24/09/2025
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ২২
ফরিদপুরে মাহিন্দ্রাস্ট্যান্ডে হামলা করে অন্তত ১৬টি মাহিন্দ্রার কাচ ভাঙচুর করা হয়।।।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায়
ফরিদপুরে মাহিন্দ্রাস্ট্যান্ডে হামলা করে অন্তত ১৬টি মাহিন্দ্রার কাচ ভাঙচুর করা হয়।।। মঙ্গলবার বিকেলর ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায়ছবি।।। যুবদলের সহসভাপতি মাসুদুর রহমানের অনুসারীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।।।
হামলাকারীরা অন্তত ১৬টি মাহিন্দ্রার কাচ ভাঙচুর করেন। এ সময় ১০ জন মাহিন্দ্রাশ্রমিক আহত হন। এর মধ্যে চারজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রাইফুল আলম, মামুন মণ্ডল, সলেমান শেখ ও মোতালেব মল্লিক।
এলাকাবাসী ও মাহিন্দ্রাচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের হাজরাতলা মোড়ে সালথাগামী মাহিন্দ্রাস্ট্যান্ড এবং ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে কানাইপুরগামী মাহিন্দ্রাস্ট্যান্ড অবস্থিত। সালথাগামী গাড়ি কানাইপুর স্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়াতে পারে না। গতকাল যানজটের কারণে সালথাগামী একটি মাহিন্দ্রা সেখানে আটকে পড়লে ওই চালককে মারধর করে কানাইপুর স্ট্যান্ডে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে শাহীন হাওলাদারসহ ২৫ থেকে ৩০ জন বহিরাগত ওই স্ট্যান্ডে গিয়ে শ্রমিকদের নির্বিচারে পিটিয়ে আহত করেন এবং গাড়িগুলো ভাঙচুর করেন।
মাহিন্দ্রাশ্রমিকদের অভিযোগ, যুবদল নেতা মাসুদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহীন হাওলাদারের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। তাঁরা বলেন, শাহীনসহ কয়েকজন যুবক কয়েক মাস ধরে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে থাকা স্ট্যান্ড দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। এ সময় তারা প্রতিটি মাহিন্দ্রা থেকে জোর করে ৫০ টাকা করে চাঁদা নিতেন। সম্প্রতি চালকেরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
মাহিন্দ্রাচালক লিয়াকত আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে যুবদল নেতা মাসুদুর রহমান ও শাহীন হাওলাদার স্ট্যান্ড দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা জোর করে টাকা নেয়। শ্রমিকেরা চাঁদা দিতে রাজি হয়নি। এ জন্যই প্রতিশোধ নিতে হামলা চালানো হয়েছে।’
মাহিন্দ্রাচালক রানা সরদার বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বেশ কিছু ব্যক্তি দেশি অস্ত্র নিয়ে স্ট্যান্ডে হামলা চালায়। তারা নির্বিচারে গাড়ি ভাঙচুর করে। বাধা দিলে আমাদের ১০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।’
হামলায় ১০ জন মাহিন্দ্রাশ্রমিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
হামলায় ১০ জন মাহিন্দ্রাশ্রমিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেছবি: প্রথম আলো
এ বিষয়ে শাহীন হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে জেলা যুবদলের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমি শ্রমিক রাজনীতি করি না। শ্রমিকদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে জড়াচ্ছে।’ শাহীন তাঁর ক্যাডার নন দাবি করে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমি পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হব। এ জন্য একটি পক্ষ আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।’
জেলা মাহিন্দ্রা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমাদের ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে মাসুদুর রহমান ও তাঁর অনুসারীরা স্ট্যান্ড দখলের চেষ্টা করছে। আজকের (গতকাল) হামলাও সে পরিকল্পনারই অংশ।’
জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কেউ এমন ঘটনা ঘটালে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।
সূত্রঃ প্রথম আলোর খবর