Engr Mohammad Enamul Huq

  • Home
  • Engr Mohammad Enamul Huq

Engr Mohammad Enamul Huq -BSC Engg./BUET/1966. Retd. Member BTTB in 2000. Writer of CHANDROMASH. Now a public Figure in Bd

পর্ব-১: শরীয়ত মোতাবেক কিভাবে রোযা রাখবো এবং মাস শুরু করবো? আর শরীয়ত মানলে কোরআনের হুকুমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে- না দিলে ম...
28/07/2025

পর্ব-১: শরীয়ত মোতাবেক কিভাবে রোযা রাখবো এবং মাস শুরু করবো? আর শরীয়ত মানলে কোরআনের হুকুমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে- না দিলে মুসলমান থাকা অসম্ভব। তাই এর নাম দিয়েছি-"চান্দ্রমাস শুরুর এটমবোম"।

ভূমিকাঃ 'মাস পাওয়া' এবং 'রোযা রাখা' সম্পূর্ন ভাবে দুটো আলাদা কাজ এবং আলাদা হুকুম। 'মাস পাওয়ার' সাথে 'হেলালের' সম্পর্ক। আর 'রোযা রাখার' সাথে 'সূর্যের' সম্পর্ক। হেলাল দিয়ে মাস শুরু করতে হয়। আর মাস পাওয়া গেলে সূর্য দেখে প্রতিদিন রোযা রাখতে হয়।

প্রশ্ন-১: কি ভাবে রোযা রাখব?
উত্তর: পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার আয়াত-১৮৭ (অংশ) এ আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন সূর্য দেখে রোযা রাখতে বলে দিয়েছেন।
এরশাদ হচ্ছে:-.. وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبيض مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى الَّيْلِ .....

অর্থ: আর তোমরা খাও এবং পান কর যতক্ষণ না ভোরের কালো রেখা থেকে সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। তারপর রোযা পূর্ন কর রাত পর্যন্ত।

মন্তব্যঃ সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে- তোমরা সোবহে সাদিকের মধ্যে সাহরী খাও। তারপর রোযা পূর্ন কর রাত পর্যন্ত। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা এবং আইয়ামে তাশরীকের তিন দিন সহ মোট ৫ দিন রোযা রাখা হারাম। রামাদান মাস সহ বাকী (৩৬৫-৫=) ৩৬০ দিনের যেকোন দিনে রোযা রাখতে হবে কোরআনে বলা উপরোক্ত হুকুম অনুযায়ী। এই কারনে কিভাবে রোযা রাখতে হবে সেই কথা হাদীসে বলা হয়নি। কোরআনে বলা আছে বিধায় রাসুল (সাঃ) সেই কথা হাদীসে পুনরায় উল্লেখ করার প্রয়োজন মনে করেননি।

প্রশ্ন-২: কি ভাবে মাস শুরু করবো?
উত্তর: রামাদান মাস সহ যেকোন মাস শুরুর দুটো নিয়ম আছেঃ-

ক) কোরআনের নিয়ম।

খ) হাদীসের নিয়ম।

ক) কোরআনে বলা নিয়ম হচ্ছেঃ
(১) হেলালের হিসাব করে রামাদান মাস সহ সকল চান্দ্রমাস শুরু করতে হবে।
সূত্রঃ ৫৫:৫ + ৯:৩৬ + ২:১৮৯ + ৬:৯৬ + ১০:৫ + ১৭:১২ + ১৮:২৫ ইত্যাদি সহ মোট ৯০ টার মতো আয়াত।

খ) হাদীসে বলা নিয়ম হচ্ছেঃ
(১) হেলাল দেখে মাস শুরু করতে হবে।
(২) অথবা স্বাক্ষ্য পেলে মাস শুরু করতে হবে।
(৩) উপরের কোনোটা না হলে মাস ৩০ দিন পুরা করতে হবে।

মন্তব্যঃ রোযা শুরুর ব্যাপারে উপরে কোরআন ও হাদীস থেকে দুই রকমের নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে। এখন আমরা কোনটা মানবো? এমতাবস্থায় শরীয়তের বিধান হচ্ছে যদি কোন বিষয়ে কোরআনে এবং হাদীসে দুই রকমের নির্দেশনা পাওয়া যায়, তবে কোরআনের হুকুম মানতে হবে, হাদীসের হুকুম মানা যাবে না। কিন্তু হাদীসকে বাতিলও বলা যাবে না।

উপসংহার: মাস শুরুর ব্যাপারে উপরে বর্নিত দুইটা নিয়ম এবং শরীয়তের বিধান উল্লেখ করা হলো। শরীয়তের বিধান মানতে হলে কোরআনের হুকুমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাই হেলালের হিসাব করে তৈরী করা "হিজরী ক্যালেন্ডারে" অথবা যেকোন "চান্দ্রপঞ্জীকায়" তারিখ দেখে মাস শুরু করতেই হবে। শরীয়তের এই হুকুম অমান্য করার ক্ষমতা কোন মুসলিমেরই নেই। তাই এর নাম দিয়েছি-"চান্দ্রমাস শুরুর এটমবোম"।

এই একটা হুকুম না মানার কারনে বর্তমানে বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে বিরাট বিশৃংখলা বিরাজ করছে। আমি বাংলাদেশ সরকার সহ দেশবিদেশের সকল দায়িত্বশীল ব্যাক্তিবর্গের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলব আপনারা অনতি বিলম্বে হিজরী ক্যালেন্ডার অথবা যেকোন চান্দ্রপঞ্জীকা দেখে মাস শুরু করুন এবং সকল বিশৃংখলা দূর করুন।

উপরোক্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাওয়ার পর সকল নাফরমানের ফন্দিফিকির চিরতরে বিদায় নেবে, ইনশাআল্লাহ। রোযা/ঈদ নিয়ে এই জরুরী বার্তা পাওয়ার পরও যদি কেউ মাস শুরু নিয়ে দ্বিমত পোষন করেন, তবে বুঝতে হবে- হয় তিনি কোরআনের হুকুম সম্পর্কে কিছুই জানেন না অথবা কোরআন মানেন না শুধু হাদীস মানেন অথবা তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ।

✍️ নিবেদকঃ ইন্জিঃ মোহাম্মদ এনামুল হক
# প্রাক্তন মহাপরিচালক, টেলিকম স্টাফ কলেজ, গাজীপুর।
# সদস‍্য (অবঃ), টি এন্ড টি বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ।
# কোরআন, হাদীস ও জ‍্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র।
# বহু গ্রন্থ প্রনেতা এবং রোযা/ঈদ নিয়ে ২৪ বৎসরের গবেষক।
# মহাসচিব, হিজরী ক‍্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ।
# এই পরিষদের সভাপতিঃ প্রখ‍্যাত পরমানু বিজ্ঞানী এবং
প্রাক্তন উপাচার্য ড. এম. শমশের আলী।
# আমার হোয়াটসআপ নম্বরঃ +17633137581
ইমেইলঃ [email protected]

পর্ব-২: Practical ও Technical এই দুইটা শব্দের পার্থক্যটা বুঝতে পরলেই চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে বিশ্বব্যাপী কোথাও কোন বিশৃংখলা থাকবে না, ইনশাআল্লাহ। তাই এটার নাম দিয়েছি- "চান্দ্রমাস শুরুর মিসাইল"।

১। সংক্ষিপ্ত কথায়- Practical হচ্ছে ব্যবহারিক উপায়, আর Technical হচ্ছে কারিগরী উপায়।এই দুটোই হচ্ছে উপায় বা অবলম্বন মাত্র। শরীয়তের হুকুম পালনে এই দুটো উপায় শুধু সহায়তা দান করে থাকে- শরীয়তের হুকুম বদলাতে পারে না। অতীতে বহু কাজ আমরা ব্যবহারিক বা Practical উপায়ে সম্পন্ন করেছি। কিন্তু কারিগরী বিদ্যা বা Technical knowledge এর উন্নয়নের কারনে বর্তমানে একই কাজ আমরা অতি সহজে কারিগরী বা Technical উপায়ে করে যাচ্ছি।

২। যেমন আমরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ স্বলাত আদায় করে থাকি। স্বলাত ফরজ হয় ওয়াক্ত হলে। ওয়াক্ত না পেলে স্বলাত আদায় করা যায় না। এখানে "ওয়াক্ত পাওয়া" এবং "স্বলাত আদায় করা" -সম্পূর্ন ভাবে দুটো আলাদা কাজ ও বিষয়। ওয়াক্ত পাওয়া প্রথম কাজ আর স্বলাত আদায় করা দ্বিতীয় কাজ। যদিও দুটো কাজই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু একটার সাথে আরেকটাকে গুলিয়ে ফেলার কোন সুযোগ নেই।

৩। একই ভাবে 'মাস শুরু করা' এবং 'রোযা রাখা' সম্পূর্ন ভাবে দুটো আলাদা কাজ এবং আলাদা হুকুম। 'মাস শুরু করার' সাথে 'হেলালের' সম্পর্ক আর 'রোযা রাখার' সাথে 'সূর্যের' সম্পর্ক। হেলাল দিয়ে মাস শুরু করতে হয়। আর মাসের শুরু পাওয়া গেলে সূর্য দেখে প্রতিদিন রোযা রাখতে হয়। অতএব একটার সাথে আরেকটাকে গুলিয়ে ফেলার কোন সুযোগ নেই। কোরআনের হুকুমে (২:১৮৭) প্রতিদিন সূর্য দেখে রোযা রাখা নিয়ে পৃথিবীর কোথাও কোন মতপার্থক্য নেই। মতপার্থক্য শুধু চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে।

৪। কারন অধিকাংশ আলেম হাদীসের হুকুম মেনে অতীতের Practical নিয়ম অনুযায়ী খালী চোখে হেলাল দেখে চান্দ্রমাস শুরু করার পক্ষে। অথচ অতীতের বহু কাজ তাঁরা বর্তমানে আধুনিক বা Technical উপায়ে করে থাকেন। এই বিষয়ে অতীত এবং বর্তমান নিয়মের বহু উদাহরন নীচে টেবিল বা ছক আকারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পুরাতন উপায়ের পরিবর্তে আধুনিক উপায় অবলম্বনের কারনে আসল কাজ কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না; বরং আরো সুন্দর ও নির্ভুল ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।

৫। চান্দ্রমাস শুরুর আধুনিক বা Technical নিয়ম অর্থাৎ হিজরী ক্যালেন্ডার বা চান্দ্রপঞ্জিকা অনুসরনের বিষয়টা নিয়ে আলেমগন যথেষ্ট দ্বিধান্বীত। অতীতে ঘড়ি এবং সৌরক্যালেন্ডার নিযেও তাঁদের সন্দেহ ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেই সন্দেহ আর নেই। অতএব হিজরী ক্যালেন্ডার বা চান্দ্রপঞ্জীকার বিষয়টা বুঝে আসলে সেটাও তাঁরা অনুসরন করবেন, এতে কোনই সন্দেহ নেই। আমি মনে করি নীচে বর্নীত ছকটা দেখলেই তাঁদের সন্দেহ সম্পূর্ন ভাবে দূর হয়ে যাবে।

৬। নীচের ছকে অতীতে বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজ অথবা ধর্মীয় কাজ কিভাবে Practical উপায়ে করা হতো এবং একই কাজ বর্তমানে কিভাবে Technical উপায়ে করা হচ্ছে- তা পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। উপায় বা অবলম্বনের কারনে কর্তব্য কাজ বা মূল এবাদতের হুকুম কোন ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না। বরং কর্তব্য কাজ সম্পাদনে সহায়ক হচ্ছে। তাই হিজরী ক্যালেন্ডার অথবা যেকোন চান্দ্রপঞ্জিকা দেখে নির্ভুল ভাবে চান্দ্রমাস শুরু করে আমরা সবাই রোযা/ঈদ পালন করতে পারি।

৭। কারন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন- "সূর্য ও চন্দ্র (আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত) হেসাব মতন চলে” (৫৫:৫)। আবার বলেছেন- "হে মানবজাতি (সকল ধর্মের মানুষ) তোমরা ১২টা হেলাল দিয়ে (হিসাবের মাধ্যমে) ১২টা মাস শুরু কর" (২:১৮৯)। তাই হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্ঠানদের চান্দ্রপঞ্জীকা এবং সকল ইসলামিক হিজরী ক্যালেন্ডার হুবহু একই রকম। এমনকি সকল পঞ্জীকা ও ক্যালেন্ডারে একই তারিখে পূর্নিমাও হয়। কারন চাঁদ একটা নীরেট পাখরের গোলক, এটা কোন ধর্ম মানে না। তাই সবাইকে একই হিসাব দেয়।

৮। যাঁরা একদিন আগে বা পরে মাস শুরু করেন তাঁরা দেখতে ও হিসাব করতে ভুল করেন। এই ভুল হিসাবের জন্য তাঁরা নিজেরাই দ্বায়ী-চাঁদ দ্বায়ী না। কারন আল্লাহর দেওয়া হিসাব সন্দেহাতীত ভাবে নির্ভুল। তাই অহেতুক চাঁদকে দোষ না দিয়ে, নিজেদের ভুল নিজেরাই সংশোধন করুন। এই একটা কারনেই মাস শুরু নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিরাট বিশৃংখলা বিরাজ করছে। এটা দূর হয়ে গেলেই সকল মতপার্থক্যও চিরতরে বিদায় নিয়ে নেবে, ইনশাআল্লাহ। এই কারনে এর নাম রেখেছি "চান্দ্রমাস শুরুর মিসাইল"।

৯। এটা হারজিতের কোন বিষয়ই না বরং সঠিক হুকুম জানা, বুঝা এবং মানার বিষয়। নিচের বর্নিত ১৭টা কাজের বেলায় যখন আধুনিক বা Technical নিয়ম পালন করছেন; তখন চান্দ্রমাসের শুরু নিয়ে অযথা কেন আপত্তি করবেন? তাই জোড় হাতে অনুরোধ করছি, দয়াকরে সবাই হিজরী ক্যালেন্ডার অথবা যেকোন চান্দ্রপঞ্জীকা দেখে নির্ভুল ভাবে চান্দ্রমাস শুরু করুন এবং সঠিক ভাবে রোযা/ঈদ পালন করুন। অহেতুক নিজেদের ফরজ ও ওয়াজীব এবাদত আর বিনষ্ট করবেন না।

১০। রোযা/ঈদ নিয়ে এই গুরুত্বপূর্ন বার্তা পাওয়ার পরও যদি কেউ চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে দ্বীমত পোষন করেন, তবে বুঝতে হবে- তিনি কোরআনের হুকুমকে বাদ দিয়ে একমাত্র হাদীসের উপর ভিত্তি করে ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছেন এবং অন্যসকল ক্ষেত্রে আধুনিক নিয়ম মানতে রাজী কিন্তু চান্দ্রমাস শুরুর ব্যাপারে মানতে রাজী না। এটা কি কোন ঈমানদার মুসলমানের কাজ হতে পারে?

✍️ নিবেদকঃ ইন্জিঃ মোহাম্মদ এনামুল হক
# প্রাক্তন মহাপরিচালক, টেলিকম স্টাফ কলেজ, গাজীপুর।
# সদস‍্য (অবঃ), টি এন্ড টি বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ।
# কোরআন, হাদীস ও জ‍্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র।
# বহু গ্রন্থ প্রনেতা এবং রোযা/ঈদ নিয়ে ২৪ বৎসরের গবেষক।
# মহাসচিব, হিজরী ক‍্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ।
# এই পরিষদের সভাপতিঃ প্রখ‍্যাত পরমানু বিজ্ঞানী এবং
প্রাক্তন উপাচার্য ড. এম. শমশের আলী।
# আমার হোয়াটসআপ নম্বরঃ +17633137581
ইমেইলঃ [email protected]

27/07/2025

॥ মুসলিম বাঙ্গালী জাতির অগ্নিপরীক্ষা শুরু- কোন দিকে যাবো?

১। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ এবং তারপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে ভাগ হয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বর্তমানে এই দেশের ৯০% ভাগ নাগরিকই মুসলমান, কিন্তু প্রকৃত মুসলমান না।

২। মুসলিম দেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে ২৫ বৎসর যাবত ন‍্যায‍্য অধিকার না পাওয়ায় রক্ত দিয়ে স্বাধীন হতে হয়েছে।

৩। আবার ৫৩ বৎসর যাবত চারিদিক বেষ্টিত হিন্দু ভারত কর্তৃক নানান রকমের জুলুম অত‍্যাচারে জর্জরিত হয়ে আবার রক্ত দিয়ে ছাত্রজনতা দ্বিতীয় বার স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।

৪। এইবার বিশ্বদরবারে সবার পরিচিত এই দেশেরই সন্তান নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত ড. মোহাম্মদ ইউনুছের উপর দ্বায়িত্ব অর্পন করে আমরা সত‍্যিকার স্বাধীনতা উপভোগ করার এবং ধ্বংশপ্রাপ্ত দেশ পুনর্গঠনের আশায় বুক বেঁধেছিলাম।

৫। দীর্ঘ এক বৎসর পর দেখা যাচ্ছে যে, পুনর্গঠন দুরে থাক পতীত সৈরাচারের বিচার এবং সংস্কার বাদ দিয়েই কুচক্রীমহল নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করার জন‍্য পাগল হয়ে গেছে। ভারতও তাই চাচ্ছে।

৬। ড. ইউনুছের সহযোগীতায় UNO বাংলাদেশ থেকে নব‍্যস্বাধীন রোহিঙ্গা রাজ‍্যে একটা মানবিক করিডোর করতে চেয়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক চক্রান্তের ধুয়া তুলে আমরা সেটা করতে দিলাম না।

৭। চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানী ও রফতানী মালামালের কার্গো হেন্ডেলিং এর দক্ষতা বৃদ্ধির জন‍্য বিদেশী কোম্পানী নিয়োগের চেষ্টাও একই ভাবে আমরা হতে দিলাম না।

৮। অবশেষে সম্প্রতি ঢাকায় UNO এর একটা মানবাধিকার অফিস খোলা নিয়ে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত নস‍্যাত করার উদ্দেশ‍্যে এই দেশের ইসলাম প্রিয় জনগোষ্টি বায়তুল মোকাররাম মসজিদের উত্তর গেটে ২৫শে জুলাই তারিখে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।

৯। রক্ত দিয়ে এক বৎসর আগে ভারতের আগ্রাসন ঠেকানো হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে UNO অফিসের মাধ‍্যমে আমেরিকা এই দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। শক্তিহীন বিধায় আমরা হয়ে গেছি এখন বিদেশীদের চালের গুটী। এই দেশের ইসলাম প্রিয় জনগোষ্টির দূর্ভোগ কোন ভাবেই পিছু ছাড়ছে না।

১০। ভারত এবং সৈরাচারী শেখ হাসিনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এখন আমাদের মনে হচ্ছে আমেরিকার হাত থেকে বাঁচার জন‍্য লড়াই করতে হবে। ড. ইউনুছ কি তাহলে আমাদের শত্রু হয়ে গেছেন?

১১। এখন আমাদেরকে ভাবতে হবে তুলনামূলক ভাবে কম লান্ছনা গন্জনা সহ‍্য করে কার সাথে থাকলে আমরা শান্তি পাবো। অন‍্যায়ের প্রতিবাদ করার দরকার আছে। কিন্তু অন‍্যায় না হতেই প্রতিবাদ করে আমরা ড. ইউনুছকে খাটো করছি কিনা, তা ভেবে দেখার দরকার আছে বৈ কি ?

১২। শেখ হাসিনা নিজের মুখে বলেছেন যে- তিনি রাজনীতিতে এসেছেন শুধু পরিবারের হত‍্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন‍্য। তিনি তাই করে গেছেন ১৬ বৎসর ধরে। তাকে বিশ্বাস করার প্রশ্নই আসে না।

১৩। কিন্তু ড. ইউনুছ হচ্ছেন তার উল্টো। তিনি ছাত্রজনতার কথায় দেশ গড়ার জন‍্য এসেছেন, দেশ ধ্বংশ করার জন‍্য আসেননি। তিনি কখনো এমন কাজ করতে পারেন না, যাতে করে তাঁর অর্জীত সকল সুনাম ধুলিস্বাত হয়ে যায়।

১৪। আমরা তাঁর প্রতি আস্থা রেখে সমষ্টিগত ভাবে সাক্ষাত করে সকল সমস‍্যার কথা তুলে ধরতে পারি। আমার বিশ্বাস তিনি আমাদের আসঙ্কাকে মূল‍্যায়ন করবেন এবং তার প্রতিকার করার চেষ্টা করবেন। তাঁকে আমেরিকার দালাল বলে তাড়িয়ে দিয়ে কার সহায়তা নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই? আর যদি বলি আমরা কারো সাহায‍্য চাই না- নিজের পায়ে দাঁড়াবো! এটা কি আদৌ সম্ভব?

১৫। আমাদের অদূরদর্শী কর্মকান্ডের মাধ‍্যমে আমরা আমেরিকা সহ সকল আন্তর্জাতিক মহলের বিরাগ ভাজন হয়ে একঘরে হয়ে যাচ্ছি কিনা সেটাও চিন্তা করার দরকার আছে। এর মাধ‍্যমে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারছি কিনা একটু ভেবে দেখা কি ভাল না?

১৬। আমরা যদি ড. ইউনুছ এবং আমেরিকাকে শত্রু বানাই তখন ভারত বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবে, যেমনটা করেছিল ১৯৭১ সালে। তারপর কি হবে সেটাতো আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। তাই সবার প্রতি অনুরোধ - ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।

সর্বস্তরের মানুষের মনে যেসকল প্রশ্ন প্রতিনিয়ত ঘুরপাক খাচ্ছে তার কিছু প্রশ্নের জবাব দেবেন কি?প্রশ্ন-১ঃ "চাঁদ দেখে রোজা রা...
22/07/2025

সর্বস্তরের মানুষের মনে যেসকল প্রশ্ন প্রতিনিয়ত ঘুরপাক খাচ্ছে তার কিছু প্রশ্নের জবাব দেবেন কি?

প্রশ্ন-১ঃ "চাঁদ দেখে রোজা রাখ, চাঁদ দেখে ঈদ কর" আজীবন এই হাদীস দিয়েই আলেমগন সওম/ঈদ পালন করে আসছেন। অথচ আপনি বলছেন এটা রাসুল (সাঃ) এর হাদীস নয়। আবার বলছেন হাদীসে নতুন চাঁদ দেখার কথা বলা আছে, চাঁদ দেখার কথা বলা নেই। আমরা কার কথা মানব?
উত্তরে আমি বলব আপনি কোরআন ও সহীহ হাদীস মানবেন, তাছাড়া আর কাউকে মানবেন না। তবে আমি সত্য বললাম না মিথ্যা বললাম তা মূল হাদীসের আরবী মতন দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি ১০০% নিশ্চয়তা সহকারে বলতে পারি যে, আমার কথায় কোন ভুল নেই। রাসুল (সাঃ) সকল হাদীসেই হেলাল (নতুন চাঁদ) দেখতে বলেছেন, ক্বামার (চাঁদ) দেখতে বলেননি। "চাঁদ দেখা" আর "নতুন চাঁদ দেখা" এই দুই কথার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ বিদ্বমান। এই দুই কথা কখনো এক হতে পারে না।
হেলাল বা নতুন চাঁদ দেখতে বলার অর্থ হচ্ছে চাঁদ নামক পাথরের গোলকের উপর সূর্য হতে আসা প্রথম দিনের প্রতিফলিত আলো দেখা। এই আলো বাড়তে বাড়তে পূর্নিমা হয় আবার কমতে কমতে অমাবস্যা হয়। পাথরের গোলক দেখা আর আলো দেখা এই দুই কথা কি এক হতে পারে? কখনো না। কিন্তু সকল তাফসীর ও হাদীসের অনুবাদ গ্রন্থে হেলালের অর্থ চাঁদ লেখা আছে। ছোট-বড় সকল আলেমগনও একই কথা বলে বেড়াচ্ছেন। শুধু তাই নয়, যুগ যুগ ধরে আলেমগন এই ভুল কথা দিয়েই বাংলাদেশে সওম/ঈদ করে যাচ্ছেন। চাঁদের পাথর দেখে কি সওম/ঈদ করা যায়? কখনো না। এবার আপনারাই বলুন কে সঠিক বলছে আর কার কথা মানতে হবে।
অতএব অতীত নিয়ে মারামারি না করে আসুন আজ থেকে দেশের বাহির থেকে পাওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পর্ব- ১২, ২৫ ও ৫০ অনুযায়ী সবাই মিলে একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করি। বর্তমানে সবচাইতে উত্তম ও সহজ কাজ হচ্ছে, কোরআনের কথা মত তৈরী করা হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরন করে সওম/ঈদ পালন করা। শরীয়তের দৃষ্টিতে বর্তমানে এই নিয়মই সর্বাধিক গ্রহনযোগ্য।

প্রশ্ন-২ঃ রাসুল (সাঃ) হাদীসে নতুন চাঁদ দেখার কথা বলেছেন ঠিকই, কিন্তু কার্যতঃ তিনি, সাহাবী, তাবেঈন, তাবেতাবেঈন সবাই দেশের আকাশ সিমায় পুরাতন চাঁদ দেখেই সওম/ঈদ পালন করেছেন। তাই বাংলাদেশের আকাশ সিমায় পুরাতন চাঁদ দেখে সওম/ঈদ হবে না কেন?

পবিত্র কোরআনে সূরা বাকারার ১৮৯ নম্বর আয়াতে ১২টা নতুন চাঁদ দিয়ে ১২ মাস শুরু করার কথা বলা আছে। তাই রাসুল (সাঃ) হাদীসে নতুন চাঁদের কথাই বলেছেন। কারন কোরআন ও হাদীস পরস্পর বিরোধী কথা বলতে পারে না। তবে অতীতে হিসাব করা সম্ভব ছিল না। তাই যার যার মত করে নতুন অথবা পুরাতন চাঁদ দেখেই সওম/ঈদ পালন করতে হয়েছে। সূত্রঃ হাদীস সহীহ মুসলিম-২৪১৯ (তাও) দ্রষ্টব্য। কারন ফরজ সওম ছাড়া সম্ভব নয়। এটা পানি না পেলে তায়াম্মুম করার মতন। কিন্তু এখন নতুন চাঁদের খবর সারা বিশ্বের মানুষ মিনিটের মধ্যে জানতে পারে বিধায় আগের মত খবর না পাওয়ার ওজর এখন অনুপস্থিত। তাই খবর পাওয়ার সাথে সাথে পর্ব-১২ অনুযায়ী তা গ্রহন করা আবশ্যক। তবে যেহেতু বর্তমানে হিজরী ক্যালেন্ডার পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু পর্ব-২৫ ও পর্ব-৫০ অনুযায়ী সওম/ঈদ পালন করতে হবে। অন্যথা শরীয়তের দৃষ্টিতে সওম/ঈদ পালন বৈধ হবে না।

প্রশ্ন-৩: রাসুল (সাঃ) থেকে শুরু করে কেউই নতুন চাঁদ দেখার খবর এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় পাঠিয়েছেন বলে কোন নজির পাওয়া যায় না। তাই আমরা খবর আদান-প্রদান করতে যাব কেন?

খুব সুন্দর ও যুক্তিপূর্ণ প্রশ্নই বটে। তাই উত্তরটাও সুন্দর ও যুক্তিপূর্ন ভাবে দেবার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
ক) কথায় বলে ওজরের কোন মাসয়ালা নেই বা হয় না। এটা কথার কথা। তবে এখানে বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে- ওজর নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যায় না বা করা উচিৎ নয়- এটা বুঝানোর জন্য।

খ) ওজরের কারনে নতুন চাঁদের পরিবর্তে পুরাতন চাঁদ দেখে যখন কেউ শরীয়তের হুকুম পালন করতে বাধ্য হয়, সেই ওজর অন্য কাউকে খবর পাঠিয়ে জানানোর মধ্যে কোন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। অতীতে তাই কেউ এমনটা করেননি। তাছাড়া যোগাযোগের অভাবতো ছিলই তথাপি স্বাক্ষ্য পাওয়ার পর সেই যুগেও রাসুল (সাঃ) তা গ্রহন করেছেন।

গ) উত্তম কথা বা উত্তম কাজের ব্যপারে পারস্পরিক মতবিনিময় চলে। তাই কোরআন এবং হাদীসে বলা হুকুমের ব্যপারে আমরা মতবিনিময় করতে পছন্ধ করি বা ভালবাসি।

ঘ) নতুন চাঁদের খবর আদান প্রদান করা অতি অবশ্যই একটা উত্তম কাজ যার মাধ্যমে নেকী পাওয়া যায়। এই কাজ বর্তমানে সবাই করছে।

ঙ) অতএব অতীতে পুরাতন চাঁদের খবর পাঠানোর অযৌক্তিকতা দিয়ে বর্তমানের নতুন চাঁদের খবরের যৌক্তিকতাকে মূল্যায়ন করা যাবে না।

চ) তাই নতুন চাঁদের খবর প্রেরন ও গ্রহন করাকে বর্তমানে নেক আমল ও জরুরী কাজ বলে মনে করতে হবে।

ছ) এই কাজ বর্তমানে আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় সকল পর্যায়েই করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও সেটা করছে।

জ) তবে ২০০০ সাল হতে হিজরী ক্যালেন্ডারের সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে বিধায় বর্তমানে নতুন চাঁদের খবর নেওয়ার কোনই প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন-৪: অবৈজ্ঞানিক বুদ্ধিমান লোকেদের প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশে যখন দিন আমেরিকায় তখন রাত। অতএব সারাবিশ্বে একই দিনে ও একই সময়ে সওম/ঈদ পালন করা সম্ভব নয়। আপনি কি বলেন?

উত্তর-১: ১২ ঘন্টার দিন ও ১২ ঘন্টার রাত ধরা হলে বিশ্বব্যাপী একই দিনে ১২ ঘন্টার মধ্যে সওম/ঈদ পালন করা কখনো সম্ভব হতে পারে না। আবার একই সময়ে বললেতো সম্ভব হবার প্রশ্নই আসে না। তবে বিজ্ঞানের আলোকে চন্দ্র-সূর্য যেই ভাবে চলে তার হিসাব করলে সম্ভব।

উত্তর-২: এবার জুমার নামাজের কথা ধরা যাক। বাংলাদেশের মানুষ যেমন দুপুর একটার সময় জুমার নামাজ পড়ে, আমেরিকার মানুষও তেমনি দুপুর একটার সময় জুমার নামাজ পড়ে। দিন, তারিখ, বার ও সময় দুই দেশেই কিন্তু একই থাকে। এটা কি ভাবে সম্ভব হলো? হলো এই কারনে যে, বেলা একটা প্রথম বেজেছে পুবাকাশের IDL এ; তারপর সেটা সারা পৃথিবী ঘুরে পশ্চিম আকাশের শেষে IDL এ গিয়ে ২৪ ঘন্টা পরে শেষ হয়েছে। তাই সবাই দিন, তারিখ, বার ও একই সময় পেয়েছে। পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারনে এটা সম্ভব হয়েছে। এটা বিজ্ঞানের কথা।
একই ভাবে সকল তারিখ ও বারের সকল সময়ই পুবাকাশের IDL এ শুরু হয় এবং পশ্চিম আকাশের পরে IDL এ গিয়ে শেষ হয়। এভাবে বিশ্বব্যাপী একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করাও সম্ভব। এখন যেহেতু বিশ্বহিজরী ক্যালেন্ডার পাওয়া যায় সেহেতু দিন তারিখ আগে থেকেই জানা যায়। এরপরও যদি কেউ দ্বিমত করে তবে বুঝতে হবে যে, সে বিজ্ঞান বুঝে না বা বিজ্ঞান মানতে রাজী না। অথচ সে বিজ্ঞানের সকল সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে। কি আজব কথা!

প্রশ্ন-৫: বেশী জ্ঞানী মানুষের প্রশ্ন, পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে সূর্যাস্তের পর যখন নতুন চাঁদ দেখা যাবে তখন পূর্বপ্রান্তে সকাল হয়ে যাবে- তাহলে বিশ্বব্যাপী একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করা কিভাবে সম্ভব হবে?

উত্তর-১: নতুন চাঁদ খালি চোখে দেখলে বিশ্বব্যাপী একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করা সম্পূর্নভাবে সম্ভব না হবারই কথা। সেই ক্ষেত্রে সময়মত সংবাদ না পাওয়ার কারনে অতীত যুগের বিধান মতে পরের দিন সওম/ঈদ পালন করা যায়েজ ছিল। যেহেতু আমরা অতীত যুগে বাস করি না, সেহেতু এখন এক দিন পরে করা জায়েজ হবে না। আমাদেরকে হয় বাহিরের স্বাক্ষ্য নিতে হবে অন্যথায় হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরন করতে হবে।

উত্তর-২: ১৯৯৯ সালে কোরআনের কথা মত হিসাবের মাধ্যমে জ্ঞানের চোখে নবচন্দ্র দর্শনকে নিশ্চিত করে হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী করা হয়েছে। সেটা অনুসরন করে অগ্রীম দিন/তারিখ দেখে বিশ্বব্যাপী একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করা সম্পূর্নভাবেই সম্ভব। অতএব এখন কোন অজুহাতেই সওম/ঈদ পালনে আগপিছ করা যায়েজ হবে না। এরপরও যদি কেউ বিতর্ক করে তবে বুঝতে হবে তিনি সুরা আররাহমানের পাঁচ নম্বর আয়াতের প্রথম অংশ বিশ্বাস করেন বাকী অংশ বিশ্বাস করতে রাজী না।

প্রশ্ন-৬ঃ যিনি বোকা অথচ নিজেকে খুব বুদ্ধিমান মনে করেন তার প্রশ্ন হল- যারা সৌদিআরবের সাথে সওম/ঈদ পালন করে তারা সৌদিআরবের সাথে ইফতার করে না কেন, নামাজ পড়ে না কেন?

উত্তর-১: সওম/ঈদ নতুন চাঁদ দেখে পালন করতে হয়। সৌদিআরব যদি নতুন চাঁদ দেখে আর সেই স্বাক্ষ্য পেয়ে যদি কেউ সওম/ঈদ পালন করে তবে সেটা শরীয়তের হুকুম মোতাবেক সম্পূর্ন ভাবে যায়েজ। আর ইফতার করা আর নামাজ পড়া এই দুইটাই সূর্যের সময় দেখে করতে হয়। এগুলো যার যার সময় অনুযায়ী আদায় করাই শরীয়তের হুকুম। অতএব প্রশ্নকারীর দুইটা কথার মধ্যে কোন মিল নেই। এমন ভুল ও উদ্ভট প্রশ্ন যারা করেন তারা সূর্য ও চন্দ্রের কাজ কি তাই জানেন না। এমন কথা শুনে বোকারাই মনে করে ঠিক বলেছে, আর বুদ্ধিমানরা শুধু হাসে।

প্রশ্ন-৭ঃ ধর্মকর্মে উদাসীন ব্যক্তির বক্তব্য হচ্ছে- সরকার যেই দিন সওম রাখতে বলবে আমরা সেই দিন সওম রাখব, আর সরকার যেই দিন ঈদ করতে বলবে আমরা সবাই মিলে সেই দিন ঈদ করব। আলাদা হয়ে ঈদ করার মধ্যে কোন আনন্দ থাকতে পারে না।

উত্তর-১: এই প্রশ্নটার সাথে ব্যক্তি বিশেষের ভাল লাগা বা না লাগার বিষয়টাই গুরুত্ব পেয়েছে বেশী। শরীয়ত কি বলে সেটা তার কাছে গুরুত্বহীন বলেই মনে হয়েছে। প্রশ্নকারী মনে করেছেন যে, সরকার যেটা করবে আমরাও সেটা করব। ভুল হলে সেজন্য সরকার দ্বায়ী হবে। আবার এটাও বলা যায় যে, প্রশ্নকারী সওম/ঈদ সম্পর্কে মাথা ঘামাতে রাজী না। সবার ভুল হলে আমারও নাহয় হলো। তাতে লজ্জার কি আছে? বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষ এই ভাবেই সওম/ঈদ করে। পর্ব-৪২ এ বলা হয়েছে যে, শরীয়ত সম্মত না হলে সরকার প্রধানের হুকুমও মানা যাবে না। সেই বিবেচনায় সরকারী ঘোষনায় বাংলাদেশে যেই সওম/ঈদ পালন করা হয় তা দুই কারনে ভুল হয়:-১) পশ্চিম গোলার্ধে নতুন চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর জানার পরও সেই স্বাক্ষ্য ইচ্ছাকৃত ভাবে গ্রহন না করা। ২) পর্ব-৫০ অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে কোরআনের কথা মত তৈরী করা বিশ্বহিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরন না করা। বাংলাদেশ "উম্ম আল-কুরা হিজরী ক্যালেন্ডার" অনুসরন করতে পারে। তাহলে বিশ্বের সাথে একই তারিখে ও বারে কোরআনের হুকুম মোতাবেক সওম/ঈদ পালন করা সম্ভব। অথচ তা না করে বাংলাদেশ শরীয়তের হুকুম উপেক্ষা করে অবৈধ ভাবে একদিন পরে সওম/ঈদ পালন করছে।

মন্তব্যঃ দেশের আলেমগনের ভুল পরামর্শে সরকার যেই ঘোষনা দিচ্ছে, এবং সেটা যারা অনুসরন করছে সবাই দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে পর্ব-৪২ দেখা যেতে পারে। তারপরও আমাদের দেওয়া পরামর্শ কেউ কানে তুলছে না। মনে হচ্ছে যে, ফরজ রোজা আর ওয়াজিব ঈদ দেশের অধিকাংশরা মিলে যখন ইচ্ছা তখন করা যায়। ভাবখানা এমন যে, সবাই মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ। জয়েন্ট ভেন্চারে আনন্দ উৎসব পালন করার মতো। এতে শরীয়তের হুকুম উপেক্ষা এবং তাগুতের অনুসরন করা হয়ে যাবে।

প্রশ্ন-৮: বিশ্বব্যাপী সওম/ঈদ পালনের বিষয়টা আলেমগনকে কিম্বা জনগনকে না বলে সরকারকে বললে ভাল হয় না?

উত্তর: প্রস্তাবটা খুবই সুন্দর। তবে কোরআন ও হাদীসের সঠিক অনুসরনের বিষয়ে একজন মুসলিম আরেকজন মুসলিমকে দাওয়াত দিতেই পারে। সেই সুবাদে আমরা ব্যক্তিগত ভাবে এবং সাংগঠনিক ভাবে সকলের কাছেই দাওয়াত পৌছানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। ধর্মীয় বিষয় বিধায় দেশের আলেমদের কাছে সঠিক নির্দেশনাটা কোরআন-হাদীসের আলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এর প্রধান কারন হচ্ছে-জনগন মনে করে কোরআন-হাদীস জানা আলেমগন ভুল করতে পারেন না। তাই তাদের কথা মত তারা সওম/ঈদ পালন করে। অথচ সরকার ভোটের কথা চিন্তা করে তাদের পরামর্শ ভুল হউক শুদ্ধ হউক বিনাবাক্যে ঘোষনা দিয়ে থাকে। তাই আলেমদের ভুল ভাঙ্গানো আগে দরকার বলে আমরা মনে করি। তাঁরা শুধরে গেলে সমাধান তাড়াতাড়ি আসবে। তাদের অনেকের কাছে বিষয়টা পরিষ্কারও হয়ে গেছে। যারা মসজিদ বা মাদ্রাসার দায়িত্বে আছেন তাঁরা চাকুরী হারানোর ভয়ে কিম্বা জনগনের সমালোচনার ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। এই দুই সঙ্কটের কথা বলে তাঁরা আমাদেরকে সরকারকে জানাতে বলেন। তাদের কথা হল- সরকার যদি ঘোষনা দেয় তবে আমরা মেনে নেব। অথচ চাঁদ দেখা কমিটিতে থাকা যেই আলেমদের কথায় সরকার ঘোষনা দেয় তাঁরা মনে করেন তাদের সিদ্ধান্তই ঠিক। আমরা পড়েছি উভয় সঙ্কটে। যারা কিছুটা শিক্ষিত তাদেরকে বুঝিয়ে বলার সাথে সাথে বলতে দেরী করেনা যে, বিষয়টা আমিও মনে মনে ভাবছিলাম। আমরা বলি যে- সওম/ঈদের বিষয়টা নতুন চাঁদের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আলেমগন বলেন- পুরাতন চাঁদের উপর নির্ভরশীল। তফাতটা কোথায় এবার বুঝা গেল কিনা? আমরা বলি হাদীসে আছে নতুন চাঁদ। তাঁরা বলেন রাসুল (সাঃ) তো পুরাতন চাঁদ দিয়েই সওম/ঈদ করেছেন। তাঁরা কোন ভাবেই নতুন চাঁদের কথা শুনতে চান না। যখন বলি রাসুল (সাঃ) এর সময় যোগাযোগের অভাবে নতুন চাঁদের খবর পাওয়া যেত না, তাই পুরাতন চাঁদ দিয়েই সওম/ঈদ করতে হয়েছে। এখন নতুন চাঁদের খবর পাওয়া যাচ্ছে বিধায় পুরাতন চাঁদ দিয়ে সওম/ঈদ পালন করা যায় না। তখন তাঁরা বিরক্তি প্রকাশ করে বলতে দেরী করেন না- আপনি কি আমাদের চাইতে বেশী বুঝেন? বাংলাদেশ সরকার একটা "জাতিয় চাঁদ (!) দেখা কমিটি গঠন করে দিয়েছে। সেই কমিটির কাজই হচ্ছে এ/সি রুমে বসে চাঁদ দেখার খবর নিয়ে সওম/ঈদের দিন তারিখ ঘোষনা করা। তাঁরাতো নতুন চাঁদ দেখার দরকার আছে বলেই মনে করেন না। তার মানে হাদীসে কি আছে সেটা বড় কথা নয়; তাঁরা যেটা করছেন সেটাই বড় কথা। তাঁদের মতে এই নিয়মতো নতুন না, যুগ যুগ ধরে যা চলে আসছে। এখন নতুন কিছু করতে হলে অতীতে যা করা হয়েছে সব ভুল ছিল বলতে হয়। এটা কি করে সম্ভব? এটা যে সম্পূর্ন ভাবে সম্ভব তার ব্যখ্যা নীচে দেওয়া হল।
রাসুল (সাঃ) ১৪০০ বৎসর আগেই দেশের সীমানার বাহির থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে সওম শুরু করেছেন এবং ৩০তম সওম ভেঙ্গে ঈদও করেছেন। পর্ব-১২ দ্রষ্টব্য। রাসুলের উম্মত হয়েও আপনারা তা লঙ্ঘন করছেন কি কারনে? এই প্রশ্নের জবাব কোথায়? উল্টো বলা হচ্ছে যারা সৌদিআরবের খবর নিয়ে সওম/ঈদ করছে তারা ভুল করছে। বাংলাদেশ কি পৃথিবীর বাইরে অবস্থিত? রাসুল (সাঃ) বলছেন সীমানার বাহিরের খবর নিতে হবে, আর আপনারা বলছেন নেওয়া যাবে না। আপনারা রাসুলের উম্মত হয়ে রাসুলকে অমান্য করছেন কেন? তার উপর কোরআনের কথা মত তৈরী করা হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরন করলেও সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আপনারা তাও করছেন না। জনগনের সওম/ঈদ নিয়ে এমন তামাশা করছেন কেন? তাই আমার একান্ত অনুরোধ আপনারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরন করে মুসলিম উম্মাহর সাথে সওম/ঈদ পালন করুন। আখেরাতে আপনারা নিশ্চিত সফলতা পাবেন।

প্রশ্ন-৯: ভিডিওর মাধ্যমে অনেক আগেই ডাঃ জাকির নায়েক বলে দিয়েছেন যে, বিশ্বব্যাপী একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করা সম্ভব নয়। অতএব আপনার কথা শুনে কোন লাভ নেই।

আমার কথা হল- মানুষ মাত্রেরই ভুল হতে পারে। ডাঃ জাকির নয়েকও তার ব্যাতিক্রম কিছু নন। সওম/ঈদের বিষয়টা তিনি ভালভাবে খতিয়ে দেখার সময় পাননি। তাই তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করতে ভুলে গেছেন। তিনি ১৪০০ বৎসর আগের নিয়মকে অনুসরন করে সিদ্ধান্ত দিয়ে ফেলেছেন। বিগত এক যুগ আগে ও পরের অবস্থা দেখেই বুঝা যায়- বিশ্ব কিভাবে এই ব্যাপারে ঐক্যমতে এসে গেছে।১৯৮৬ সালে OICর সিদ্ধান্তের ফলে কোরআনের কথা মত তৈরী করা হিজরী ক্যালেন্ডার এখন আমাদের ঘরে ঘরে পৌছে গেছে। তাই অনুন্নত যুগের নিয়মের কথা এখন অচল। মুসলিম উম্মাহ এখন একতাবদ্ধ হয়ে বিশ্বব্যাপী একই তারিখে ও বারে সওম/ঈদ পালন করে যাচ্ছে। ফলে ইসলামের মধ্যে ঐক্য ও ভাতৃত্ববোধ বিপুল হারে বেড়ে গেছে। এখন আমাদের উচিত সুরা আলে ইমরানের আয়াত-১০৩এর হুকুম অনুযায়ী একতাকে আরো শক্ত ও মজবুত করে ধরে রাখা পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হওয়া।

॥ শরীয়ত মোতাবেক কিভাবে রোযা রাখব এবং মাস শুরু করব? শরীয়ত মানলে কোরআনের হুকুম মানতেই হবে- না মানলে মুসলমান থাকা অসম্ভব। ত...
15/07/2025

॥ শরীয়ত মোতাবেক কিভাবে রোযা রাখব এবং মাস শুরু করব? শরীয়ত মানলে কোরআনের হুকুম মানতেই হবে- না মানলে মুসলমান থাকা অসম্ভব। তাই এর নাম দিয়েছি “চান্দ্রমাস শুরুর এটমবোম"।

ভূমিকাঃ 'মাস পাওয়া' এবং 'রোযা রাখা' সম্পূর্ন ভাবে দুটো আলাদা কাজ এবং আলাদা হুকুম। 'মাস পাওয়ার' সাথে 'হেলালের' সম্পর্ক। আর 'রোযা রাখার' সাথে 'সূর্যের' সম্পর্ক। হেলাল দিয়ে মাস শুরু করতে হয়। আর মাস পাওয়া গেলে সূর্য দেখে প্রতিদিন রোযা রাখতে হয়।

প্রশ্ন-১: কি ভাবে রোযা রাখব?
উত্তর: পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার আয়াত-১৮৭ (অংশ) এ আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন সূর্য দেখে রোযা রাখতে বলে দিয়েছেন।এরশাদ হচ্ছেঃ-.. وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأبيض من الخيط الأسود من الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُوا الصِّيَامَ إِلَى الْيْل .....

অর্থ: আর তোমরা খাও এবং পান কর যতক্ষণ না ভোরের কালো রেখা থেকে সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। তারপর রোযা পূর্ন কর রাত পর্যন্ত।

মন্তব্যঃ সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে- তোমরা সোবহে সাদিকের মধ্যে সাহরী খাও। তারপর রোযা পূর্ন কর রাত পর্যন্ত। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা এবং আইয়ামে তাশরীকের তিন দিন সহ মোট ৫ দিন রোযা রাখা হারাম। রামাদান মাস সহ বাকী (৩৬৫-৫=) ৩৬০ দিনের যেকোন দিন রোযা রাখতে হবে কোরআনে বলা উপরোক্ত হুকুম অনুযায়ী। এই কারনে কিভাবে রোযা রাখতে হবে সেই কথা হাদীসে বলা হয়নি। কোরআনে বলা আছে বিধায় রাসুল (সাঃ) সেই কথা হাদীসে পুনরায় উল্লেখ করার প্রযোজন মনে করেননি।

প্রশ্ন-২ঃ কি ভাবে মাস পাব?
উত্তর: রামাদান মাস সহ যেকোন মাস পাওয়ার দুটো নিয়ম আছে:-

ক) কোরআনের নিয়ম।

খ) হাদীসের নিয়ম।

ক) কোরআনে বলা নিয়ম হচ্ছেঃ
হেলালের হিসাব করে রামাদান মাস শুরু এবং শেষ করতে হবে।
সূত্রঃ ৫৫:৫, ৯:৩৬, ২:১৮৯ ইত্যাদি সহ বিভিন্ন আয়াত।

খ) হাদীসে বলা নিয়ম হচ্ছেঃ
১) হেলাল দেখে মাস শুরু করতে হবে।
২) অথবা স্বাক্ষ্য পেলে মাস শুরু করতে হবে।
৩) উপরের কোনটা না হলে মাস ৩০ দিন পুরা করতে হবে।

মন্তব্যঃ শরীয়তের বিধান হচ্ছে যদি কোন বিষয়ে কোরআনে এবং হাদীসে দুই রকমের নির্দেশনা পাওয়া যায়, তবে কোরআনের হুকুম মানতে হবে, হাদীসের হুকুম মানা যাবে না। কিন্তু হাদীসকে বাতিল বলা যাবে না।

উপসংহারঃ মাস শুরুর ব্যাপারে উপরে বর্ণিত দুইটা নিয়ম এবং শরীয়তের বিধান উল্লেখ করা হলো। শরীয়তের বিধান মানতে হলে কোরআনের হুকুম মোতাবেক হেলালের হিসাব করে তৈরী করা "হিজরী ক্যালেন্ডারে" অথবা যেকোন "চান্দ্রপঞ্জীকায়" তারিখ দেখে মাস শুরু করতেই হবে। শরীয়তের এই হুকুম অমান্য করার ক্ষমতা কোন মুসলিমেরই নেই। তাই এর নাম দিয়েছি- "চান্দ্রমাস শুরুর এটমবোম"।

এই একটা হুকুম না মানার কারনে বর্তমানে বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে বিরাট বিশৃংখলা বিরাজ করছে। আমি বাংলাদেশ সরকার সহ দেশবিদেশের সকল দায়িত্বশীল ব্যাক্তিবর্গের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলব আপনারা অনতি বিলম্বে হিজরী ক্যালেন্ডার অথবা যেকোন চান্দ্রপঞ্জীকা দেখে মাস শুরু করুন এবং সকল বিশৃংখলা দূর করুন।

উপরোক্ত এটমবোম পাওয়ার পর সকল নাফরমানের ফন্দিফিকির চিরতরে বিদায় নেবে, ইনশাআল্লাহ। এরপরও যারা বিরোধীতা করবে তাদেরকে মুসলমান বলার কোন সুযোগ নেই।

নিবেদক: ইঞ্জিঃ মোহাম্মদ এনামুল হক।
কোরআন, হাদীস ও জ্যাতির্বিজ্ঞানের ছাত্র।
মহাসচিবঃ হিজরী ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ।
সভাপতিঃ প্রখ্যাত পরমানু বিজ্ঞানী ড. এম. শমশের আলী।

বিষয়: Practical ও Technical এর পার্থক্যটা বুঝতে পারলেই চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে কোথাও কোন বিশৃংখলা থাকবে না, ইনশাআল্লাহ। এটা...
13/07/2025

বিষয়: Practical ও Technical এর পার্থক্যটা বুঝতে পারলেই চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে কোথাও কোন বিশৃংখলা থাকবে না, ইনশাআল্লাহ। এটার নাম “চান্দ্রমাস শুরুর মিসাইল"।

১। সংক্ষিপ্ত কথায়- Practical হচ্ছে ব্যবহারিক উপায়, আর Technical হচ্ছে কারিগরী উপায়। এই দুটোই হচ্ছে উপায় বা অবলম্বন মাত্র। শরীয়তের হুকুম পালনে এই দুটো উপায় শুধু সহায়তা দান করে থাকে- শরীয়তের হুকুম বদলাতে পারে না।
অতীতে বহু কাজ আমরা ব্যবহারিক বা Practical উপায়ে সম্পন্ন করেছি। কিন্তু কারিগরী বিদ্যা বা Technical knowledge এর উন্নয়নের কারনে বর্তমানে একই কাজ আমরা অতি সহজে কারিগরী বা Technical উপায়ে করে যাচ্ছি।

২। যেমন আমরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ স্বলাত আদায় করে থাকি। স্বলাত ফরজ হয় ওয়াক্ত হলে। ওয়াক্ত না পেলে স্বলাত আদায় করা যায় না। এখানে "ওয়াক্ত পাওয়া" এবং "স্বলাত আদায় করা" -সম্পূর্ন ভাবে দুটো আলাদা কাজ ও বিষয়। ওয়াক্ত পাওয়া প্রথম কাজ আর স্বলাত আদায় করা দ্বিতীয় কাজ। যদিও দুটো কাজই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু একটার সাথে আরেকটাকে গুলিয়ে ফেলার কোন সুযোগ নেই।

৩। একই ভাবে 'মাস পাওয়া' এবং 'রোযা রাখা' সম্পূর্ন ভাবে দুটো আলাদা কাজ এবং আলাদা হুকুম। 'মাস পাওয়ার' সাথে 'হেলালের' সম্পর্ক আর 'রোযা রাখার' সাথে 'সূর্যের' সম্পর্ক। হেলাল দিয়ে মাস শুরু করতে হয়। আর মাস পাওয়া গেলে সূর্য দেখে প্রতিদিন রোযা রাখতে হয়। অতএব একটার সাথে আরেকটাকে গুলিয়ে ফেলার কোন সুযোগ নেই। কোরআনের হুকুমে (২:১৮৭) প্রতিদিন সূর্য দেখে রোযা রাখা নিয়ে পৃথিবীর কোথাও কোন মতপার্থক্য নেই। মতপার্থক্য শুধু চান্দ্রমাস শুরু নিয়ে।

৪। কারন অধিকাংশ আলেম হাদীসের হুকুম মেনে অতীতের Practical নিয়ম অনুযায়ী খালী চোখে হেলাল দেখে চান্দ্রমাস শুরু করার পক্ষে। অথচ অতীতের বহু কাজ তাঁরা বর্তমানে আধুনিক বা Technical উপায়ে করে থাকেন। এই বিষয়ে অতীত এবং বর্তমান নিয়মের বহু উদাহরন নীচে টেবিল বা ছক আকারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পুরাতন উপায়ের পরিবর্তে আধুনিক উপায় অবলম্বনের কারনে আসল কাজ কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না; বরং আরো সুন্দর ও নির্ভুল ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।

৫। চান্দ্রমাস শুরুর আধুনিক বা Technical নিয়ম অর্থাৎ হিজরী ক্যালেন্ডার বা চান্দ্রপঞ্জীকা অনুসরনের বিষয়টা নিয়ে আলেমগন যথেষ্ট দ্বিধাদ্বীত। অতীতে ঘড়ি এবং সৌরক্যালেন্ডার নিয়েও তাঁদের সন্দেহ ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা আর নেই। তাই হিজরী ক্যালেন্ডার বা চান্দ্রপঞ্জীকার বিষয়টা বুঝে আসলে সেটাও তাঁরা অনুসরন করবেন, এতে কোনই সন্দেহ নেই। আমি মনে করি নীচে বর্নীত ছকটা দেখলেই তাঁদের সন্দেহ সম্পূর্ন ভাবে দূর হয়ে যাবে।

৬। নিচের ছকে অতীতে বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজ অথবা ধর্মীয় কাজ কিভাবে Practical উপায়ে করা হতো এবং একই কাজ বর্তমানে কিভাবে Technical উপায়ে করা হচ্ছে- তা পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। উপায় বা অবলম্বনের কারনে কর্তব্য কাজ বা মূল এবাদতের হুকুম কোন ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না। বরং কর্তব্য কাজ সম্পাদনে সহায়ক হচ্ছে। তাই হিজরী ক্যালেন্ডার অথবা যেকোন চান্দ্রপঞ্জীকা দেখে চান্দ্রমাস শুরু করে আমরা নির্ভুল ভাবে সবাই রোযা/ঈদ পালন করতে পারি।

৭। কারন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন- "সূর্য ও চন্দ্র (আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত) হেসাব মতন চলে" (৫৫:৫)। আবার বলেছেন- "হে মানবজাতি (সকল ধর্মের মানুষ) তোমরা ১২টা হেলাল দিয়ে ১২টা মাস শুরু কর" (২:১৮৯)। তাই হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্ঠানদের চান্দ্রপঞ্জীকা এবং সকল ইসলামিক হিজরী ক্যালেন্ডার হুবহু একই রকম। এমনকি সকল পঞ্জীকা ও ক্যালেন্ডারে একই তারিখে পূর্নিমাও হয়। কারন চাঁদ একটা নীরেট পাথরের গোলক, এটা কোন ধর্ম মানে না। তাই সবাইকে একই হিসাব দেয়।

৮। যাঁরা একদিন আগে বা পরে মাস শুরু করেন তাঁরা দেখতে ও হিসাব করতে ভুল করেন। এই ভুল হিসাবের জন্য তাঁরাই দ্বায়ী-চাঁদ না। কারন আল্লাহর দেওয়া হিসাব সন্দেহাতীত ভাবে নির্ভুল। তাই অহেতুক চাঁদকে দোষ না দিয়ে, নিজেদের ভুল সংশোধন করুন। এই একটা কারনেই মাস শুরু নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিরাট বিশৃংখলা বিরাজ করছে। এটা দূর হয়ে গেলেই সকল মতপার্থক্যও চিরতরে বিদায় নিয়ে নেবে, ইনশাআল্লাহ। এই কারনে এর নাম রেখেছি ""চান্দ্রমাস শুরুর মিসাইল"।

৯। এটা হারজিতের কোন বিষয়ই না বরং সঠিকটা জানা, বুঝা এবং মানার বিষয়। উপরে বর্ণিত এতসব কাজের বেলায় যখন আধুনিক বা Technical নিয়ম মানছেন; তখন চান্দ্রমাসের শুরু নিযে অযথা কেন বিতন্ডা করবেন? তাই জোড় হাতে অনুরোধ করছি, দয়াকরে সবাই হিজরী ক্যালেন্ডার অথবা যেকোন চান্দ্রপঞ্জীকা দেখে নির্ভুল ভাবে চান্দ্রমাস শুরু করুন এবং সঠিক ভাবে রোযা/ঈদ পালন করুন। অহেতুক নিজেদের ফরজ ও ওয়াজীব এবাদত আর নষ্ট করবেন না।

নিবেদকঃ ইন্জিঃ মোহাম্মদ এনামুল হক।
কোরআন, হাদীস ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র।
মহাসচিব: হিজরী ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ।
সভাপতিঃ প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. শমশের আলী।

Address

Blaine

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Engr Mohammad Enamul Huq posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share