
08/18/2025
"আশুলিয়া ওদিকে বাইটাল মসজিদের সাথে একটা ভ্যানের উপর ছয়টা লাশকে পুড়ায়ে দেয়া হয়। আব্বু ধরে বুঝতে পারছিল এখানে আমার ভাইয়া আছে!"
'..৬ আগস্ট সকালে আমি আব্বুকে ফোন দেই। বলি আমার ভাইয়া কোথায়! আব্বু বলে তোমার ভাইয়াকে পাওয়া যায়নাই। নামাজ পড়ে দোয়া করো। আমরা তো সবাই মূর্ছা যাই। দুপুর বারোটার দিকে আবার কল করি। আমার আব্বু তখন পুরা বোবা। আমি জিজ্ঞেস করি ভাইয়া কোথায়। আব্বু বলেনা কিছু। এরপর চিৎকার করে বলে 'ওরা আমার সুজয়কে...' এতটুকু বলে কান্না করে দেয়। তখনও পাওয়া যায়নাই ভাইয়াকে। কিন্তু আশুলিয়া ওদিকে বাইটাল মসজিদের সাথে একটা ভ্যানের উপর ছয়টা লাশকে পুড়ায়ে দেয়া হয়। আব্বু নাকি ধরে বুঝতে পারছে এখানে ভাইয়া আছে। তারপর চারটার দিকে লাশগুলো আলাদা করা হয়৷
আমার ভাইয়া ছিলো সবার নীচে। পুরা পুড়ে ফেলা হয় ওকে। হাত পা সব। ওর ম্যানিব্যাগে স্কুল আইডিকার্ড থেকে ওকে শনাক্ত করা হয়। স্কুল থেকে ফোন দেয় যে তোমার ভাইয়াকে পাওয়া গেছে। ৬ তারিখ বারোটার দিকে নিয়ে আসা হয় ভাইয়াকে। আব্বুকে নিয়ে আসে সন্ধ্যার দিকে আমার বাবা পুরা বোবা হয়ে গেছে।
আমি ওইসময় সবার বড় মেয়ে। আমার চোখ ভেঙে কান্না আসতেছিলো। আমি চিন্তা করি, না, আমার কান্না করলে চলবেনা। আমি কান্না করলে আমার বাবা মার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। আবার একটা ছোটবোন আছে। আম্মুকে ওষুধ খাওয়ায়ে ঠিক রাখা হইছিলো। আব্বুর অবস্থা বেশি খারাপ ছিলো৷ কোন কথা বের হয়না মুখ থেকে।
আমি বুকে পাথর চাপা দিয়ে উনাকে স্বান্তনা দেই। যে আব্বু আপনার এক বীর ছেলে চলে গেছে আমি আছিনা আরেক বীর মেয়ে। মানুষ চায় শহীদ হইতে। আপনার ছেলে শহীদ হইছে এটা তো আপনার গর্ব। এসব বলে স্বান্তনা দেই আব্বুকে..'
- ইসরাত জাহান অ্যানি (শহিদ তানজিল মাহমুদ সুজয়ের বোন)
July Records Global Archive