Nishuu গল্পের রাজ্যে স্বাগতম 👙

আরও সুন্দর গল্প পেতে ফলো দিয়ে বেশি বেশি লাইক, কমেন্ট করুন, ধন্যবাদ

#গল্পের_রাজ্য #উন্মাদ/Unmad
(34)

07/12/2025

With প্রিয় বাউন্ডুলে – I just got recognized as one of their top fans!

-" তোর সাথে বিয়ে দিয়েছি বলে তুই এভাবে মেয়েটাকে মারবি রুদ্র?আয়শা বেগমের কথায় রাগ ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে। নেহাতই ছেলে বড় হয়েছে নাহলে...
06/11/2025

-" তোর সাথে বিয়ে দিয়েছি বলে তুই এভাবে মেয়েটাকে মারবি রুদ্র?

আয়শা বেগমের কথায় রাগ ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে। নেহাতই ছেলে বড় হয়েছে নাহলে এমন অমানুষের মতো অত্যাচার করার জন্য আয়শা অবশ্যই ছোলের গায়ে হাত তুলতেন। কালকোই রুদ্র দেশে ফিরেছে দীর্ঘ ৯ বছর পর। আর এসেই নিজের বিবাহিত বউয়ের গায়ে হাত তুলেছে।

কারণটা কেউই জানে নাহ। সকাল বেলা আয়শা রুদ্রর ঘরে গিয়ে দেখে মেঝেতে নাতাশা পড়ে আছে অচেতন অবস্থায়। কপাল কেটে রক্ত বেড়িয়ে তা আমার শুকিয়েও গেছে। আয়শা বেগম ততক্ষণাৎ ডক্টর ডেকে নাতাশার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।

জ্ঞান ফিরলেও কিছু বলার অবস্থায় নেই নাতাশা। পুরো শরীল ব্যথায় জর্জরিত। ঠোঁট নাড়াতেও কষ্ট খুব। নাতাশার পাশেই ওর মাথায় হাত রেখে ছেলের উপর রাগ ঝাড়ছেন আয়শা বেগম। তবে রুদ্রর কোনো হেলদোল নেই। ঘরে পাতানো দুই সিটের সোফায় আয়েশি ভঙ্গিতে বসে আছে রুদ্র।

রুদ্রর বাবা মানিক আহমেদ ছেলের এমন বেপরোয়া স্বভাব দেখে নিজেও প্রচন্ড রেগে যান। রুদ্রর সামনে এসে দাড়িয়ে বলে,

-" সমস্যা কি তোমার? বিদেশে গিয়ে কি ভদ্রতা সভয়তা সব ভুলে গেছো নাকি?

-" একটুও না।

-" তাহলে তুমি নাতাশার গায়ে হাত তুলেছো কোন সাহসে?

-" প্রশ্নটা ঘুরিয়ে আমিও করতে পারি বাবা। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তোমরা ওকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছিলে কোন সাহসে? জবাব আছে তোমাদের কাছে?

-" নাতাশা তোমাকে ভালোবাসে। ছোট থেকে একসঙ্গেই বড় হয়েছো তোমরা। তুমি নিজেও নাতাশে অনেক পছন্দ করতে তাহলে বিয়ে দেওয়ায় এতো আহামরি কিছু হয়ে যাইনি রুদ্র। এছাড়াও তোমার খালা- খালুর মৃত্যুর আগে তাদের শেষ ইচ্ছে ছিলো তোমার সঙ্গে নাতাশার বিয়ে দেওয়া।

-" পছন্দ করতাম বোন হিসেবে, আমার খালার মেয়ে হিসেবে। বউ হিসেবে না বাবা। তুমি বউ আর বোনের মধ্যে তো গুলিয়ে ফেললে হবে নাহ। আর খালা খালুর শেষ ইচ্ছে পুরন করার চক্করে আমি তো আমার জীবন, কেরিয়ার ধ্বংস করতে পারি না তাই না।

আয়শা বেগম এবার প্রচন্ড রেগে গিয়ে বললেন, " রুদ্র মুখ সামলে কথা বলো। নাতাশার জন্য তোমার কি কেরিয়ার শেষ হয়েছে? ও তোমাকে কবে কোনোকিছুর জন্য চাপ দিয়েছে বলতে পারবে? তুমি কারো কোনো কথা না শুনে ওকে রেখেই চলে গিয়েছিলে। আর আজ আসলে ৯ বছর পর। নাতাশার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এসব মেনে নিতো? আবার বলছো ও তোমার জীবন শেষ করেছে।

রদ্র বিরক্তিকর ভাব নিয়ে বললো, " ওই মেয়ে নিজেই তো এক আস্ত বড় চাপ। আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছো এর থেকে বড় চাপ আর কি আছে?

আয়শা পেরে উঠছেন না ছেলের সঙ্গে। নাতাশা কিছু বলতে না পারলেও শুনেছে সবকিছুই। বন্ধ চোখের কণা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আয়শা একনজর করুন দৃষ্টিতে তাকায় নাতাশার দিকে। মেয়েটা বড্ড ভালোবাসে রুদ্রকে৷ কিন্তু রুদ্র বোঝারই চেষ্টা করে নাহ।

মানিক আহমেদ রাগ করেই বের হয়ে যান রুম থেকে। রুদ্র সোফা থেকে উঠে দাড়ায়। গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

-" ওকে নিয়ে যাও আমার রুম থেকে। এখানে থাকলে রাগের মাথায় ওকে না মেরেই ফেলি আমি।

আয়শা বেগম একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছেলের দিকে তাকিয়ে। নাতাশা এবার নিজ থেকেই উঠে বসলো, বিদ্ধস্ত চেহারায় অস্ফুট কন্ঠে আয়শাকে উদ্দেশ্য করে বললো,

-" মামনি একটু ধরবে আমাকে? "

আয়শা ধরলো নাতাশার দুবাহু। ব্যথায় কুঁকড়ে গেলো নাতাশা। আয়শা বেগম বুঝতে পেরে আরো আলতো করে ধরলো। নাতাশাকে নিয়ে বেরিয়ে যেতেই রদ্র দরজা লাগিয়ে দিলো।

__

আকাশ জুড়ে কালো মেঘের ঘনঘটা আজ। নাতাশার মনের অবস্থার কিছুটা বহিঃপ্রকাশ হলো বোধহয়। নাতাশা দাঁড়িয়ে আছে ছাঁদের রেলিং ঘেষে। নিস্তব্ধ পরিবেশে থেকে থেকেই বৃহৎ গর্জনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। হয়তো আজ বৃষ্টি নামবে..

এমন সময় রুদ্রও ফোনের কারো সঙ্গে কথা বলতে বলতে আসলো ছাঁদে। নাতাশা আনমনে হয়ে থাকায় খেয়াল করলো না রুদ্রকে। তবে রুদ্র দেখেছে, নাতাশার উপস্থিতিতে মনের ক্ষোভটা আবারো মাথা চারা দিয়ে উঠলো। কল কেটে দিয়ে নাতাশার পাশে এসে দাঁড়ালো।

-" মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে। ঝাপ দে তো নাতাশা, বৃষ্টির পানির সঙ্গে সঙ্গে আজ তুইও ধুয়েমুছে চলে যাক আমার জীবন থেকে।

নাতাশা মলিন হাসলো " রুদ্র আমার উপর এতো ক্ষোভ কেনো তোমার?

-" ক্ষোভ তে নয়।

-" তাহলে কি? একেবারেই মেরে ফেলতে চাও কেনো আমাকে?

-" তু্ই তো আমার জীবনের একটা সমস্যা নাতাশা। মানুষ তার সমস্যা যেকোনো উপায়ে যে কোনো পদ্ধতিতে সমাধান করতে চায়, আমিও চাই। তোর জন্য আমার পুরো জীবনটাই নষ্ট। হয় মরে যা নাহলে আমাকে ছেড়ে দে।

নাতাশা শীতল দৃষ্টিতে তাকালো রুদ্রর দিকে। ছেলেটার চোখে মুখে তার জন্য প্রচন্ড ঘিন্না, রাগ। কিন্তু কেনো?.. নাতাশা স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,

-" আমি তো ভালোবাসি তোমাকে, কিভাবে ছেড়ে দিবো?

-" তাহলে মরে যা। তোরও মুক্তি আমারো মুক্তি!

-" একদিন থাকবো না সত্যি সত্যিই, সেদিন বড় আফসোস করবা তুমি আমার জন্য।

বলেই নাতাশা ধীর পায়ে ছাঁদ থেকে নেমে আসে। কষ্ট হচ্ছে খুব, রুদ্র তাকে কোনোদিন বুঝলো না। সেই ছোট কালেও বোঝেনি আর এখন বুঝেও বুঝতে চাচ্ছে না।

__

রুদ্র সারারাত বাইরে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে পার্টি করে বাড়ি ফিরলো সকাল বেলা। রুদ্রকে দেখেই তন্নি এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো ওকে। রুদ্রর ছোট বোন তন্নি, কলেজের পিকনিকে যাওয়ায় আসার পর দেখা হয়নি রুদ্রর সঙ্গে । রুদ্র একগাল হেসে জিজ্ঞেস করলো..

-" কেমন আছিস তুই?

-" আমি ভালো আছি ভাইয়া তুমি কেমন আছো? কতো বছর পর দেখা হলো।

-" হুম,, ভালোই বড় হয়ে গেছিস দেখি।

-" হু তা তো হবোই, ভাইয়া নাতাশা আপুর সাথে দেখা করেছো?

রুদ্রর মুখ থেকে হাসি নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো। থমথমে কণ্ঠে বললো,

-" ওর সঙ্গে কথা বলার জন্য অবশ্যই দেশে আসিনি আমি। আমার সামনে আর ওর নাম নিবি না..

তন্নির মুখ চুপসে গেলো। রান্নাঘর থেকে সব কথাই শুনতে পেলো আয়শা আর নাতাশা। মেয়েটার মন এমনিতেই খাটাপ তারউপর এসব শুনে মুখটা আরো কালো হয়ে যায় নাতাশার।
রুদ্র আদুরেভাবে তন্নির দুগাল চেপে বললো,

-" তোর জন্য অনেক কিছু আছে চল সেগুলো দেখবি চল।

তন্নি রান্নাঘরের দিকে তাকাতেই নাতাশার কালো মুখ খানা দেখতে পেলো। খারাপ লাগলো ওর,, এ বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ জানে নাতাশা কতোটা ভালোবাসে রুদ্রকে, একমাত্র রুদ্রই সেই ভালোবাসার কদর করে নাহ।

____

মানিক আহমেদের কনট্রাকশন সাইডের বিজনেস আছে। সুবিশাল কোম্পানির মালিক সে, যার একটি প্রধান শাখা ঢাকায় আরেকটি চট্টগ্রামে। রুদ্র কোম্পানির বিষয়ে কোনোকিছুই জানে না তেমন,। মানিক আহমেদ যেহপতু নাতাশাকে খুব ভালোবাসেন তাই প্রধান শাখার সমস্ত দায়িত্ব তিনি নাতাশাকে দিয়েছেন,

রুদ্র যেমন ছেলে আর ওর যে রগচটা ব্যবহার তাতে ওর হাতে কোম্পানির দায়িত্ব তুলে দিলে বেশিদিন লাগবে না মানিক আহমেদের অধপতন হতে।

নাতাশার শরীল খারাপ থাকায় ক'দিন অফিসে যাওয়া হচ্ছে না তার। রুদ্রও এখনো এ বিষয়ে কিছুই জানে না। মানিক আহমেদ তাকে জানানোর প্রয়োজনবোধ করেন নি।
সন্ধ্যা নাগাদ নাতাশার পি.এ মারুফ আসে বাড়িতে।

হলরুমের সোফায় বসেই তার সঙ্গে কথা বলছিলো নাতাশা৷ পাশে মানিক আহমেদও বসে আছেন, সামনের সেন্টার টেবিলের উপর কিছু ফাইলপত্র রেখে সেসব উল্টে পাল্টে দেখছিলো।

মারুফ কথা বলার এক পর্যায়ে জানায়, " ম্যাম আপনাকে দুদিনের জন্য দিনাজপুর যেতে হবে।

-" কেনো? কেনো সমস্যা হয়েছে? "

-" তেমন কিছু না ম্যাম, তবে কনস্ট্রাকশন সাইডে কিছু ত্রুটি দেখা গিয়েছে সেই বিষয়ে হামজা সাহেব আপনার সঙ্গে দেখা একটু কথা বলতে চান। "

নাতাশার উত্তর দেওয়ার আগেই মানিক আহমেদ বললেন, " ওকে ছেড়ে দাও ওর শরীল ভালো না। এখন জার্নি করতে পারবে না, তুমি হামজাকে বলে দিও নাতাশার বদলে আমি যাবো কথা বলতে। "

মানিক আহমেদের কথা নাতাশা মানা করলো, -" সমস্যা হবে না ছোট আব্বু আমি যেতে পারবো। আর ওই সাইড যেহেতু আমি-ই হ্যান্ডেল করছি তাই আমারই যাওয়া উচিত । মারুফ কবে যেতে হবে?

-" ম্যাম আপনি তাহলে পরশুদিনই রওনা দিন। বিষয়টা দ্রুত সমাধান করা দরকার নাহলে কাজ এগোচ্ছে না।

-" আচ্ছা সবকিছু ঠিক ঠাক রেখো আমরা পরশু সকালেই রওনা হবো।

মারুফ মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি দিলো। কিছুক্ষণ বসে নাস্তা করলো অতঃপর মারুফ চলে যায়। সিঁড়ির উপর দাড়িয়ে এতোক্ষণ সব কথাই শুনছিলো রুদ্র। প্রধান শাখার CEO কিনা নাতাশা? বিষয়টা মেনেই নিতে পারছে না রুদ্র।

নাতাশা ফাইলগুলো নিয়ে উঠে দাড়িয়ে পেছনে ফিরতেই রুদ্রকে দেখলো।

-" তুমি এখানে?

রুদ্র নেমে এসে দাড়ালো নাতাশার সামনে। চোয়াল শক্ত করে বললো, " ভালোই হাত করেছিস বাবাকে। একদম কোম্পানির CEO হয়ে গেলি বাহহ ; বাহহহ। তোকে কি বলে বাহবা দেওয়া যায় বল তো। "

মানিক আহমেদ তেতে উঠলেন সোফায় বসা অবস্থাতেই,

-" মুখ সামলে কথা বলো রুদ্র। এবার কিন্তু আমি ভুলে যাবো তুমি আমার ছেলে।

রুদ্র সহসা উত্তর দিলো, " আপনি আদেও মনে রেখেছেন যে আমি আপনার ছেলে?

চলবে কি..?

#অবেলায়_তোমার_দেখা
#লেখায়_তাসফিয়া_তাসনিম
#সূচনা_পর্ব

নিজের ছেলের জন্য মাছের বড়ো মাথাটা লুকিয়ে রেখেছি!যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে,আমার ভাই-বৌ যদি জানতে পারে আজ আর রক্ষা থাকব...
06/10/2025

নিজের ছেলের জন্য মাছের বড়ো মাথাটা লুকিয়ে রেখেছি!যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে,আমার ভাই-বৌ যদি জানতে পারে আজ আর রক্ষা থাকবে না।একটু পরে বড়ো ভাবী চেঁচিয়ে আমায় বলতে লাগলো

---মাহি, ঐ মাহি!
বড়ো মাছের মাথাটা কোথায় গেলো?

---আর বলো না ভাবী।পাশের বাড়ির কালো বিড়ালটা আসছিলো,ঐ হারাম*জাদী কিছু একটা করেছে।

---তোমাকে কতো করে বলেছি খাবারগুলো একটা সাবধানে রাখবা,এইটুকু কাজ করতে পারো না তুমি!করো টা কি?

--ভুল হইছে ভাবী,আসলে দোষটা আমারই।আমার বিড়ালটাকে দেখেই বোঝা উচিত ছিলো।

---সব ভুল তো তুমি আর তোমার ছেলেই করেই।তোমাদের জন্য জ্বা*লার শেষ নেই আমার।

ভাবীর কথা আমার বিশেষ গায়ে লাগলো না,ছেলেটার মুখে হাসি ফোটাতে পারবো আমার কাছে এটাই বড়ো আনন্দের।আমার ভাইপো ভাইজিগুলো রোজ বড়ো মাছের মাথা দিয়ে ভাত খায়,ছেলেটা শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখে।আজ চুরি করে হলেও ছেলেটার মনের আশা কিছুটা হলেও পুরণ করতে পারবো।

যখন সবাই খেয়ে নিজের নিজের ঘরে চলে গেলো,আমি মাছের বাটিটা নিয়ে নিজের ঘরে আসলাম।স্বামীর সংসার থেকে চলে এসেছি আজ থেকে তিন বছর আগে।আমার দুই ভাই তাদের ছেলে মেয়ে সাথে বৃদ্ধ বাবা মায়ের বিশাল সংসার।আমাদের বড়ো ঘরে থাকার যতো জায়গা না থাকাতে আব্বা আমায় আর আমার ছেলের জন্য রান্নাঘরের পাশে একটা ছোটো ঘর তুলে দিয়েছে।

বাটিটা নিয়ে আযানের সামনে রাখলাম,ওর চোখ দু'টো আনন্দে চকচক করে উঠলো,মুখে প্রসন্নতার হাসি।

---মা, আমার জন্য বড়ো মাছ আনছো!

---চুপ কর বাবা!
কেউ শুনতে পারলে মাছ খাওয়ার সাধ মিটে যাবে।

---আচ্ছা মা,
ওরা সবাই তোমার আর আমার সাথে এরকম করে কেনো?

---কেমন করে,

---সবসময় তোমায় বকে,আমায় বড়ো মাছ,আস্ত ডিম,মাংসের কলিজা এগুলো খেতে দেয় না?আমরা কি এই বাড়ির কেউ না?

---আমাদের জন্য এসব খেতে চাওয়া পাপ বাবা,আর তুই কখনো এসব পাকা পাকা কথা বলিস না।তোর জন্য সবসময় আমায় কথা শুনতে হয়।

আযান বয়সের তুলনায় একটু বেশিই পাঁকা।কথা শুনে বোঝার উপায় নেই ছেলেটার বয়স আর দুমাস পরে ছয়ের ঘরে পা রাখবে।আযান আর কথা না বলে মজা করে মাছ দিয়ে ভাত খেতে লাগলো।আমি জিজ্ঞেস করি

---কেমন লাগছে বাবা?

---খুব মজা মা,

---খা বাবা!

---তুমিও খাও না,
তুমিও তো কখনো বড়ো মাছ খেতে পাও না।

---আমি অনেক খেয়েছি জীবনে,এখন তোর খাওয়ার সময়।ভালো করে খা!

ছেলেটা কতোগুলো দিন পরে তৃপ্তিসহকারে খাবার খেলো আমার ঠিক মনে পড়ছে না।ওকে ঘরে শুইয়ে দিয়ে বাইরে এলাম আমি।হঠাৎ দুই ভাবীর গলার আওয়াজ ভেসে আসে আমার কানে।

---জানিস ছোটো বৌ,
আজ পাশের বাড়ির কালো বেড়ালটা বড়ো মাছের মাথাটা নিয়ে গেছে,ভাবলাম বাচ্চাদের বাপকে খেতে দেবো।আর হলো না,এখন কেমন লাগে বল...

বড়ো ভাবীর কথা শুনে ছোটো ভাবী ফিক করে হেসে দিলো!

---আপা নিশ্চিত থাকো,ঐ বিড়াল আর আসবে না এই বাড়িতে,

---কেনো রে?

---গিয়ে দেখো মরে পড়ে আছে কোনো জায়গায়,

---বুঝতে পারছি না আমি তোর কথা, কি করেছিস তুই বলবি!

----আপা তুমি কি একা।আমিও তো ঐ বিড়ালের জ্বা*লায় শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।তাই চিন্তা করলাম কিকরে ওর জ্বা*লা থেকে বাঁচা যায়।তাই বুদ্ধি করে বড়ো মাছের মাথাটাতে বিষ মিশিয়ে রেখে দিয়েছিলাম।আর আমি এটাও জানতাম ও এসে ঠিক ঐ বড়ো মাথাটাই নিয়ে যাবে।আর দেখো সেটাই হলো।আমি অবশ্য তোমাকে সাবধান করতেই যাচ্ছিলাম,তার আগেই আমার কাজ করে দিয়েছে ঐ বিড়াল।তাই কিছু বলি নি।

ছোটো ভাবীর কথা শুনে আমার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।

---ও আল্লাহ, কি বললো ওরা এটা!
আযান...আমার আযান ঠিক আছে তো?

চলবে....
পর্ব --- ০১
গল্পের নাম : কুঁড়েঘর
তিয়াশ।

আম্মা মা*রা যাবার তিনদিনের মাথায় আব্বা মিনু খালাকে বিয়ে করে আনলেন৷ যে খালার মেয়ে ঝুমা আপার সাথে আমার বড় ভাইয়ের বিয়ের কথা...
06/09/2025

আম্মা মা*রা যাবার তিনদিনের মাথায় আব্বা মিনু খালাকে বিয়ে করে আনলেন৷ যে খালার মেয়ে ঝুমা আপার সাথে আমার বড় ভাইয়ের বিয়ের কথা আম্মা নিজে ঠিক করে রেখে গিয়েছেন৷ আমি তখনো আম্মার শোকে বিছানায় কাতরাচ্ছি ৷ আব্বার বিয়ের কথাটা বুয়ার মুখে শুনেই ছুটে উঠানে এসেই দেখি আব্বার পাশে মিনু খালা সুতির একটা লাল শাড়ি পরে ঘোমটা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তার পাশেই ঝুমা আপা শুকনো মুখে দাঁড়িয়ে আছে৷ আব্বা আমাকে দেখেই চওড়া গলায় বললেন,

'আম্মাজান তোমার নতুন আম্মুকে সালাম দাও৷'

আমি আব্বার দিকে টলমলে চোখে তাকালাম৷ কান্না আঁটকে বললাম,

'আম্মা গত পরশু মা*রা গেছে আব্বা৷ আগর বাতির সুবাস এখনো ঘর থেকে যায় নাই৷'

'জন্ম, মৃ*ত্যু, বিয়ে আল্লাহর হাতে আম্মা৷ আমি তো তার হুকুমের গোলাম মাত্র৷'

আব্বা আমার কাছে এসে মাথায় হাত রেখে বললেন৷ আমি আব্বাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম৷ দাদি এসেই আব্বাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

'নতুন বউ বাইরে খাঁড়ায় আছে৷ মাইয়া ছাড়৷ দেখতে দেখতে একাই ঠিক হইয়া যাইবো৷'

'মিনু ঘরে আসো৷ এইটা তো তোমার'ই সংসার৷'

আব্বা আমাকে ছেড়ে দিয়ে মিনু খালাকে উদ্দেশ্য করে বললেন৷ মিনু খালার চোখ চকচক করেছে৷ উনি আমার মায়ের চাচাতো বোন৷ গত চার বছর আগে খালু রোড এক্সিডেন্টে গত হয়েছে৷ আমি খালার দিকে ঘৃণ্য দৃষ্টিতে তাকাতেই উনি আহ্লাদী সুরে বললেন,

'মিথি আসো আম্মা আমার বুকে আসো৷'

আমি দৃষ্টি ঘুরিয়ে ঝুমা আপার দিকে তাকালাম৷ সে মুখ কাঁচুমাচু করে দাড়িয়ে আছে৷ খালার কাছে আমি এগিয়ে গিয়ে উনার হাতদুটো ধরে বললাম,

'অন্য মানুষ যদি কাজটা করতো আমার এতো দুঃখ লাগতো না৷ আপনি আমার মায়ের বোন হয়ে কাজটা করতে পারলেন!'

'কি কথা কও তুমি! বিয়ে করলাম তোমাদের জন্য৷ তুমি আমায় দোষী বানাও৷'

'ওরা তো তোমার পা ধরে বিয়ে করতে বলে নাই মা৷ তুমি নিজ ইচ্ছাতে বিয়ে করে এসেছো৷'

ঝুমা আপা শান্তস্বরে কথা গুলা বললো৷ মিনু খালা মেয়ের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকাতেই আপা অগ্রাহ্য করে বললো,

'তোর রুমে চল মিথি৷'

আমি ঝুমা আপার কথা শুনে এলোমেলো পায়ে ঘরে এলাম৷ পিছুপিছু আপাও এলো৷ ঘরে আসতেই আমাকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো,

'মিথিরে আমার আর আশরাফ ভাইয়ের বউ হওয়া হলো না৷'

আপার কন্ঠে কি যেন একটা ছিলো৷ আম্মার শোক যতোটা না পীড়া দিচ্ছে তার থেকে বেশি বড় ভাইয়ের কথা ভেবে কষ্ট হচ্ছে৷ আমার আঠারো বছর বয়সে জ্ঞান হবার পর থেকে দেখেছি ভাইয়া ঝুমা আপাকে উন্মাদের মতো ভালোবাসেন৷ যদি-ও ব্যাপার টা আমি,আম্মা,আব্বার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো৷ ঝুমা আপাও ভাইয়াকে কিঞ্চিৎ পছন্দ করতেন৷ আব্বা জেনেও কি ভাবে পারলেন এমন একটা কাজ করতে! ভাইয়া যে কষ্টে শেষ হয়ে যাবে৷


বিকেলের রোদ পরতেই ভাই বাসায় আসলেন৷ উঠানে থেকেই আমাকে হাঁক ছেড়ে ডাকছেন৷ আমি বিছানা থেকে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলাম৷ দেখলাম ঝুমা আপা আমার ঘরে রাখা কাঠের চেয়ারে ঘাপটি মেরে বসে আছে৷ চোখের কোণে জমে থাকা পানি ওড়না দিয়ে মুছে আমি ঘর ছেড়ে উঠানে নেমে দাঁড়ালাম৷ আমাকে দেখেই ভাইয়া তপ্ত খড়ার এক বিন্দু বৃষ্টির মতো হাসলো৷ তার হাতে আমার প্রিয় রসমালাই৷ আমাকে কাছে ডেকে বললো,

'এইগুলা ধর মিথি৷ আম্মা নাই বলে কি আমাকে পানি এনেও দিবি না?'

ভাইয়ার কন্ঠে অভিমান৷ ভাইয়া বাসায় ঢোকার আগেই আম্মা এক জগ ভর্তি পানি নিয়ে আসতেন৷ ভাইয়া হাত মুখ ধুঁয়ে এরপরই ঘরে পা রাখতো৷ আমি কল পাড় থেকে পানি নিয়ে এলাম৷ ভাইয়া আমার হাতে রসমালাইয়ের পলিব্যাগ টা আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বললো,

'দুপুরে খেয়েছিস?'

আমি ঠোঁ*ট চেপে মাথা দুলিয়ে 'না' বুঝাতেই ভাইয়া বুয়াকে ডাকলো৷ কুলসুম এসেই ভাইয়াকে দেখে আঁচলে মুখ ডাকলো৷ গুন গুন সুর তুলে কান্না করে উঠলো৷ ভাইয়া চোখমুখ কুঁচকে বললেন,

'তোর আবার কি হলো!'

'ভাইজান গো কত বড় একটা দুর্ঘটনা যে ঘটছে৷ আপনারে আমি কেমনে কই৷ হায় হায় রে৷'

কুলসুম হাইহুঁই করে বলছে৷ ভাইয়া আমার দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকাতেই আমি কুলসুমের দিকে রাগান্বিত চোখে তাকালাম৷ ও প্রায় আমার সম বয়সী কিন্তু মাথায় স্ক্রু কিছুটা ঢিলে৷ আমার তাকানো দেখে মুখ ঢেকেই গুন গুন করতে করতে রান্নাঘরে ঢুকলো৷ ভাইয়া সরু চোখে তাকিয়ে বললো,

'বাড়িতে কিছু হয়েছে?'

'মিনু খালা আর ঝুমা আপা এসেছে৷'

'এইটা তো ভালো কথা৷ কিন্তু দুর্ঘটনাটা?'

আমি কী উত্তর দিবো খুজে পেলাম না৷ চুপচাপ থাকাটাই শ্রেয় মনে হচ্ছে৷ কারণ ভাইয়া ঝুমা আপাকে নিয় ঘর বাঁধার স্বপ্ন সাজিয়েছিলো৷ আমি কিভাবে বলবো ভাইয়া আম্মার সাথে সাথে তোমার স্বপ্ন আব্বা মাটিচাপা দিয়ে ফেলেছেন৷
আমাকে দাঁড়িয়ে নখ খুঁটতে দেখে ভাইয়া ঘাটলেন না৷ আমার হাত ধরে রান্না ঘরে এগিয়ে গেলেন৷ যেতে যেতে বললো,

'জানিস মিথি এবারের চাকরিটা মনে হয় হয়ে যাবে৷ আম্মা থাকলে কতো খুশি হতো৷ আমার বুকের একটা অংশ খসে পরে গেছে রে৷'

শেষের কথাটুকু ভাইয়া ধরা গলায় বললো৷ আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,

'আল্লাহ আম্মাকে এতো দ্রুত না নিলেও পারতো ভাইয়া৷'

ভাইয়া নির্লিপ্ত হেসে বললো,'সব'ই আল্লাহর হুকুম৷'

রান্নাঘরে পাঁ রাখতেই মিনু খালা কোথা থেকে যেন ছুটে এলেন৷ ভাইয়াকে দেখেই আহ্লাদ করে বললেন,

'আসছো আশরাফ বাবা৷ আসো খাইতে দেই৷'

'আপনারা আসছেন শুনে আমার অনেকটা হালকা লাগছে খালাম্মা৷ মিথিটা একদম ঘরে থাকে৷ আব্বাকে কাল দেখলাম খেতে বসে কাঁদছেন৷'

ভাইয়ার কথা শুনে আমি তার মুখের দিকে তাকালাম৷ আমার বড্ড ভয় হচ্ছে৷ ওইদিকে মিনু খালা খাবার বেড়ে দেওয়ার জন্য কুলসুম কে তাড়া দিচ্ছেন৷ ভাইয়া উনাকে উদ্দেশ্য করে আবারো বললেন,

'খালাম্মা কয়দিন বেশি থেকে যাবেন৷'

'ভাইয়া এতো কথা বলো কেন৷ আমার ভালো লাগছে না৷'

আমি ভাইয়ার কথার মাঝে বাঁধা দিয়ে বললাম৷ ভাইয়া আমাকে টেনে চেয়ারে বসিয়ে বললেন,

'আচ্ছা আর বলবোনা৷ আব্বা কোথায়!'

'জানি না৷' আমি অসন্তোষ গলায় বলতেই মিনু খালা লাজুক ভঙ্গিতে বললেন,

'তোমার আব্বা মসজিদে গেছেন৷ বড় আপার মিলাদের জন্য এতিমখানায় দাওয়াত দিতে৷'

আমি মহিলার কথা শুনে অবাক হচ্ছি৷ এইতো গত পরশুদিনও মহিলা আব্বাকে আমজাদ ভাই বলে ডেকেছেন৷ আমার আম্মার জন্য গড়াগড়ি করে কান্না করছেন৷ আর আজ তার কথার ভঙ্গি সব পাল্টে গেলো৷


সন্ধ্যের আবছা আলোয় চারদিক আলো আঁধারের খেলা খেলছে৷ আমি নামাজ পড়ে রোয়াকে বসে তসবি পড়ছি৷ ভাইয়ার অপেক্ষায় বুকের ভেতর হাতুড়ি পিটা শব্দ হচ্ছে৷ মাগরিবের নামাজ পড়তে ভাইয়া মসজিদে গেছে৷ আব্বার বিয়ের খবর টা ঘরের কেউ না দিলে বাইরের সবাই অবশ্যই কানাঘুষা করছে৷ আমার আব্বা মাতবর গোছের লোক বলেই কেউ বাড়ি বয়ে এসে কথা শোনাচ্ছে না৷ তবে বাইরে কম সমালোচনাও হচ্ছে না৷ আমাকে উদাস হয়ে বসে থাকতে দেখে ঝুমা আপা এসে পাশে বসলো৷ ঝুমা আপা কাঁদছে৷ আমি তসবিহ টা পড়া বন্ধ করে ঝুমা আপাকে বললাম,

'ভাইয়ার জন্য কষ্ট হচ্ছে আপা৷'

'আমার জীবন অর্থহীন মনে হচ্ছে মিথি৷ মা বিয়েটা করে এসে আমাকে বলেছে৷ আমি একবিন্দু বুঝতে পারলে কিছু একটা করতাম৷'

'আর কিছুই করার নেই আপা৷ সব শেষ৷'

আমি উদাস ভঙ্গিতে বললাম৷ আব্বা যে বিয়ে করবে আমরা কেউ বুঝি নাই ৷ আমাদের কথার মাঝেই দেখলাম একটা অবয়ব হেঁটে আসছে৷ আলোর কাছাকাছি আসতে বুঝলাম ভাইয়া এসেছে৷ এসেই আমাদের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

'আব্বা কোথায়?'

আমি ভয়ে, দুঃখে চুপসে গেলাম৷ ঝুমা আপা উঠে ঘরের ভেতর চলে গেলো৷ ভাইয়ার চোখে বেদনা স্পষ্ট৷ আমি আমতা আমতা করে বললাম,

'দুপুরের পর আর বাড়ি ফিরে আসে নাই৷'

' আব্বা বিয়ে করেছেন?'

আমি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আঁটকে গেলাম৷ ভাইয়া আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই পা টেনে টেনে আমার দিকে এগিয়ে এলো৷ আমি উঠে ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরতেই ভাইয়া বসে পরলো৷ আমরা দু'ভাইবোন সেখানে কতোক্ষণ নিশ্চুপ বসে ছিলাম বলতে পারবো না৷ আমি ভাইয়াকে ধরে নিশ্চুপ কাঁদছি৷ তবে ভাইয়া একরাশ দুঃখের মাঝেও বসে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে৷ আমাদের বসে থাকার অবসান ঘটলো পাশের বাড়ির রফিক চাচার আগমনে৷ উনি আসতেই ভাইয়া নড়েচড়ে বসলো৷ রফিক চাচা গলার স্বর নামিয়ে বললেন,

'তোমরা খবর পাইছো?'

' কিসের খবর চাচা!' ভাইয়া মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে প্রশ্ন করলো৷ রফিক চাচা ভাইয়ার একদম কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে বললো,

'তোমার আব্বারে কে জানি মাইরা নদীর পাড়ে ফেলে রাখছে৷'

খবর টা এতোটাই বিষাক্ত ছিলো আব্বার প্রতি জমে থাকা অভিমান হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো গলে গেলো যেন৷

বিকেলের_যতো_রঙ
পর্ব সংখ্যা-০১
রুবাইদা_হৃদি

অনেক গরম তাই ছাদে আসলাম বাতাস খেতে। 🥰🖇️
06/08/2025

অনেক গরম তাই ছাদে আসলাম বাতাস খেতে। 🥰🖇️

বিয়ের তিনদিনের মাথায় পূর্ণতার স্বামী বিদেশে পারি জমায়। আজ ঠিক দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পূর্ণতার স্বামী বিদেশে থেকে বাড়ি আসছ...
06/08/2025

বিয়ের তিনদিনের মাথায় পূর্ণতার স্বামী বিদেশে পারি জমায়। আজ ঠিক দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পূর্ণতার স্বামী বিদেশে থেকে বাড়ি আসছে।

ঘরের ছেলে এতো বছর পর ঘরে আসছে। এজন্য বাড়িতে আনন্দের জোয়ার নেমে এসেছে। সবাই আনন্দে ছোটাছুটি করলেও এখানে পূর্ণতার মাঝে কোন আনন্দ বিরাজ করছে না।

পূর্ণতা খুব ভালো করেই জানে ওর স্বামী ওকে পছন্দ করে না। এমনকি ওকে ব‌উয়ের অধিকার অবধি দেয়নি। বিদেশে গেছে পাঁচ বছর হয়েছে তাদের বিয়ের ও পাঁচ বছর হলো। এতোটা সময় গিয়েছে কিন্তু ওর স্বামীর ওর সাথে যোগাযোগ খুব সীমিত হয়েছে।

প্রথম প্রথম স্বামীর জন্য কাঁদতো‌। কেন তাকে এইভাবে ফেলে গেল বিয়েতে রাজি না থাকলে বিয়েটা করে তার জীবন ন'ষ্ট করার কি দরকার ছিল? শুধু শুধু বিয়ের তকমা লাগিয়ে ওকে সবার কাছে অপয়া করে দিয়েছিল। স্বামী ধরে রাখতে পারেনি। এসব বলে মানুষের কম কটু কথা তো ওকে হজম করতে হয়নি। পূর্ণতা রান্না ঘরে ঢুকে দেখল ওর শাশুড়ি খুব যত্ন সহকারে খাবার রান্না করছে।

ওকে দেখে এক গাল হেসে বললেন," যাও সুন্দর করে রেডি হয়ে থাকো। সুন্দর করে সাজগোজ করিও। কত দিন পর ছেলেটা আসছে। আজ আর রান্না ঘরে এসে নিজের সুন্দর মুখটা কালসেটে করে ফেলো না।"
পূর্ণতা কিছু বলতে চাইল। কিন্তু তিনি হাত দিয়ে থামিয়ে তৈরি হতে বলল।

পূর্ণতা তাকে মায়ের মতো সম্মান করে তার জন্যেই স্বামীর অবহেলা পেয়েও শশুর বাড়ি ছেড়ে যেতে পারেনি।পূর্ণতা তার কথা অমান্য করতে পারবে না। ও শুধু ভাবে এতো ভালো একজন মায়ের এমন ছেলে কিভাবে হলো! পূর্ণতা রুমে এসে বসে র‌ইলো কিসের সাজগোজ কিসের কি কিচ্ছু করবে না। করলেও কি তিনি দেখবে? কখনোই না। পাঁচবছর আগেই যে তার বাসর ঘরে থাকা ব‌উয়ের দিকে ফিরে তাকায় নি। আজ এতো বছর পর এসে সে ওর দিকে তাকাবে অসম্ভব।

পূর্ণতা সাজতে না চাইলে কি হবে ওর ননাসের বড়ো মেয়ে আয়রা জোর করে ওকে শাড়ি পড়িয়ে সাজিয়ে দিলো। ও দাঁতে দাঁত চেপে ছিল কিন্তু কিছু বলার সাহস পায়নি।
দুপুর তিনটায় পরপর গাড়ি এসে হর্ন বাজিয়ে জানান দিলো তিনি এসেছেন। মানুষটা চলে এসেছে পূর্ণতার বুক টিপটিপ করছে। দুই বছর আগে তার সাথে ওর কথা হয়েছিল শেষ বার। শাশুড়ি মা জোর করে কথা বলতে দিয়েছিল। সে ঝগড়া করে বলেছিল আমার কাছে আর কোনদিন ফোন দিলে সে নাকি আর কোনদিন তার বাবা মায়ের সাথেও যোগাযোগ করবে না। সেদিনের পর আর কেউ আমার কাছে ফোন দিতো না। আমিও নিজের মতো চলতে ছিলাম তার আশা আমি ছে'ড়ে দিয়েছি সেইদিন ই‌।

মামি মামি বলে আমার সেই ভাগ্নি ডাকতে এলো। আমাকে জোর করে টেনে নিয়ে এলো ড্রাইনিং রুমে‌।
সোফায় বসে আছে আমার সেই পাঁচবছর আগে বিবাহ করা স্বামী। পাঁচবছরে তার শ'রীরের গঠন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগের থেকে স্বাস্থ্য হয়েছে। গায়ের রং যেন ফর্সা হয়েছে আরেকটু। তাকে দেখতে দেখতে পূর্ণতা পাশে তাকালো একটা মেয়ে বসে আছে। কে এই মেয়েটি উনার সাথে এসেছে?

পূর্ণতার‌ শাশুড়ি পূর্ণতা কে টেনে ছেলের সামনে নিয়ে বলল," দিদান ওকে চিনতে পারছিস?"
দিদান পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে কিছু মনে করার চেষ্টা করে বলল," এটা কে মা? ও কি বড় আপুর মেয়ে আয়রা?"
দিদানের কথা শুনে সবাই খিলখিলিয়ে হেঁসে উঠলো। পূর্ণতা মনে মনে হাসছে। পূর্ণতার মনের হাসির সাথে বাস্তবেও হাসির রেশ পাওয়া গেল। আয়রা হাসি মুখে এগিয়ে এসে বলল," মামু এই যে আমি তুমি মামি কে ভাগ্নি ভাবছো!"

বলেই হেসে দিল। দিদান কপাল কুঁচকে বলল," এটা আবার কোন মামি তোর?"
" মামু কি যে বলো না এটা আমার দিদান মামার ব‌‌উ পূর্ণতা মামি। তোমার ব‌উ‌।"
দিদান অবাক চোখে পূর্ণতার দিকে তাকালো।

দিদানের পাশে বসা মেয়েটি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। দিদান ঢোক গিলে বলল," কি সব বলছে মা। মজা করছো কেন তোমরা? ও তো আমার চাচাতো বোন। ব‌উ বলে মজা করার অভ্যাস আর তোমাদের গেল না। যাইহোক পরিচয় করিয়ে দেই এই হচ্ছে তোমার ছেলের ব‌উ শশী।"

সবাই চোখ কপালে তুলে তাকিয়ে আছে পাশে বসে থাকা মেয়েটির দিকে। মেয়েটি বসা থেকে উঠে দিদানের মাকে সালাম করতে চাইল। পূর্ণতা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। ব‌উ কথাটা শুনতেই চমকে তাকাল। এই মানুষটা ওর নয় ও জানে তাকে নিয়ে ওর কোন আশা প্রত্যাশাও ছিল না তবুও কেন আরেকজন কে ব‌উ বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়াতে ওর বুকটা কেঁপে উঠলো। ওর চোখে কেন জল চিকচিক করে উঠলো।

পূর্ণতা শশীকে এগিয়ে আসতে দেখে পিছিয়ে যায়। শশী পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে দিদানের মা আশালতা কে। আশালতা ছেলের দিকে বিষ্ময়কর চাহনি দিয়ে তাকিয়ে আছে। উনি পূর্ণতার দিকে তাকাবে কি করে? মেয়েটা তো সব আশা ছেড়েই দিয়েছিল তবু জোর করেছে তারা। তাদের নিজের ছেলের উপর বিশ্বাস ছিল। ভেবেছিল এতদিন পর এসে হয়তো স্ত্রী কে মেনে নিবে কিন্তু ছেলে এটা কি করে নিয়ে এলো। এক স্ত্রী থাকতে আরেকটা বিয়ে করে নিয়ে আসছে।

কেউ আর এগিয়ে এসে কথা বলল না দিদানের সাথে। সবাই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর সবাই যে যার কাজে চলে যায়। থমকে দাঁড়িয়ে থাকে আশালতা বেগম। ছেলের থেকে এমনটা কোনদিন আশা করে নি। এই ভাবে ছেলে তার নাক কা'টবে ভাবতে পারে নি। দিদান আর শশী। দিদানের রুমে চলে যায়।

আশালতা পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে বলে," আমায় ক্ষমা করে দিস মা। দিদান এমন করবে আমি কল্পনাতে ও ভাবিনি। নিজের ছেলেকে আমি চিনতে পারিনি।"
" আমি তোমায় মায়ের জায়গা দিয়েছি। মা হয়ে মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে সেই জায়গাটা কেড়ে নিও না। উনার প্রতি আমার চাওয়া অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তোমাদের মিথ্যে আশা নিয়ে থাকাটা এবার অন্তত বন্ধ হোক। উনি এই কাজটা করে ভালোই করেছেন।"

" তোর কি হবে? আমরা যে তোর কাছে অপরাধী হয়ে গেলাম রে।"

" আমার আবার কি হবে? তোমার ছেলে আমায় মেনে নেয়নি বলে কি আমার আর কোন গতি হবে না। আমি একজন স্বনির্ভর মেয়ে নিজের দায়িত্ব আমি নিজেই নিতে পারি।"
" তুই আমাদের কাজ থেকে চলে যাবি কিভাবে থাকবো আমরা তোকে ছাড়া? তুই ছাড়া এই বাড়িটা যে খুব ফাঁকা রে। তুই তো আমার মেয়ে বল না তাই না। মাকে ছেড়ে চলে যাস না। মেয়ে হয়েই থাক না আমাদের সাথে।"

" এটা সম্ভব না মা। তুমি নিজেও জানো স্বামীর বাড়ি মেয়ে হয়ে থাকা যায় না। এখানে থাকলে আমাকে অনেক বিব্রত কর অবস্থায় পরতে হবে। আমি এখানে থাকতে পারব না। ক্ষমা করো আমায়। আমাকে চলে যেতেই হবে।"

" আমার ছেলেটা খুব বোকা রে। খাঁটি সো'না রেখে সে কি ধরে আনলো আমি জানি না। তোকে ও আমি আটকাবো না। সেই অধিকার ও আমার নাই‌। আমাদের জন্য এমনিতেই অনেক সহ্য করেছিস আর না। এবার তুই সুখে থাক। চলেই তো যাবি আর দুইটা দিন পর যা। সায়মন এর জন্মদিনের দিনটা আমাদের সাথে কাটিয়ে যা।"

পূর্ণতা রাজি হয়।
শশী দিদানের রুমে এসে জহুরী নজরে রুমটা দেখছে। দিদান ঘামছে অনবরত। শশী কোন ভাবে আগের বিয়ের কথা জানতে পারলে স'র্বনাশ হয়ে যাবে।
শশী আলমারির খুলে মেয়েদের পোশাক দেখে। ড্রেসিং টেবিলের সামনেও মেয়েদের কসমেটিক।
" এসব কি দিদান! এতো মেয়েলি জিনিস কেন তোমার রুমে? এটা তোমার রুম‌ই তো?"

দিদান উত্তর দিতে পারছে না।
ভয়ে ভীত হয়ে আছে। পূর্ণতা প্রবেশ করে তখন রুমে।
" আসলে ভাবি আপনার স্বামীর রুমে আমি কয়দিন ধরে ছিলাম। এজন্য আমার জিনিস পত্র এখানে রয়ে গেছে।"

শশী অবাক সুরে বলল," তুমি এখানে থাকতে।"
" হ্যা মানে উনি তো বিদেশ থাকতো রুমটা খালিই ছিল তাই আরকি থাকতাম। আপনারা চলে আসছেন এবার আপনারাই থাকবেন একটু বসেন আমি সব নিয়ে যাচ্ছি।"

বলেই পূর্ণতা আলমারির থেকে সব ড্রেস বের করে আনে। নিজের সমস্ত জিনিস নিয়ে বেরিয়ে আসে। দিদান হা করে তাকিয়ে ছিল পূর্ণতার দিকে। এই মেয়েটা ওর ব‌উ ছিল সে এতো সব জানার পর ও এতোটা স্বাভাবিক আছে ভাবতেই পারছে না।

শশী সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বলল," দিদান মেয়েটার কথা আমার পছন্দ হলো না। ও তোমায় আমার স্বামী বলে সম্বোধন করলো কেন?

চাচাতো বোনরা কি এইভাবে সম্বোধন করে? তুমি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছো তো?"

গল্প : পূর্ণতা
প্রথম পর্ব

06/07/2025
আমাকে ভার্সিটি থেকে টানতে টানতে একটি রুমে ধাক্কা দিয়ে ফেলো দিলো অয়ন ভয়ে আমার কলিজায় পানি চলে আসছে কেননা একটু পর কতটা নির...
06/07/2025

আমাকে ভার্সিটি থেকে টানতে টানতে একটি রুমে ধাক্কা দিয়ে ফেলো দিলো অয়ন ভয়ে আমার কলিজায় পানি চলে আসছে কেননা একটু পর কতটা নির্মম অ*ত্যাচার আমার উপর করবে তা আমি খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছি দরজা খুলার আওয়াজে আমার ধ্যান ফিরে। অয়ন রুমে প্রবেশ করে হাতে তার লোহার গরম শিক মুখে তার বাঁকা হাঁসি সে আমার বিছানার চারপাশে লোহার শিক টা নিয়ে ঘুরছে এবং বলছে
রিমিপরী আমার রিমিপরী এতো ভয় পাচ্ছো কেন জান? আমি কি বাঘ না ভাল্লুক
সে আমার কাছে এসে আমার কপালে স্লাইড করতে করতে বলল--
ইসসস কি অবস্হা করেছো নিজের এতো ভয় কেউ পায়?ভয়ে তোমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝড়ছে তোমাকে যা লাগছে না নিজেকে কন্ট্রোল করা বড় দায় হয়ে পড়েছে জান!!
লোকটার কথায় এইবার আরো ভয় লাগা শুরু করছে আমার!!
সে এবার চোখমুখ শক্ত করে আমার গাল চেপে ধরে বলে উঠে--
এতো ভয় পাও আমাকে তাই না? তাহলে যখন ভার্সিটির অনুসঠানে নিজের ফর্সা পায়ের নুপুর দেখিয়ে বেড়াচ্ছিলে সেইটা যখন অন্য ছেলেরা বলছিলো তোমার পায়ে নুপুর খুব মানায় তখন আমার কেমন লাগছিলো বলতে পারো?তখন ভয় লাগেনি একটুও লাগেনি তাইনা এর পরিমান কতটা ভয়াবহ হতে পারে!!

উনি এতো শক্ত করে আমার গাল চেপে ধরেছে ব্যাথায় আমার চোখ থেকে পানি ঝড়ছে তাও যেন তার দয়া হচ্ছেনা

---কি হলো উত্তর দিচ্ছো না কেন

আমি কোনোরকম কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বলে উঠলাম--
বিশ্বাস করুন অয়ন আমি জাস্ট একটু শখের বসেই পড়েছিলাম অন্য ছেলেদের দেখানোর কোনো ইন্টেনশন আমার ছিলোনা

অয়ন চোখ লাল করে বলে উঠে--
যতবারই অন্য ছেলেদের চোখ তোমার অই পায়ে গিয়েছে ততবারই আমার মনে হয়েছে কেউ আমার অধিকার এ হস্তক্ষেপ করেছে আর এই অয়ন চৌধুরী নিজের অধিকার একটুও ছাড়তে শিখেনি যেহুতু আমার অধিকারে তুমি আঘাত এনেছো এর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে
এই বলে অয়ন শিক টা রিমির পায়ে চেপে ধরে

পা টা খুব জ্বলছে চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে মানুষ এতোটা নির্মম কীভাবে হতে পারে?তাও বলে উঠলাম

আমাকে আপনি কি মনে করেন নিজের প্রপার্টি আমি একজন মানুষ জীবিত মানুষ সামান্য একটু পায়ে নুপুর পড়েছি বলে কেন শাস্তি পেতে হবে আমাকে তো আপনি বন্দি করে রেখেছেন সামান্য নুপুর পড়াতেও সমস্যা কি মনে করেন কি নিজেকে??
সাইকো আপনি একজন ডক্টর হয়ে আপনি বুঝেন না আপনার অসুখ আপনার ট্রিটমেন্ট এর প্রয়োজন!!
এমনিই অয়ন অনেক রেগে ছিলো তারপরে এইসব কথা শুনে যেনো তার চোখ রাগে লাল হয়ে৷ যাচ্ছে

সে শিক টা আরো চেপে ধরে বলে উঠে--
আমি সাইকো না?আমার ভালোবাসাকে পাগলামু বলতে পারলে তুমি!! ওকে দেখো এই সাইকোর পাগলামি!! এই বলে অয়ন৷ শিক দিয়ে আমার পায়ে আঘাত করলে লাগলো আর আমি ব্যাথায় চিৎকার করতে লাগলাম আর মনে পড়ে গেলো ভার্সিটির ঘটনা!!
আজ ভার্সিটিতে একটি অনুসঠান ছিলো ভালো মা অনেক কস্টে সাইকোটাকে বুঝিয়ে আমাকে ভার্সিটিতে৷ যাওয়ার পারমিশন দিয়েছে কিন্তু খুব ভয়ে ভয়ে আছি আজ একটু শখের বসে শাড়ি পড়িছি পায়ে আমার বাপির দেওয়া এক জোড়া নুপুর যা পায়ে চকচক করছে তখনি আমার ক্লাসমেট ইহসান এসে বলল--
রিমি তুমি তো অনেকদিন পরে ভার্সিটি আসলে এতোদিন কই ছিলে
ইহসান এর প্রশ্নে খানিকটা ব্রিবতবোধ করলাম ওকে তো আর সাইকোটার কথা বলা যাবেনা তাই বলে উঠলাম--
অই একটু পার্সোনাল কাজ ছিলো

ইহসানঃ ওহ বাই দ্যা ওয়ে তোমার পায়ে নুপুরটা কিন্তু খুব মানিয়েছে মনে হচ্ছে তোমার পায়ের জন্যই এই নুপুর তৈরি হয়েছে।।
ইহসান এর কথা শুনে খানিকটা মুচকি হাঁসলাম ছেলেটা বেশ ভালো কথা বলতে পারে!! আর বিপত্তি তখনি ঘটে গেলো যখন সাইকোটা ভার্সিটি ঢুকলো আর সেই দৃশ্য তার চোখে পড়লো অন্য কেউ আমার প্রশংসা করছে তাও আমি আবার সে ছেলেটার সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছি ব্যাস আর কি লাগে সাইকোটা রেগে আগুন কোনো কিছু না বলে আমাকে টানতে টানতে ভার্সিটি থেকে নিয়ে আসলো তারপরের ঘটনা আপ্নারা জানেনই!!

এতো ব্যাথা আর সহ্য না করতে পেরে আমি অজ্ঞান হয়ে অয়নের বুকে ঢুলে পড়লাম

মাত্র অয়নের হুশ এলে সে কি করছিলো

তার রিমিপরী অজ্ঞান হয়ে গেলো
সে রিমির মাথা ঝাকাতে লাগলো

অয়নঃ রিমিপরী কি হয়েছে তোমার!! এই শুনো না আমি সরি আর করবোনা কিন্তু কি করবো জান আমার যে সহ্য হয়না

অয়ন খেয়াল করে দেখে রিমির পা পুড়ে একেবারে কালচে হয়ে গিয়েছে অতিরিক্ত ব্যাথা সহ্য করতে না পেরেই রিমি জ্ঞান হারিয়েছে তা অয়ন৷ ঠিকই বুঝেছে
অয়নের চোখ থেকে অটোমেটিক নোনো জল গড়িয়ে পড়ে
অয়ন যেহুতু ডক্টর তাই সে খুব৷ সযত্নে রিমির পায়ে৷ ড্রেসিং করে দেয় আর ইঞ্জেকশন ও পুশ করে দেয় যাতে ক্ষত জায়গায় ইনফেকশন না হয়ে যায়

অয়নঃ ভালোবাসি অনেক রিমিপরী তোমাকে যেমন ভালোবাসবো তেমন শাস্তি ও দিবো তুমি আমার কথা কেন শুনো না?
রিমির অবস্হা দেখে অয়নের প্রচুর কস্ট হচ্ছে
অয়ন রিমিকে ঘুমের মেডিসিন ও পুশ করে দেয় যাতে রিমির ভালো ঘুম হয়

অয়ন কাউকে ফোন করে

--হ্যালো বস
অয়নঃ ইহসান ছেলেটার কি অবস্হা?
--স্যার আপনার কথা মতো ওকে মারতে মারতে অবস্হা খারাপ করে দিয়েছে
অয়নঃ ওকে হসপিটালে এডমিট করে আয় এন্ড চিকিৎসার সব খরচ আমার (বাঁকা হেঁসে)

--ওকে বস

অয়নঃ ওকে
টুট।।টুট

অয়নের কথা শুনে অয়নের গার্ড বলে উঠে-
স্যার এর কথা কিছু বুঝিনা নিজেই অবস্হা খারাপ করে আবার নিজেই চিকিৎসা করায়!!

তার প্রায় ২টা,,
বিছানার এক কোনে অজ্ঞান অবস্হায় পড়ে আছে রিমি শাড়ি তার অগোছালো।এদিকে রিমির দিকে নেশাক্ত দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে অয়ন। অয়ন তার হাত দিয়ে রিমির গালে স্লাইড করে যাচ্ছে এবং অপর হাতে ড্রিংক করে যাচ্ছে অয়ন খানিকটা রিমির দিকে ঝুকে পড়ে
অয়নঃ সাইকো? আমি সাইকো?
আমার ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন বললেনা রিমিপরী আমার ট্রিটমেন্ট তো তুমি রিমিপরী বুঝোনা তুমি? বুঝার দরকার নেই তোমার জন্য বার বার আমি সাইকো হতে রাজি বুঝেছে আমার রিমিপরী!!এক সেকেন্ড ও তোমাকে ছাড়া ভাবতে পারিনা কিন্তু তুমি আমাকে একটুও বুঝোনা সবসময় পালাই পালাই করো আমার কথার অবাধ্য হও তাই তো আমার রাগ কে কন্ট্রোল করতে পারিনা
অয়ন খেয়াল করে দেখে রিমির ফর্সা পায়ে পুড়ে একেবারে কালচে আকার ধারন করেছে
অয়ন চোখ ছলছল করে উঠে--

অয়নঃ আমি খুব হিং*স্র তাই না?
কিন্তু কি করবো জান?
তোমার জন্য আমি একশোবার
হিং*স্র হতে রাজি
তোমাকে আমিই আঘাত করবো
আবার আমিই ভালোবাসবো
তোমার সামান্য পায়ের নুপুর দেখার অধিকার ও কাউকে দিবোনা আমি!! প্রয়োজন পড়লে তার চোখ উপড়ে ফেলবো আমি!! তোমাকেও আঘাত করতে পিছপা হবোনা আমি।

অয়ন রিমির পায়ে শব্দ করে চু*মু খায়!!

অয়নঃ তুমি আমার এক অন্যতম নেশা!! যা আমাকে বার বার সাইকো হতে বাধ্য করে রিমিপরী!তুমি আমার প্রেমময়নেশা

চলবে,,,,,,,,,

প্রেমময়নেশা
পর্ব-১
Jannatul ferdosi rimi (লেখিকা)

'দুই মেয়ে জন্মিয়েছিস। কোন ছেলে জন্ম দিতে পারিস নাই। তারপরও তোকে ছেড়ে দেইনাই এইটাই তোর ভাগ্য। তোর কপালপোড়া মেয়ে এখন আমার ...
06/06/2025

'দুই মেয়ে জন্মিয়েছিস। কোন ছেলে জন্ম দিতে পারিস নাই। তারপরও তোকে ছেড়ে দেইনাই এইটাই তোর ভাগ্য। তোর কপালপোড়া মেয়ে এখন আমার মুখে চুনকালি মাখালো?'

বাবা কথাগুলো বলতে লাগলেন একনাগাড়ে৷ তার সাথে এলোপাতাড়ি যত গালিগালাজ আছে দুনিয়ার সব আমার আর মায়ের উপর ঝাড়তে লাগলেন।

রিপোর্টে এলো আমি প্রেগ*ন্যান্ট। আমার কোলে আরেকটা শিশুসন্তান বেড়ে উঠছে। বাড়িতে ফিরে এসেই মা আমার নাকে মুখে এলো*পাতাড়ি চ*ড়-থা*প্পড় বসিয়ে দিচ্ছিলেন একনাগাড়ে। আমার কোন কথাই যেনো তিনি শুনতে চান না। পাশে থাকা ছোট খালা খাট থেকে উঠে এসে আমার হাতে টান দিয়ে আমাকে খাটে বসালেন। মাকে ইনিয়ে বিনিয়ে বললেন,

'আপা মুখ বন্ধ করো। আস্তে কথা বলো। আস্তে। দেয়ালেরও কান আছে। নিজের মেয়ের ক*লঙ্ক এভাবে মানুষকে ডেকে ডেকে শুনিও না৷ পরে মেয়ে বাড়িছাড়া করতে পারবা না।'

তারপর আমাকে বলতে লাগলেন,

'জানতাম এই মেয়ের এমন হবে। জানতাম আমি এই মেয়ে এমন কান্ডই করবে। কথায় আছে না অতি বড় সুন্দরি না পায় বর, এই মেয়েটারও তাই হবে। বল এই বাচ্চার বাপ কে? বল? চিহ চিহ চিহ। আমাদের বংশে এমন পাপ এর আগে কেউ করেনি৷ আর শেষমেশ তুই কিনা আশা এমন করবি? তুই?'

আমার চোখ বেয়ে কান্না নামলো। আমি হু হু করে কেঁদে উঠলাম। আমার কান্না দেখে মা বলতে লাগলো,

'কী? এসব ভগলামি ভুগিচুগি এখন চলবে না৷ কে এই বাচ্চার বাপ? দুনিয়ার সামনে আমি কীভাবে মুখ দেখাবো এখন? আমি বলে বেড়াবো যে দেখো আমার গুণধর মেয়ে পেটে বাচ্চা নিয়ে এসেছে? কে এই বাচ্চার বাপ?'

মুহূর্তেই একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কে যেনো আমাকে কয়টা এলোপাতাড়ি মারতে লাগলো। তারপর আমি কিচ্ছু জানি না। আমি জ্ঞান হারালাম। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন একপাশে মাকে দেখতে পেলাম। অপরপাশে বাবাকে। সে সিগারেট টানছে। ছোটখালা কোথা থেকে এসে বললেন,

'দুলাভাই এমন মার মারতে গেলা কেন মেয়েটা জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। যদি কিছু হয়ে যেতো?'

'হয়ে গেলে হোক। এমন মেয়ে আমাদের চাই না। নুন আনতে পান্তা নাই যেই ঘরে, সেই ঘরের মেয়ে কিনা এমন কান্ড ঘটালো শেষমেশ? এমন কান্ড? এই মেয়েকে এখন বিয়ে করবে কে? এই তোর অবস্থার জন্য যে দায়ী, সে কি তোকে বিয়ে করবে? দিবে তোর বাচ্চার অধিকার? দিবে? তোর জন্য সব হয়েছে। তোকে বলেছি এইটের পর আর পড়াবো না। স্কুলে দিবো না। ঘরের কাজকর্ম করুক। তুই মানলি না। বললি যাক স্কুলে। স্কুলে গিয়ে কি তোর মেয়ে ব্যারিস্টার হয়েছে? মাত্র নাইনে পড়ার সময়ে কী করলো সে এগুলো? কী করলো সে? করেছে কাজকর্ম ঘরের? বাইরের কাজকর্ম করে এই বয়সে পেটে বাচ্চা নিয়ে হাজির হয়েছে ঘরে।'

একনাগাড়ে কথাগুলো বলেই বাবা মায়ের উপর চড়াও হলেন। আমার চোখের সামনে আমার মাকে মাটির সদ্য লেপা মেঝেতে ফেলে মারতে লাগলেন। সে কী মার! আমি বিছানায় উঠে বসলাম। জবুথবু হয়ে এক কোণে গিয়ে আশ্রয় নিলাম। ছোটখালা চিল্লাতে লাগলেন আর বাবাকে থামাতে লাগলেন। বাবাকে থামাতে গিয়ে বললেন,

'এই নষ্ট মেয়ের জন্য আমার বোনকে মারবা কেন দুলাভাই? এই মেয়েটাকেই নাহয় বের করে দাও। এই মেয়ে এমন কান্ড করার সাহস পায় কীভাবে?'

বাবা শান্ত হোন। মাকে মারা বন্ধ করেন। পাশের ঘরে চলে যান। মা আমার মাটিতেই পড়ে থাকেন। আমি মাকে দেখি। তার চোখ দিয়ে পানি বের হয় না। আমাকে কেউ এমন মারলে আমার চোখ দিয়ে পানি আসতো অনবরত। ছোটখালা বললেন

'তুই মরিস নাই কেন? দুলাভাই যে তোকে এতো মারলো তারপর জ্ঞান হারালি। মরলি না কেন অলক্ষ্মী? ম*রলি না কেন তুই?'

বুঝতে পারলাম বাবার মার খেয়ে আমি জ্ঞান হারিয়েছিলাম। সেই রাতটা বিছানার কোণে জড়ো হয়ে বসেই আমি কাটিয়ে দিলাম। চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠছিলো আলিফের চেহারা। আলিফ আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলো। বলেছিলো আমাদের ঘর হবে। সংসার হবে৷ সব হবে৷ মাস পাঁচেক আগে তখন সদ্য ক্লাস নাইনে উঠেছিলাম আমি। আলিফ কলেজে পড়তো। আমাদের স্কুল কলেজ পাশাপাশি। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল নিয়ে সে দাঁড়িয়ে থাকতো তার বন্ধুদের সাথে। চোখাচোখি, কথা আদান প্রদার করতে করতে কখন যে আমাদের মাঝে প্রেম হয়ে গেলো! এমন কতদিন হয়েছে আমি বাড়ি থেকে বের হয়েছি স্কুলে যাবো বলে। আলিফ রাস্তা থেকে আমাকে বাইকে করে নিয়ে চলে গেলো। পুরো দিন শেষে যখন স্কুল ছুটির ঘন্টা বাজে, আমি তখন বাড়ির রাস্তা ধরি। বাড়িতে ফিরে আসি। আলিফের চোখ ভরা স্বপ্ন ছিলো। মুখ ভরা ভরসা ছিলো। দুজনে স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা ছোট্ট সংসারের। একটা সাজানো গোছানো পরিবারের।

এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছি টেরই পেলাম না। ঘুম ভাঙ্গলো ছোটবোন হেনার ডাকে। সে ডেকেই ইশারা দিয়ে দেখালো যে মা ডাকছেন। আমি বিছানা ছেড়ে উঠে বসলাম। ধীরপায়ে রান্নাঘরের দিকে গেলাম। মা উনুনে আগুন পোহাচ্ছেন। আমাকে দেখে একটা খাট এগিয়ে দিয়ে বললেন,

'বস এখানে'

ছোটখালা ভেংটি কাটলেন একটা। মেঝেতে পানের পিক ফেললেন। এমনভাবে ফেললেন যেনো এই পানের পিক তিনি আমাকে দেখেই আমার মুখের উপর ফেলেছেন। মা আবার ইশারায় বসতে বললেন। আমি বসলাম। ব্লাউজের হাত বরাবর তুলে কয়েকটা ঘা দেখিয়ে মা বলতে লাগলেন

'আজ বিশটা বছর তোর বাপের সংসার করি আশা। প্রতিটাদিন দুই মেয়ে জন্মানোর পাপে আমি তোর বাবার কাছে লাঞ্চিত হই। লোকটার মুখের মার আর হাতের মার এতদিন মেয়ে জন্মানোর পাপে খেয়ে এসেছি। এখন মেয়ে জন্মানোর পাপের মার মেয়েদের জন্য খেতে হচ্ছে আমাকে? কী দোষ করেছি আমি মেয়ে জন্ম দিয়ে? তোকে লালন পালনে তো কোন কমতি আমি রাখিনাই। ড্রেস কিনবি, জুতা কিনবি। বাবা দেয়নাই, আমি ডিম বিক্রি করে, মোরগ বিক্রি করে একটাকা দুইটাকা করে জমিয়ে জমিয়ে কিনে দিয়েছি। বল দেইনাই? আর এর প্রতিদার তুই এভাবে দিলি আজ? নিজের পেটে একটা ক*লঙ্ক নিয়ে এসে? কাল ওই বাড়ির আরজুর বউ বললো তোর পেট মোটা মোটা। পর্শু এই ঘর, সেই ঘর বলবে। আমাকে বাঁচতে বাঁচতে ম*রতে হবে তোর জন্য আশা? বল?'

মা উঠে গেলেন উনুন থেকে। উঠেই দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছোটবোন হেনাকে চুল ধরে থা*প্পড় দিতে লাগলেন। আর বলতে লাগলেন,

"আশার মতো করেই তোকে বড় করছি হেনা৷ জানিনা তুই কোন পাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবি কাল। তোদের জন্ম দেয়াই আমার পা*প হয়েছে। পা*প।'

মা কান্নায় ডুবে গেলেন। আমি নিজের রুমে চলে এলাম। কী করবো বুঝতে পারছিলাম না৷ এক মুহূর্তে মনে হলো, যদি এই বাচ্চাটার বাবা কে এই অধিকার না দিতে পারি, তাহলে এই জীবন রেখেই বা কী লাভ? কী লাভ নিজের দুর্ভাগা মায়ের জন্য আরেকটা বোঝা চাপিয়ে দিয়ে জীবন কাটানোর?

প্রিয় বাউন্ডুলে 👍

আশালতা
পর্ব_০১
মিদহাদ_আহমদ

Address

Little Ferry, NJ

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Nishuu posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share