11/01/2025
পাকিস্তানের সামরিক সরকার তোষামোদ ও দাসত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করার জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিলেও, ওয়াশিংটন ঠিকই নিজের উপযুক্ত মিত্র চিনে নিয়েছে। দশকের পর দশক ধরে পাকিস্তানের গোলামি ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। তারা যতই মাথা নত করুক, কুফফারশক্তি কখনো বন্ধুত্ব দেয় না, কেবল ব্যবহার করে।
পাকিস্তান বারবার বলেছে তারা আমেরিকার প্রকৃত মিত্র, তারাই “বিশ্বস্ত অংশীদার”। কিন্তু তবুও যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে দশ বছরের প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই দশকব্যাপী চুক্তির আওতায় দুই দেশ একসঙ্গে প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, গোয়েন্দা ও কৌশলগত শক্তি গড়ে তুলবে; যার প্রতিটি দফা যেন পাকিস্তানকে দাফন করা কবরের ওপর নতুন পাথর বসানোর মতো।
যে পাকিস্তান অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে ওয়াশিংটনের অনুগত দাসের মতো আচরণ করে এসেছে, তথাকথিত “স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ” এর নামে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বিকিয়েছে, ঈমান-আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়েছে; আজ তাদের সেই গোলামির প্রতিদান হলো অপমান, অপদস্থতা, উপহাস আর উপেক্ষা।
ওয়াশিংটন তার আসল বন্ধুর হাত ধরেছে। নিজের উপযুক্ত বন্ধু চিনে নিতে ভুল করেনি। “আল-কুফরু মিল্লাতুন ওয়াহিদাহ” — এই চিরন্তন সত্য আজ আবারও প্রমাণিত হলো। কিন্তু তথাকথিত “মুসলমানদের রক্ষাকর্তা” পাকবাহিনী কখনোই শিক্ষা নেবে না। অবশ্য যাদের রক্তে কাদিয়ানি প্রভাব, নেতৃত্বে শিয়াপন্থী চিন্তা; তারা কখনোই মুসলমানদের মিত্র হতে পারে না।
দুই কুফফারশক্তির প্রতিরক্ষা চুক্তি বলে দিচ্ছে—ভারতই এশিয়ার উদীয়মান পরাশক্তি। ভারতই এই অঞ্চলে আমেরিকার প্রহরী। ওয়াশিংটন জানে, এই অঞ্চলে কুফরি সভ্যতার শক্তঘাঁটি হলো ভারত; তাই নয়া দিল্লিকেই তারা উপযুক্ত মিত্র হিসেবে দেখছে। এই চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার শক্তির ভারসাম্য পুরোপুরি বদলে দেবে। আর আমেরিকা আবারও পাকিস্তানকে টয়লেট টিস্যুর মতোই আবর্জনায় নিক্ষেপ করেছে। তবুও পাকিস্তানের নেতারা আমেরিকার দুয়ারে দুয়ারে অনুদান, ঋণ, অস্ত্রের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করছে না। তারা বুঝতে পারছে না, এই ভিক্ষার রাজনীতিই তাদের পতনের মূল কারণ। যারা আল্লাহর দীনকে তুচ্ছ করে, মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালায়, কুফফারের দরবারে মাথা নত করে, লাঞ্ছনা, অপমানই তাদের নিয়তি।
পাকিস্তানের জন্য এই চুক্তি নিঃসন্দেহে এক দুঃস্বপ্ন। সামরিক বাহিনী যতই “আমরা আমেরিকার পুরনো মিত্র” বলে চিৎকার করুক না কেন, বাস্তবতা স্পষ্ট— ওয়াশিংটন আর ইসলামাবাদের কান্নাকাটিতে কর্ণপাত করছে না। এখন প্রশ্ন হলো— আসিম মুনির ও খাজা আসিফরা কি মাথা ঝুঁকিয়ে বলবেন “আমরা এখনো বন্ধু”? আগের মতোই নতজানু থেকে ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে যাবেন? নাকি তাদের জুলুমের শিকার ইমরান খানের মতো মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবেন?
সব মিলিয়ে ভারত-আমেরিকা চুক্তি পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের জন্য এক কঠিন শিক্ষা—
"চাটুকারিতা কখনো কূটনীতি নয়, আর ভিক্ষার রাজনীতি দিয়ে বন্ধুত্ব কেনা যায় না।"