11/26/2025
টাইটানিকের ঘড়ি: হারানো সময়ের দাম
১৮ ক্যারেট স্বর্ণের পকেট ঘড়ি। এটি কোনো সাধারণ ঘড়ি নয়। এটি ডুবে যাওয়া টাইটানিকের যাত্রী ইসিডর স্ট্রাউসের—যিনি ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কগামী জাহাজটিতে ওঠেন।
ইসিডরের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী আইডা। তাকে লাইফবোটে উঠতে বলা হলেও আইডা স্বামীকে ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেন। দম্পতি একসঙ্গে ডুবে যান। কয়েক দিন পর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ইসিডরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়—তাঁর সঙ্গে পাওয়া যায় সেই ঘড়িটি। যদিও আইডার মরদেহ আর পাওয়া যায়নি।
পরিবার চার প্রজন্ম ধরে এই ঘড়ি সংরক্ষণ করেছিল। শেষমেশ এটি বিক্রি হলো রেকর্ড দামে—১৭ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সংগ্রহযোগ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
ঘড়ি ছাড়াও নিলামে বিক্রি হলো—আইডা স্ট্রাউসের চিঠি, টাইটানিক যাত্রী তালিকা, আরএমএস কারপাথিয়ার ক্রুদের দেওয়া স্বর্ণপদক।
ঘড়ির সঙ্গে একই নিলামে টাইটানিকের আনুষ্ঠানিক কাগজে লেখা আইডার একটি চিঠি এক লাখ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। যাত্রীদের একটি তালিকা গেছে এক লাখ চার হাজার পাউন্ডে। এছাড়া উদ্ধারকৃত যাত্রীদের পক্ষ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ আরএমএস কারপাথিয়ার ক্রুদের দেওয়া একটি স্বর্ণের পদক বিক্রি হয়েছে ৮৬ হাজার পাউন্ডে।
কেউ হয়তো ভাবতে পারেন—একটা ঘড়ি, এক চিঠি, এক তালিকা… কিন্তু এই ছোট্ট জিনিসগুলোই ১০০ বছরের পুরনো সমুদ্রের গল্পকে জীবন্ত রাখে।
ঘড়িটি শুধু সময়ের সাক্ষী নয়—এ যেন স্মৃতিরও রক্ষক।
সমুদ্রের গভীরতাকে পিছনে ফেলে আজ সেটা নতুন হাতে গেল, কিন্তু তার কাঁটার ভেতর আটকে রইলো সেই রাতের বরফঠান্ডা ইতিহাস।