
10/29/2024
মাহদির অগ্রবাহিনীর সিপাহসালার শহিদ উ'সা'মা' বি'ন লা'দে'ন
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দ। ফজরের পূর্বমুহুর্ত। বিত্তশালী পরবারের এক আরব শিশু ব্যতিব্যস্ত হয়ে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে তার পিতাকে। এরপর বলে,
- আব্বাজান আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি।
পিতা ভাবছিলেন ছেলে হয়তো ভয়ংকর কোনো স্বপ্ন দেখেছে। তাই অজু করে তাকে নিয়ে মসজিদের রাস্তা ধরেন। পথে ছেলে তার পিতাকে বলে, আব্বা, আমি স্বপ্নে দেখি এক প্রশস্ত ময়দানে দাঁড়িয়ে আছি। আচমকা সাদা অশ্বারোহী একটি বাহিনী আমার দিকে এগিয়ে আসছে। সে বাহিনীর জ্বলজ্বলে চোখের অধিকারী এক এক অশ্বারোহী আমার সামনে এসে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কি উ'সা'মা বি'ন লা'দে'ন?’ আমি বলি ‘হ্যা’। তিনি পূনরায় জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কি উ'সা'মা' বি'ন লা'দে'ন?’ এবারও আমি ‘হ্যা’ বলি। অশ্বারোহী ফের প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কি উ'সা'মা বি'ন লা'দে'ন?’ উত্তরে আমি বলি ‘হ্যা আল্লাহর শপথ! আমিই উ'সা'মা' বি'ন লা'দে'ন।’ এরপর তিনি আমার দিকে একটি পতাকা বাড়িয়ে ধরে বলেন, ‘পতাকাটি মসজিদে আকসার দরজায়, হজরত মাহদি মুহাম্মাদ অবনু আব্দুল্লাহকে দেবে।’ আমি পতাকাটি হাতে নিই। এরপর দেখতে পাই সে বাহিনী আমার পেছন পেছন যাত্রা শুরু করছে।
পিতা স্বপ্নবৃত্তান্ত শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরে ব্যস্ততার কারণে তিনি স্বপ্নের কথা ভুলে যান। পরদিন ভোরে সে পিতাকে জাগিগে একই স্বপ্ন শোনায়। তৃতীয় দিনও সে একই স্বপ্নবৃত্তান্ত খুলে বলে। পিতা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। অবশেষে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে তাকে নিয়ে একজন আলমের কাছে চলে যান। আলিম স্বপ্নের বিবরণ শুনে শিশুটির দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার পিতাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এ শিশুটিই কি স্বপ্ন দেখেছে?’ তিনি বলেন, ‘হ্যা।’ এবার আলিম তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘বেটা, সাদা অশ্বারোহী তোমাকে যে পতাকা দিয়েছিলো, সেই পতাকার স্বরূপ কি তোমার স্বরন আছে?’ সে বলে, ‘পতাকাটি সৌদিআরবের পতাকার মতোই ছিল, তবে তার রঙ সবুজ ছিলো না, ছিল কালো বর্ণের।’ আলিম জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কখনো স্বপ্নে নিজেকে লড়াই করতে দেখেছ?’ উত্তরে সে বলে, ‘জি, প্রায়ই এমন স্বপ্ন দেখি।’ এবার আলিম তাকে বাইরে যেতে বলে তার পিতার দিকে মনোযোগী হয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনাদের পূর্বপুরুষ কোথায় বসবাস করতেন?’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইয়ামেনের হাজরামাউত অঞ্চলের অধিবাসী ছিলাম।’ আলিম বলেন, ‘আপনাদের গোত্রের ব্যাপারে বলুন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইয়ামেনের শানুআহ গোত্রভুক্ত; আর শানুআহ হচ্ছে কাহতান গোত্রের শাখাগোত্র।’
আলিম তখন জোরে তাকবির ধ্বনি দিয়ে শিশুটিকে ডেকে আনেন। তারপর তার কপালে চুমু খেয়ে বলেন, ‘কিয়ামতের আলামতসমূহ নিকটবর্তী হয়েছে। হে মুহাম্মাদ বিন লা'দে'ন, আপনার এই ছেলে হজরত মাহদির জন্য সে'না'বা'হি'নী প্রস্তুত করবে এবং নিজের দ্বীনের হিফাজতের জন্য খোরাসান-ভূমিতে হিজরত করবে। সৌভাগ্য তাদের, যারা তার সঙ্গে মিলিত হয়ে যু'দ্ধ করবে। হতভাগা তারা, যারা তাকে ছেড়ে দেবে এবং তার বিরুদ্ধে যু'দ্ধে লিপ্ত হবে।’
মুহাম্মাদ বিন লা'দে'নে'র সেই শিশুপুত্রকেই আজ পুরো বিশ্ববাসী তা'ন'জি'ম আল কা'য়ি'দা'তু'ল জি'হা'দ এর প্রধান শায়খ উ'সা'মা' বি'ন লা'দে'ন নামে চেনে। এই মহান মু'জা'হি'দ দ্বীনের হিফাজতের লক্ষ্যে আক্ষরিক অর্থেই হিজরত করেছেন; বিশ্বযুদ্ধের ভিত্তিস্থাপন করেছেন। জি'হা'দে'র নিজের র'ক্ত ও ধনসম্পদ ঢেলে দিয়ে শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করে প্রভুর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। পেছনে রেখে গেছেন এমন এক বাহিনী, যারা পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলে দা'জ্জা'লে'র সহোযোগী খ্রি'ষ্টা'ন ও ই'য়া'দি'দে'র আতঙ্কিত করে হজরত মাহদির নেতৃত্বে যু'দ্ধ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
উমার আজ্জাম খোরাসানি
২ আগষ্ট ২০১১