05/31/2025
আলহামদুলিল্লাহ! খিযির আর মূসা আলাইহিমুসসালামের ঘটনা থেকে ছোট উপলব্ধি, যা জানার পর হয়তো আপনার অন্তরে প্রশান্তি ছেয়ে যাবে।
খিযির আ: কে আল্লাহ অন্যতম বিশেষ কিছু জ্ঞান দান করেছিলেন, যা আল্লাহ মূসা আ: কে দান করেননি। যখন মূসা আ: খিযির করে বললেন, যে আপনাকে যে জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হয়েছে তা থেকে আপনি আমাকে কিচি শেখাবেন, এই শর্তে কি আমি আপনার অনুসরণ করতে পারি? তখন খিযির আ: বলেছিলেন, আপনি এই বিষয়ে সবর ধরতে পারবেন না।! মূসা আ: কে বলছেন, আপনি সবর করতে পারবেন না! সুবাহানাল্লাহ, মূসা আ: হলেন নবীরের মধে শ্রেষ্ঠতম একজন নবী, যার কথা কুর'আনে সবচেয়ে বেশি বলা হয়েছে, যে মূসা বানী ইসরাইলকে সবর করার উপদেশ দিতেন সে মূসা আ: কে খিযির বলছে আপনি সবর করতে পারবেনা না! তখন মূসা বললেন, ‘আল্লাহ্ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না।
এরপর ২ জন একসাথে চললেন, এর মধ্যে খিযির আ: এর একটা নৌকায় ফুটো করে দিলেন অথচ এই নৌকাটা ছিল ওই মাঝির জীবিকা উপার্জনের এক মাত্র উপায়, এরপর খিযির আ: একটি বালককে হত্যা করলেন। তখন মূসা বললেন, ‘আপনি কি এক নিষ্পাপ জীবন নাশ করলেন, হত্যার অপরাধ ছাড়াই? আপনি তো এক গুরুত্বর অন্যায় কাজ করলেন। স্বাভাবিক ভাবেই, বাহ্যিক দিক থেকে এসব জঘন্য কাজ মনে হচ্ছিল, কিন্তু এর পিছনে লুকায়িত আছে এক অদৃশ্য বাস্তবতা। যার জ্ঞান খিযির কে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু যেহেতু মূসা আ: কে দেওআ হয়নি তাই তিনি এসবকে জঘন্য কাজ ভাবতে লাগলেন এবং সবর করতে পারলেন না।
বাস্তবতা ২ ধরণের হয়, দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য। যেমন:- আমাদের আশে পাশে যা ঘটে সেটা বাহ্যিক বাস্তবতা, যা আমরা দেখতে পাই, কিন্তু আমাদের সবার সাথে ২ জন মালাইকাহ আছে, যাদের আমরা দেখতে পাই না ঠিকই, কিন্তু তারা রয়েছে এটা বাস্তব। লাইলাতুল ক্বদরে আমরা আকাশের দিকে তাকালে আকাশই দেখতে পাই, যা বাহ্যিক বাস্তবতা। কিন্তু এর পিছনে লুকায়িত আছে অদৃশ্য বাস্তবতা যা আমরা দেখি না, আর তা হলো আকাশে ছেয়ে থাকে অগনিত অবতীর্ণরত মালাইকাহ, যা সূরা ক্বদরে বর্ণিত আছে। تَنَزَّلُ الْمَلٰٓئِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ
আসলে আমাদের জীবনে প্রায় সকল ক্ষেত্রে আমরা কখনোই জানতে পারি না আল্লাহ যা যা করে তা কেন করেন? আমাকেই কেন আল্লাহ রোগ দিলেন৷ আমারই কেন এক্সিডেন্ট হলো, আমারই কেন চাকরি হচ্ছে না। আমারই কেন মানসিক শান্তি নেই। ইত্যাদি। এগুলো হচ্ছে বাস্তবতার দৃশ্যমান দিক, যার পিছনের লুকায়িত অদৃশ্যমান দিক আমরা জানি না। যার কারণে আমরা সবর করতে পারি না, যেমনটা সবর করতে না পেরে মূসা আ: খিযির আ: এর কাযে আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীদের খিযির আ: তার কাজের ব্যাখ্যা করলেন। তখন মূসা আ: বুঝতে পারলো তিনি যা করেছেন তা সঠিকই করেছেন। আর খিযির আ: এর করা কাজ তো আল্লাহর পক্ষ থেলে ওহী ছিল।
এই ঘটনা থেকে আমরা দারূন একটি শিক্ষা লাভ করতে পারি। তা হলো- আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা বাহ্যিক ভাবে খারাপ মনে হলেও এর পিছনে রয়েছে আমাদের জন্যে কল্যান। কী কল্যান আছে তা আমরা জানি না। তবে কল্যান আছে। যখন আমরা দেখতে পাবো, এই কাজের পিছনে এই কল্যান ছিল তখন আমাদের চোখ বেয়ে অশ্রু পড়বে এবং অন্তর বলে উঠবে আলহামদুলিল্লাহ! আপনার অসুস্থতা আপনার চাকরি না হওয়া ইত্যাদি এর পিছনে নিশ্চয়ই আল্লাহ কল্যান রেখেছেন। নিশ্চয়পি তিনি লাতীফ। তিনি যা করে তা অত্যন্ত সূক্ষভাবে করেন। কাজেই আমরা অধৈর্য না হয়ে সবর করি। যেদিন আমাদের সামনে অদৃশ্যমান বাস্তবতা আল্লা দৃশ্যমান করে দিবেন, সেদিন আপনি কেঁদে কেঁদেই বলবেন
' আলহামদুলিল্লাহ ' … কাজেই ভরসা হোক আল্লাহর উপর
Salafi sunnah
🌿