কন্ট্রোলে আনুন। তাই বলে কি শখ আহ্লাদ থাকবে না? হ্যা,তবে সেটা নিজেকে গরীব ভেবে করুন।
৩/ নিজের সম্পত্তির ৯০% এর নিয়ন্তা হোন---- এটা বুঝাটা খুব সহজ। আপনার নিজের যে টাকা সম্পদ রয়েছে, তার কন্ট্রোল যেন আপনার হাতে থাকে। ভুল করেও অন্যের উপর তার নিয়ন্ত্রণ দিবেন না। তবে পরিবারের অন্য সদস্যের উপর যদি একান্তই তা দিতে হয়, তবে সেটা যেন ১০ শতাংশের বেশি না হয়। পিতা মাতা স্ত্রী সন্তান সবাই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কোনপ্রকারে ৯০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ নিজে ব্যাতিত অন্য কারো কাছে দিবেন না। কেননা এটা বেশিরভাগ প্রবাসীদের বেদনা দেয়। আর এই ব্যাপারে বেশি কিছু বলারও নেই। কেননা এটা প্রেক্টিকেলি বেশি দেখা যায়।
৪/ সুসময়ের মাঝে কঠিন সময়ের প্রস্তুতি নিন---- আপনি যখন বিদেশে কাজ করেন তখন নানা ভাষা, নানা জাতের মানুষ ও নানা পরিবেশ পেরিয়ে আপনি ইনকাম করছেন। কিন্তু একবার ভাবুন ত,আপনার মালিক আজ আপনাকে বের করে দিতে পারে,আপনার সুপারভাইজার আপনার সাথে চক্রান্ত করতে পারে,বা আপনি বড় কোন দূর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন ইত্যাদি।
কতক্ষণ থাকবে আপনার চাকরি? তাছাড়া এয়ারপোর্টের সাদা দাগ পেড়োলে আপনার আয় একেবারে বন্ধ। তাই আপনার চাকরি বয়সে যখন সুসময়, তখনি এগুলো মোকাবিলা করার মানসিকতা তৈরী করুন। নিজেকে গুছান। বাড়িতে কত ঢালবেন,জায়গায় কত,পরিবারে কত আর আগাম ব্যবসায় কত পুজি নিয়ে বসতে পারবেন, সব ভাগ করুন। সঞ্চয় করুন। কেননা আজ আপনি ভাল, কাল খারাপ হতে কতক্ষণ?
৫/নিজেকে ভালবাসুন ---- আপনি ততক্ষণই আপনি,যতক্ষণ আপনি আপনার মাঝে আছেন। সুষম খাবার,সুন্দর চলাফেরা, সুন্দর চিন্তা,সুন্দর পরিবেশ দিয়ে নিজেকে গঠন করুন। অনেক প্রবাসীই এটা ভাবে,আমি যাই হোক পরিবার ভাল থাকুক। না। এটা ভুল ধারনা। আপনাকে ভাবতে হবে,আমিও ভাল থাকব সাথে পরিবার। নিজেকে ভালবাসুন। দেখবেন সব এমনিতেই ভাল চলছে।
আমি জানিনা,কতটুকু বলেছি। তবে আমি নিজে প্রবাস জীবন থেকে এতটুকু সংগ্রহ করেছি। আপনার কিছু বলার থাকলে কমেন্টে এড করতে পারেন।বা আপনি এরকম কোন সমস্যায় পড়েছেন কিনা জানাতে পারেন।সব প্রবাসী তথা সবাই ভাল থাকুক।
✍️ সুব্রত দেব নাথ
কপি পোষ্ট