12/15/2025
মিশিগানেও কালো জাদুর আতঙ্ক : সাহায্য চাইছে প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার
সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয়েও পিছু ছাড়ছে না কালো জাদু। সম্প্রতি মিশিগান বাংলাদেশি কমিউনিটি হেল্প পেইজে এক পরিবার তাদের কালো জাদুর শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে সাহায্য কামনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে প্রবাসী কমিউনিটিতে ব্যাপক আলোচনা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
জাদুটোনা এগুলো নতুন কিছু নয়, বরং যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একশ্রেণির নিকৃষ্ট লোক এর সঙ্গে জড়িত ছিল এবং রয়েছে। বিজ্ঞানের যুগেও কিছু অসাধু তান্ত্রিক ও তথাকথিত সাধকের অপকর্মের কারণে কালো জাদুর প্রভাব বাংলাদেশে এখনো প্রবল। এই ধরনের চর্চা দেশের সীমা পেরিয়ে কি (?) প্রবাসেও ছড়িয়ে পড়ছে।
তাবিজ, কবজ এবং জাদু টোনার প্রভাবে সংশ্লিষ্ট পরিবারের অশান্তি, সম্পর্কের অবনতি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, হঠাৎ অসুস্থতা, চিকিৎসায় ফল না আসা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, এমনকি অকাল মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
জাদু বা টোনার চর্চা কোনোভাবেই শুভ নয়। এটি একটি ঘৃণ্য ও পাপাচারমূলক কাজ, যা মানুষের জীবনে শুধু ধ্বংসই ডেকে আনে। এসব তান্ত্রিক সাধকরা মানুষকে বিভ্রান্ত করে সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে সরিয়ে নেয়। ভুক্তভোগীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় দেখা যায় শরীর কালচে রঙ ধারণ করছে, নখ কালো বা ধূসর হয়ে যাচ্ছে, ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠছে, এবং খাদ্য গ্রহণে অনীহা জন্ম নিচ্ছে। এসবই কালো জাদুর কু-প্রভাবের বহিঃপ্রকাশ।
কালো জাদুর মূল লক্ষ্য মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করা। জাদুকরের কারসাজিতে বাস্তবতা অনেক সময় বিকৃত রূপে উপস্থাপিত হয়, যেন ভালো কিছুই খারাপ মনে হয়, আর খারাপ জিনিসটাই হয়ে ওঠে কাঙ্ক্ষিত।
এমন ভয়াবহ এক ধ্বংসের পথে যারা নিজেকে নিয়োজিত করে, কিংবা যারা এই কাজে বিশ্বাস স্থাপন করে বা আশ্রয় নেয়, তারা চরমভাবে আত্মিক, সামাজিক এবং নৈতিক অবক্ষয়ের পথে চলেছে। যারা একে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে, তারা নিঃসন্দেহে সমাজের জন্য বিপজ্জনক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মহাপাপী।
অনেকের মতে, ব্যক্তিগত ব্যর্থতা বা মানসিক দুর্বলতা থেকে মানুষ অলৌকিক ব্যাখ্যার দিকে ঝুঁকে পড়ে। এ ধরনের বিশ্বাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারিবারিক সহযোগিতা, মানসিক পরামর্শ এবং সামাজিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।