সুফিবাদের প্রেম

  • Home
  • সুফিবাদের প্রেম

সুফিবাদের প্রেম সুফিবাদের মূল বিষয়বস্তু'ই হলো আত্মদর্শন, অর্থাৎ নিজেকে চেনা,নিজেকে জানা।
#সুফিবাদের_প্রেম
(2)

14/10/2025

লালন সাঁই জির। #লালন_আখড়া
#লালন_আখড়া #লালন
#বাব_আজম_শাহ্ #আজমির_তাকের #সুফিবাদের_প্রেম #মাওলানা_জালাল_উদ্দিন_রুমি #সৈয়দ_তারিক #বাবা_জাহাঙ্গীর

11/10/2025

ধ্যান কি? হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কেনো ধ্যান করলেন?
#সুফিবাদের_প্রেম #আজমির_তাকের #বাব_আজম_শাহ্ #বাবা_জাহাঙ্গীর #মাওলানা_জালাল_উদ্দিন_রুমি #লালন_আখড়া

11/10/2025

#সুফিবাদের_প্রেম
#মাওলানা_জালাল_উদ্দিন_রুমি
#লালন_আখড়া #বাবা_জাহাঙ্গীর
#বাব_আজম_শাহ্ #মাইজভান্ডার
#আজমির_তাকের

সুফিবাদ কী? বাংলাদেশে সুফিবাদিদের অবস্থান কোথায়?ফারদিন ফেরদৌস কবি সৈয়দ তারিক সুফিবাদি বাবা জাহাঙ্গীর আল সুরেশ্বরীর অনু...
07/10/2025

সুফিবাদ কী?
বাংলাদেশে সুফিবাদিদের অবস্থান কোথায়?

ফারদিন ফেরদৌস

কবি সৈয়দ তারিক সুফিবাদি বাবা জাহাঙ্গীর আল সুরেশ্বরীর অনুসারী। তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈরের রশিদপুর গ্রামে 'প্রেমাঙ্গন' নামে একটি সুফিবাদ চর্চাকেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। ভক্ত আশেকানরাও সেখানে আসতে শুরু করেন। কিন্তু চলতি সপ্তাহে ফেসবুকজুড়ে তার সুফিবাদ চর্চাকেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণায় ওই আশ্রমটি এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এর দায় যতটা না সাধারণ ধর্মপ্রাণ গ্রামবাসীর, তার অধিক দায় স্থানীয় সাংবাদিকদের -যারা সুফিবাদ সম্পর্কে একেবারেই বেখেয়াল এবং সাংবাদিকতায় ন্যূনতম নর্মস ও ইথিক্স চর্চা সম্পর্কে অজ্ঞাত। এতে সাংবাদিকদের অক্ষমতা যতটা না দায়ি, তারও অনেক বেশি দায় হাউজগুলোর -যারা তাদের কর্মীদেরকে সাংবাদিকতার দায় ও দরদ বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ডের প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা দেয় না।

সমাজে চিরায়ত হারমনি নষ্ট করা, মব উসকে দেয়া, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি করা এবং বহুত্ববাদের বিরোধিতা করা সাংবাদিকের কাজ নয়। সর্বোচ্চ সহনশীলতা ও মানবিকতা সাংবাদিককেই দেখাতে হয় কারণ তাদের একটা ফেসবুক পোস্টের সিঙ্গেল শব্দও বিশ্বাস করে আমজনতা অনুসরণ করে। আমাদেরকে মানতে হবে সমাজে সবাই একই চিন্তাধারার মানুষ হবে না। সবার নিজস্ব মতাদর্শ ও বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকাটা প্রতিটি দেশেরই সংবিধান স্বীকৃত অধিকার।

'প্রেমাঙ্গন এখন হুমকির মুখে' শিরোনামে সৈয়দ তারিক গতকাল নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন,
'তারা দোষ খুঁজে পেল 'প্রেমাঙ্গন' নামটির মধ্যে। প্রেম বলতে তারা বুঝল কেবল যুবক-যুবতীদের লীলাখেলা। সুতরাং তারা ধরে নিল, এখানে নিশ্চয়ই ওইসব লীলাই চলে। কিন্তু প্রেমাঙ্গনে এসে তারা আপত্তিকর কিছু খুঁজে পায়নি। তখন ঢুকল আমার ফেসবুকের প্রোফাইলে। সেখানে তারা পেয়ে গেল লাগসই উপকরণ। অনেক বছর ধরে নানা বয়সের নানা মেয়েদের সাথে ছবি তুলে মজা করে ফেসবুকে পোস্ট দিই। কোনো পাপারাজ্জি নয়, আমি নিজেই দেই। সেইসব ছবি সংগ্রহ করে প্রেমাঙ্গনের সাইনবোর্ডের সাথে ওইসব ছবি ব্যবহার করে ভণ্ডপীরের বিকট এক ভাবমূর্তি তৈরি করে ভাইরাল করে ফেলল। মব তৈরির আয়োজনও মোটামুটি প্রস্তুত। এখন শুধু সদলবলে তৌহিদি জজবা নিয়ে হামলে পড়াই বাকি।'

গতকাল এসব বিষয়ে তারিক ভাইয়ের সাথে কথা হলে তাঁকে আইনি সুরক্ষা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আজ দেখলাম বেশ কয়েকজন সাংবাদিক যারা আমারই স্নেহভাজন সহকর্মী ওই সুফিকেন্দ্র থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচার করছেন। কার্যত এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আদৌ কোনো ইতিবাচক ফলাফল নাই। তবে সবার আগে আমরা সুফিবাদ বিষয়ে খানিকটা পাঠ গ্রহণ করতে পারি।

সুফিবাদ চর্চা বলতে বোঝায় -নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার এক নিরব, অন্তর্মুখী ও ভালোবাসাভিত্তিক সাধনা। এটি কোনো আলাদা ধর্ম বা উপধর্ম নয়, বরং ইসলামের গভীরতম আধ্যাত্মিক অনুশীলন। সুফিবাদ চর্চার মূল লক্ষ্য হলো বাহ্যিক আচারের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্তরের সত্য ও ঈশ্বর-চেতনা আবিষ্কার করা।

সুফিবাদিরা বিশ্বাস করেন, মানুষের ভেতরে এক divine spark বা ঈশ্বরীয় সত্তা আছে; সেই সত্তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাই আধ্যাত্মিক মুক্তি। এজন্য তাঁরা নিয়মিত জিকির (আল্লাহ স্মরণ), মুরাকাবা (ধ্যান), মুজাহাদা (আত্মসংযম), খালওয়া (নিঃসঙ্গ ধ্যান) ও সেবা বা মানবপ্রেমের অনুশীলন করেন। সুফিবাদ চর্চা মানে নিজের অহং, লোভ, রাগ, হিংসা, স্বার্থপরতা ইত্যাদি পরিত্যাগ করে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা -যাকে বলা হয় তাজকিয়াতুন নাফস।

এই চর্চা কেবল ধর্মীয় আচার নয়; এটি জীবনের এক পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর -যেখানে মানুষ নিজেকে জানে, অন্যকে ভালোবাসে এবং সৃষ্টির প্রতিটি উপাদানে স্রষ্টার উপস্থিতি অনুভব করে। সংক্ষেপে, সুফিবাদ চর্চা হলো জ্ঞান ও প্রেমের সংমিশ্রণে আত্মার ঈশ্বরমুখী যাত্রা। সুফিবাদিরা সর্বধর্মের মানুষের মধ্যে সমন্বয়বাদে কাজ করে।

ইসলামী সুফিবাদে নানা যুগে যেসব মনীষী আত্মিক ও দার্শনিক চিন্তায় প্রভাব রেখেছেন তাঁদের মধ্যে হাসান আল-বাসরি নৈতিক আত্মসংযম ও তাওবার শিক্ষা দেন, রাবেয়া আল-আদাবিয়া প্রেমকে ঈশ্বরপ্রাপ্তির একমাত্র পথ হিসেবে তুলে ধরেন, আল-হাল্লাজ “আনা আল-হক্ক” উক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মার ঐক্য ঘোষণা করেন, আল-গাজ্জালি যুক্তিবাদ ও আত্মিক অভিজ্ঞতার মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটিয়ে সুফিবাদকে ধর্মতত্ত্বের মূলধারায় আনেন, ইবন আরাবি “ওয়াহদাতুল উজুদ” তত্ত্বে সমগ্র সৃষ্টিকে ঈশ্বরের প্রকাশরূপে ব্যাখ্যা করেন, জালালউদ্দিন রুমি প্রেম ও মানবতার মাধ্যমে ঈশ্বর-চেতনা উপলব্ধির পথ দেখান, আর আবদুল কাদির জিলানি সুফিবাদকে বাস্তব জীবনে মানবসেবা ও নৈতিকতার অনুশীলনে রূপ দেন। এই ধারায় সুফিবাদ একদিকে আত্মার পরিশুদ্ধি ও ঈশ্বরমুখী প্রেমের সাধনা, অন্যদিকে মানবিকতা, সহনশীলতা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সমন্বিত দর্শনে পরিণত হয়।

ইমাম গাজ্জালি, আল-ফারাবি ও ইবনেসিনা ইসলামী দর্শনের তিন ভিন্ন অথচ পরস্পর-সম্পর্কিত ধারা প্রতিনিধিত্ব করেন। আল-ফারাবি ছিলেন যুক্তিনির্ভর দার্শনিক, যিনি গ্রিক দর্শনকে ইসলামি চিন্তায় যুক্ত করে নবী (সা.) ও দার্শনিকের জ্ঞানকে একই সত্যের ভিন্ন রূপ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। ইবনেসিনা চিকিৎসক ও অধিবিদ হিসেবে আত্মা ও সৃষ্টির উৎস অন্বেষণ করেন; তাঁর “ওয়াজিবুল উজুদ” ধারণা সুফি চিন্তার সঙ্গে গভীরভাবে মেলে, যেখানে আত্মা ঈশ্বরের দিকে ফিরে যেতে চায়। অন্যদিকে ইমাম গাজ্জালি যুক্তির সীমা অতিক্রম করে হৃদয়ের অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেন, দর্শনের ত্রুটি দেখিয়ে সুফিবাদকে ইসলামি ধর্মতত্ত্বের মূলধারায় প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে আল-ফারাবির যুক্তি, ইবনেসিনার আত্মদর্শন ও গাজ্জালির আধ্যাত্মিক উপলব্ধি মিলেই ইসলামি চিন্তায় বুদ্ধি ও আত্মার সমন্বয়ে এক পূর্ণাঙ্গ দার্শনিক ও সুফি ঐতিহ্যের জন্ম দেয়।

সাধারণ মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও আধ্যাত্মিকতা চর্চায় সুফিবাদের গুরুত্ব অত্যন্ত গভীর ও মানবিক। সুফিবাদ মূলত বাহ্যিক আচার নয়, বরং অন্তরের পরিশুদ্ধি, প্রেম, সহমর্মিতা ও সত্য-সন্ধানের শিক্ষা দেয়। এটি মানুষকে শেখায় -জ্ঞান কেবল পুস্তক বা বুদ্ধিতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং হৃদয়ের জাগরণে তার পূর্ণতা। সুফিবাদ মানুষকে নিজেকে জানতে, অহং ত্যাগ করতে এবং অন্যের মধ্যে ঈশ্বরীয় সত্তাকে দেখতে শেখায়। ফলে সাধারণ মানুষ যুক্তিবোধ ও আত্মানুশাসনের মাধ্যমে নিজের চিন্তা, নৈতিকতা ও আত্মিক উপলব্ধিকে উন্নত করতে পারে। আবার এটি সমাজে সহনশীলতা, সাম্য, মানবপ্রেম ও সংলাপের সংস্কৃতি গড়ে তোলে। তাই বলা যায়, সুফিবাদ মানুষের ভেতরের ও বাইরের জগত -দুটোকেই আলোকিত করে; বুদ্ধিবৃত্তিকে গভীরতর করে তোলে হৃদয়ের জ্ঞানে, আর আধ্যাত্মিকতাকে দেয় মানবিকতার মৃদু ও মর্মস্পর্শী রূপ।

তবে আজকের বাংলাদেশে মূলধারার আলেমরা সুফিবাদকে ভয় পান, কারণ এটি ধর্মকে ক্ষমতার কাঠামো তথা রাজনীতি থেকে সরিয়ে অভিজ্ঞতা ও ভালোবাসার জগতে নিয়ে যায়। সুফিবাদ বলে -“ঈশ্বরকে জানতে হলে, নিয়ম নয় -প্রেম ও সত্যের পথে হাঁটতে হবে।” এবং এই সত্যই অনেক সময় প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় কর্তৃত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে ওঠে।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সুফিবাদিরা বিপাকে আছেন মূলত ধর্মীয় গোঁড়ামি, রাজনৈতিক ইসলাম ও চরম দক্ষিণপন্থী ও'য়াহাবি-সা'লাফি মতবাদের উত্থানের কারণে। সুফিবাদ যে মানবপ্রেম, সহনশীলতা ও আধ্যাত্মিক স্বাধীনতার কথা বলে, তা মূলধারার রক্ষণশীল আলেমদের ক্ষমতা ও ব্যাখ্যাভিত্তিক ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে। ফলে সুফিদের মাজার, দরগাহ ও চর্চা অনেক ক্ষেত্রে ‘বিদআত’ বা ‘অবিশুদ্ধ ইসলাম’ বলে আখ্যা পায়। তাছাড়া ধর্মকে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার বানানো শক্তিগুলো সুফিবাদের অন্তর্মুখী, অরাজনৈতিক চরিত্রকে তাদের স্বার্থবিরোধী মনে করে। তাই আজ সুফিবাদ শুধু ভাবধারার নয়, নিরাপত্তা ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকেও চাপে আছে।

আমরা কেউই কোনোপক্ষকেই ভালো বা মন্দের নিরিখে বিচার করবার অধিকার রাখি না। তবে মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় কানুন ও এর প্রায়োগিক দিককে শক্তিশালী করবার দাবি জানাতে পারি। সৈয়দ তারিকের মতো সুফিবাদিরা যদি দেশের প্রচলিত আইনের ব্যত্যয় ঘটান -তাঁর বিরুদ্ধে যথোচিত নিয়ম প্রযুক্ত হবে -এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের সামষ্টিক ভুল ও ভ্রান্তির জন্য একজন মানুষও যাতে বিচারবহির্ভূত সাজা না পান -মানবতাবাদি সভ্য সমাজ বিনির্মাণের জন্যই এটা নিশ্চিত করা জরুরি।

লেখক: সাংবাদিক
৭ অক্টোবর ২০২৫
#সুফিবাদের_প্রেম

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when সুফিবাদের প্রেম posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share