02/21/2025
গফরগাঁওয়ে হেফাজতে ইসলামের কমিটি নিয়ে হচ্ছেটা কী? নতুন কমিটি প্রত্যাখান কেন?
গফরগাঁও উপজেলায় আন্দোলন সংগ্রাম করার সুযোগ তেমন বেশি হয়ে উঠে না, যতটুকু হয় তাও মিঠা আন্দোলন, যেটার জন্য মামলা-মুকাদ্দমা হয় না। গফরগাঁও উলামা সমিতির বাহিরে কোন সংগঠনই মাথা তুলে দাড়াতে পারে নি। এটা গফরগাঁও উলামা সমিতির দোষ নয়, দোষ দিবো সেই সংগঠনের নেতৃত্বের, যারা নিজের সংগঠনের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরতে পারেন নি।
বড় গাছের নিচে যেমন ছোট গাছ বেড়ে উঠে না, তেমনি বড় সংগঠনের নিচে ছোট সংগঠন বিলিন হয়ে যায়। আঞ্চলিক সংগঠন গফরগাঁও উলামা সমিতি তেমনি একটি সংগঠন। যার জন্য বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কাজও উলামা সমিতির ছায়ায় হয়েছে৷ ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর কাজের একই হাল। ইউনিয়নের কমিটিও ঠিক ভাবে হয় নি। উলামা সমিতির নেতারা বলেন,নতুন নতুন কমিটি করে লাভ কী ঘুরেফিরে একই ব্যক্তি কয়েকটি দ্বায়িত্ব পায়, তাই আমরা এক ব্যানারে কাজ করি।
গতকাল ফেসবুকে দেখলাম কয়েকজন আলেম তীব্র ক্ষোভ জানাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, গফরগাঁও উপজেলার হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মনিরুল ইসলামের মাদরাসায় সফরে আসেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, পর্যায়ক্রমে কমিটি ঘোষণা করে তিনি। এতে সভাপতি হিসেবে মাওলানা মনিরুল ইসলাম ও মাওলানা বশির আহমেদ (চরআলগী) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা হয় বলে জানা যায়। এরপরেই ফেসবুক সরব হয়ে উঠে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও বয়কটের ডাকে।
গাজীপুরে বসবাস মুফতি নাদিম হাসানের ফেসবুকের পোস্ট করার সুত্রধরে বিস্তারিত জানতে কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি মাওলানা মনিরুল ইসলাম উলামা সমিতির নেতা মাওলানা মাহাদী হাসান, জমিয়ত নেতা মাও, মঈনুদ্দিন আল হাবিব ও মাও, উবাইদুল্লাহর সাথে বাজে আচরণ করেন। এর প্রতিবাদ ফেসবুকে জানিয়েছি ।
এবিষয়ে বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী গফরগাঁও উলামা সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার আসাদীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আঠারদানা মাদরাসায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ইসলামাবাদী আসার পরে মাওলানা মাহাদী হাসানসহ কয়েকজন প্রশ্ন তুলেন, হেফাজতের উপজেলার কমিটি হবে জেলার নেতারা কোথায়? ইত্তেফাকের নেতারা কোথায়? এতেই চটে যান মাওলানা মনিরুল ইসলাম। এবং একদম চুপ হয়ে যাওয়ার হুমকী দেন। কমিটি ঘোষণার পরে মাও, মাহাদী, মাও, মঈনুদ্দিন আল হাবিব ও মাও,উবাইদুল্লাহ বাহিরে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলে যে যেটা হয়েছে সেটা পকেট কমিটি, কারণ এতে উল্লেখযোগ্য কোন ব্যক্তি দ্বায়িত্বে আসে নি। এটা দেখার তাদের দিকে তেড়ে আসেন মাওলানা মনিরুল ইসলাম। পরে উপস্থিত আলেমদের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে মাওলানা মনিরুল ইসলাম বলেন, "তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অনুষ্ঠানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছেন। আমি তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম সম্মান জানানোর জন্য, অপমানের জন্য নয়। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকলে বাধ্য হয়ে তাদের চুপ থাকতে বলেছি। যখন দেখলাম পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়, তখন বলেছি—আপনারা অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যান, নয়তো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।
এবিষয়ে ইসলামী আন্দোলন গফরগাঁও শাখার সভাপতি মাওলানা জয়নুল আবেদীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সাংগঠনিক ভাবে এবিষয়ে অবগত নই।
এবিষয়ে মাওলানা মাহাদী হাসান জানান, আমরা কয়েকজন অনুষ্ঠানে জেলার নেতা/ইত্তেফাকের নেতারা উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি আমাদের উপর ক্ষেপে যান। পরে গফরগাঁওয়ের হেফাজতে ইসলামের কমিটি ঘোষণা করে যা সিন্ডিকেট কমিটি হয়েছে বলে আমরা মনে করি।