05/21/2025
বরমচাল ফুটবলের এক জীবন্ত কিংবদন্তি: বাচ্চু
উপস্থাপক: Rifat Islam
বরমচাল ফুটবল ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম—বাচ্চু।
তিনি শুধু একজন ফুটবলার ছিলেন না, ছিলেন বরমচাল ফুটবল দলের রক্ষাকবচ। ডিফেন্স পজিশনে খেললেও তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে ছিল পুরো মাঠজুড়ে। তাঁর উপস্থিতি মানেই প্রতিপক্ষের জন্য সতর্ক সংকেত। স্ট্রাইকারদের দুর্ধর্ষ আক্রমণও বাচ্চুর সামনে এসে থমকে যেত, যেন এক দুর্ভেদ্য দেওয়ালের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে তারা।
বাচ্চুর ফুটবল জীবনের সেরা সময় কেটেছে বরমচালের কিছু নামকরা ক্লাবে।
খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি বরমচাল, অনিষংঘ বরমচাল, এপলোস্টার বরমচাল, এবং বনরুপা ক্লাব (রাবার ভাগান, ভাটেরা)—এই সব ক্লাবগুলোতে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে দলগুলো হয়ে ওঠে অনেকবারের চ্যাম্পিয়ন। কঠোর পরিশ্রম, অদম্য সাহস, আর নিখুঁত খেলার কৌশল দিয়ে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন বরমচাল ফুটবল জগতের কেন্দ্রবিন্দুতে।
তিনি ছিলেন এমন একজন খেলোয়াড় যিনি ডান এবং বাম—উভয় পা-ই সমান দক্ষতায় ব্যবহার করতে পারতেন, যা তাঁকে আলাদা মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিল। তাঁর প্রতিভা আর নিয়ন্ত্রণ ছিল অসাধারণ, খেলার প্রতি তাঁর নিবেদন ছিল নিঃস্বার্থ ও অকৃত্রিম। বরমচাল ফুটবলের মাঠে তাঁর খেলাই হয়ে উঠেছিল দর্শকদের কাছে এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা।
তাঁর প্রতিভা শুধুমাত্র বরমচালেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সময়ের পরিক্রমায় তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সিলেট বিভাগের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে। উপজেলা পেরিয়ে তিনি স্থান করে নিয়েছিলেন বৃহৎ মঞ্চে, যা ছিল তাঁর পরিশ্রমের নীরব সাক্ষ্য।
কিন্তু জীবনের বাস্তবতা যখন নতুন পথ দেখায়, তখন পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে বাচ্চু পাড়ি জমান দূর প্রবাসে। সেই থেকে মাঠে আর দেখা যায়নি তাঁকে। থেমে যায় তাঁর ফুটবল জীবন, নিভে যায় এক উজ্জ্বল সম্ভাবনার আলো। তবে তিনি হারিয়ে যাননি বরমচালবাসীর হৃদয় থেকে। বরং সময়ের সাথে সাথে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা আরও গভীর হয়েছে।
আজও বরমচালের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষদের মুখে মুখে ঘোরে তাঁর নাম। খেলাধুলা নিয়ে কথা উঠলেই বাচ্চুর কথা না উঠে পারে না। তিনি আজও স্মরণীয়, গর্বের এক নাম। তাঁর অবদান বরমচালের ফুটবল ইতিহাসে লেখা থাকবে চিরকাল।