01/08/2025
০. আল বালাদ
لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡ کَبَدٍ ؕ
আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি পরিশ্রমের ভেতর (৩)
তাফসীরঃ
৩. চতুর্থ আয়াতের এ কথাটি বলার জন্য আগের শপথগুলো করা হয়েছে। বোঝানো হচ্ছে যে, দুনিয়ায় মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে শ্রমনির্ভর করে। তাকে কোনও না কোনও পরিশ্রম করতেই হয়। যত বড় রাজা-বাদশাহ হোক বা হোক অজস্র সম্পদের মালিক, জীবন রক্ষার জন্য তাকে অবশ্যই এক রকমের না এক রকমের পরিশ্রম স্বীকার করতেই হবে। কেউ যদি দুনিয়ায় সম্পূর্ণ বিনা মেহনতে বেঁচে থাকতে চায়, তবে সেটা তার অসার কল্পনা। এটা কখনও সম্ভব নয়। হাঁ পরিপূর্ণ আরামের জীবন হল জান্নাতের জীবন, যা দুনিয়ায় কৃত শ্রম-সাধনার বদৌলতে লাভ হবে। আয়াতে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, দুনিয়ায় কাউকে যখন কোন কষ্ট-ক্লেশের সম্মুখীন হতে হয়, তখন সে যেন এই চরম সত্য চিন্তা করে। বিশেষত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরামকে মক্কা মুকাররমায় যে দুঃখ-কষ্ট পোহাতে হচ্ছিল, তজ্জন্য এ আয়াতে তাদেরকে সান্তনাও দান করা হয়েছে। এ কথাটি বলার জন্য প্রথমে মক্কা মুকাররমার শপথ করা হয়েছে সম্ভবত এ কারণে যে, এ নগরকে আল্লাহ তাআলা যদিও দুনিয়ার সর্বাপেক্ষা বেশি সম্মানিত স্থান বানিয়েছেন, কিন্তু তার এ সম্মান ও মর্যাদা আপনা-আপনিই সৃষ্টি হয়ে যায়নি। এর জন্যও এখানে প্রচুর শ্রম ব্যয় করতে হয়েছে। তার এ মর্যাদা দ্বারা উপকৃত হওয়ার জন্য আজও মানুষকে মেহনত করতে হয়। তারপর বিশেষভাবে এ নগরে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের কথা উল্লেখ করে সম্ভবত ইশারা করা হয়েছে যে, তিনি শ্রেষ্ঠতম নবী ও শ্রেষ্ঠতম নগরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও যখন কষ্ট-ক্লেশ তাকেও স্বীকার করতে হয়েছে, তখন ষোল আনা আরামের জীবন কে আশা করতে পারে? অতঃপর হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও তার সন্তানদের শপথ করার মধ্যে এই ইঙ্গিত রয়েছে যে, তোমরা গোটা মানবেতিহাসের প্রতি লক্ষ্য করে দেখ, সর্বত্র এই একই চিত্র দেখতে পাবে। বুঝতে পারবে, মানুষের জীবনটাই শ্রম-নির্ভর ও ক্লেশপূর্ণ।