Marufa Afrin

Marufa Afrin ~কল্পনার জগতে হারিয়ে যাওয়া এক
উপন্যাস প্রেমি~💌🎀🪷
(14)

🫵??
30/07/2025

🫵??

26/07/2025

~তোমরা কোন বংশের..???

 #অণুগল্প:  #অভীশপ্ত_জুলাই✍️ লেখনীতে:  ⛔ অনুপ্রাণিত হয়ে কিংবা গল্পের কোনো অংশ কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ❌---~মাসটি ছিলো জ...
21/07/2025

#অণুগল্প: #অভীশপ্ত_জুলাই

✍️ লেখনীতে:
⛔ অনুপ্রাণিত হয়ে কিংবা গল্পের কোনো অংশ কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ❌

---

~মাসটি ছিলো জুলাই...
📅 ২১ জুলাই ২০২৫

সে দিনের দুপুরটা ছিলো অন্য সব দিনের চেয়ে ভিন্ন...
যেনো হঠাৎ থমকে যাওয়া নিস্তব্ধতায় ভরা এক অস্বাভাবিক দুপুর।

উত্তরার আকাশে সূর্য তখনও যেনো রোষে ফেটে পরছে, উত্তপ্ত তাপে পুড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসের প্রতিটি কণা।
অথচ সেই গরম বাতাসেই যেনো ভেসে ছিলো এক অদৃশ্য বিপর্যয়ের পূর্বাভাস—যা কেউই টের পায়নি, কেউই আঁচ করতে পারেনি তখন ও।

কেউ বুঝতে ও পারে নি, এই দিনটি শেষ হবে এতটা নির্মমভাবে—
এক বিভৎস ক্ষতের চিহ্ন রেখে যাবে শত শত হৃদয়ে।

---

মাইলস্টোন স্কুলের প্রাথমিক শ্রেণির ক্লাস তখন শেষ।
ছোট ছোট কোমলমতি শিশুরা বসেছিলো কোচিং ক্লাসে, কেউ টিফিনবক্স থেকে খাবার খাচ্ছিলো,
কেউবা পেন্সিল কামড়াচ্ছিল দাঁতে, কেউ নিঃসাড়ে খাতায় আঁকিবুঁকি করছিলো।

তাদের চোখে ছিলো হাজার ও স্বপ্ন, মুখে নিষ্পাপ হাসি।
তারা জানতো ও না,
এই নিরীহ দুপুরটা অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ছিন্নভিন্ন করে দেবে তাদের গোটা জীবন, তাদের ভবিষ্যৎ।

🕐 সময় তখন প্রায় দুপুর ১:০৬ মিনিট। ( বোধহয়)

হঠাৎ আকাশ কেঁপে উঠলো এক বিকট বিস্ফো*রণের শব্দে।

একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান—
যা, ১৯৭৬ সালের রাশিয়ান মডেলের একটি চাইনিজ রেপ্লিকা।
সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পরলো মাইলস্টোন স্কুলের একেবারে কাছে।

যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পরার আগেই
লৌহবর্ণ আগু*নের পাখি হু হু করে ছুটে গেলো চারিদিকে।

সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে, যেখানে ছোট ছোট প্রাণের গড়ে উঠছিলো ভবিষ্যৎ।

শব্দটা ছিলো বিকট ।
তার উপর হঠাৎ এক ধরনের নিস্তব্ধতা।

একটা গিলে ফেলা নিঃশব্দতা, যেন চিৎকার করার শক্তিটুকু ও গিলে নিয়েছে আ*গুন।

পুরো বিল্ডিং এক মুহূর্তে ভেঙে না পরলে ও
চারদিকে আগু*নের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পরেছিলো—
ধোঁয়া, পোড়া কাগজ, গলিত কাঁচ, আর মানুষের আর্ত*নাদ মিলেমিশে তৈরি করেছিলো এক জীবন্ত ন*রক।

একটি শিশু দরজার ফাঁক দিয়ে র*ক্তমাখা হাত বাড়িয়ে বলছিলো—
"আম্মু... আম্মু..."

কিন্তু সেই মা হয়তো তখন বাড়িতে বসে রান্নায় ব্যস্ত।
এই বুঝি তার ছোট্ট সন্তান বাড়ি ফিরে এসে তার আঁচল ধরে বলবে,
“আম্মু, আমি ক্ষুধার্ত।”

সেই খাবার হয়তো এখনো টেবিলেই রাখা,
কিন্তু যেই প্রাণ টা হাত দিয়ে তুলে খাবার মুখে নেবে,
হয়তো সেই আর নেই...।

---

মুহূর্তেই আ*গুন গ্রাস করলো পুরো ভবন।
যারা একটু আগে ক্লাসে বসে শিখে ছিলল কীভাবে পৃথিবীকে জানতে হয়—
সেই শিশুরাই প্রথমে পু*ড়ে ছাই হয়ে গেলো।

----

ছুটোছুটি শুরু হলো। ফায়ার সার্ভিস খবর পেলে ও উতসুক জনতার ভীড় ঠেলে সময় মতো পৌঁছাতে পারল না।
আশেপাশের মানুষ রা মোবাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে পরলো কেউ ভিডিও করতে, কেউ বা ছবি তুলতে।
পো*ড়া গ*ন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরেছিল,
শিশুদের কা*ন্নার চিৎকারে কেঁপে উঠছিল চারদিক কিন্তু অনেকেরই চোখ ছিলো...

মোবাইলের ক্যামেরায়, চোখে কৌতুহলী আগ্রহ,।
যারা ছিলো হৃদয় না থাকা মানুষ রূপি জা*য়ার।
অবশ্য তারা কেউই সাহায্য করার জন্য ছুটে আসেনি,
তারা ছুটে এসেছিলো ভিডিও করতে, আর ছবি তুলতে।

---


যখন ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা পো*ড়া শরীর নিয়ে টেনে হেঁচড়ে বের হয়ে আসছিল।
পো*ড়া ইউনিফর্ম, গ*লে যাওয়া ত্বক, র*ক্তাক্ত মুখ তারা সাহায্য চাইছিলো, আশেপাশের মানুষেদের কাছে।

কিন্তু তাদের সাহায্য করার জন্য কোনো রিকশা, বা সিএনজি কিছুই মিলছিলো না।

কেউ দেখে ও এড়িয়ে গেছে,
তাদের সাহায্য না করার একটাই কারণ, তারা কেউই “তাদের নিজেদের সন্তান” নয়।

এমনকি যারা সাহায্যের হাত বাড়াতে পারতো, তাদের অনেকেই নিজের প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ও চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো। এগিয়ে আসেনি,

যেনো ওরা শুধু শরীরে নয়, হৃদয় থেকে ও অ*মানুষে পরিনত হয়েছিলো।

একেকটা পো*ড়া মুখ, নিষ্পাপ চাহনি ও যেনো তাদের হৃদয় গলাতে পারেনি।

---

একজন লোক দুইজন বাচ্চাকে বের করে এনে ছিলেন তারা তখনো বেঁচে ছিলল,
কিন্তু শরীরের অনেকটা অংশ পু*ড়ে গিয়ে ছিলো। তিনি দৌড়ে গিয়েছিলেন উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তায় একটি সিএনজি ও থামেনি।

শেষে একটি যা থামে,, তা ও গুনতে হয়েছে এক হাজার টাকার ভাড়া।

হ্যাঁ, মাইলস্টোন কলেজ থেকে আধুনিক হাসপাতাল পর্যন্ত, যেতে মাত্র কয়েক কিলোমিটারের পথ,
অথচ আজ জীবন বাঁচানোর সেই পথ হয়ে উঠেছে লোভের এক সিঁড়ি।

এমন কি উত্তরার, উত্তর মেট্রোর নিচে থেকে ও মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে একটি রিকশা ও সহজে পাওয়া যায় নি।
যে রিকশা টা শেষমেশ রাজি হলো,
সে ও ভাড়া চেয়ে বসলো একশ টাকা।

এই শিশুদের পো*ড়া শরীর তখনো ছটফট করছিল, কষ্টে মুখ বিকৃত হয়ে যাচ্ছিল।
আর আমরা,,?
আমরা শুধু তাকিয়ে দেখছিলাম।

এই শহরে উত্তরায় কোনো বার্ণ ইউনিট নেই।
পু*ড়ে যাওয়া শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা দেয়া তো দূরের কথা, তাদের গায়ে প্রাথমিক স্যালাইন দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিলো না আশপাশে।

এমন কি মাইলস্টোন কলেজের ক্যান্টিনে,
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একটু পানি খেতে চেয়েছিল, সেখানে তাদের টাকা দিয়ে পানি কিনতে হয়েছে। পরে চাপ প্রয়োগ করলে, শেষেমেশ সেই ক্যান্টিন টাই বন্ধ করে দেয়া হয়। কারণ, “এই পানির টাকা কে দেবে?”

---

আগুন শুধু ভবন নয়—
পুড়ি*য়ে ছিলো এই দেশের মানবিকতা।
পুড়ি*য়ে ছিলো আমাদের বিবেক।

তারপর এলেন রাজনীতিবিদরা—
প্রটোকলের গাড়ি, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন...
সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনার অনুভূতি কী?”

একটি পোড়া শিশুর পাশে দাঁড়িয়ে নেওয়া সেই সাক্ষাৎকার—
ছিলো যেনো আগে থেকেই রচিত চিত্রনাট্যের অংশ।

অথচ যারা সত্যিকারের হাহাকার করে কেঁদেছিলো, তাদের ছায়া পযন্ত কেউ ঠিক করে মাড়ায় নি।

---

সেদিন বিকেলে,
একজন মা হাসপাতালের গেটে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন।
তাঁর ছেলেটি কোচিং ক্লাসে ছিলো।

খবর পেয়ে ছুটে এসেছিলেন,
কিন্তু এখন আর তার ছেলে কে চেনার উপায় নেই—
গ*লে যাওয়া মুখ, পো*ড়া শরীর...

সেই মুখে যেনো নিঃশব্দ এক প্রশ্ন হয়ে রয়ে গেছে..

“আমার সন্তান তো সেদিন শুধু পড়তে গিয়েছিল, ওর কী দোষ ছিল?”

---
এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারবে না।
কারণ, আমরা ব্যস্ত ছিলাম মোবাইল ক্যামেরা ধরায়,

আর অসহায়ের কষ্ট দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ায়।
সেই শিশুদের মাঝে কেউ আমাদের আপন ছিল না—তাই আমরা এমন নির্লিপ্ত থাকতে পেরেছি।

কিন্তু এই দেশ তো ওদের ও ছিলো।
যারা স্কুল পড়তে গিয়ে মনে হাজার হাজার স্বপ্নের রঙ বুনতো,,।

যারা ক্লাসে শেষ বারের মতো হেসে বলেছিল “স্যার, আজকের হোমওয়ার্কটা আমি করিনি, কাল ঠিক করবো”—সেই বাচ্চাগুলো আজ আর নেই।
তারা বেঁচে থাকলে হয়তো একদিন এই দেশের জন্য অনেক কিছুই করতো,।

________________

হাহ্ আপসোস বাঙালি

আজ, আমরা যারা বেঁচে আছি, আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। কারণ, শিশুরা পুড়েছে আমাদের উদাসীনতায়, আমাদের ভণ্ড সমাজ ব্যবস্থায়। আগুন তাদের গায়ে লেগেছিল ঠিকই, কিন্তু পুড়েছে আসলে আমাদের বিবেক।


~সমাপ্ত~


💔 শ্রদ্ধাঞ্জলি:

এই লেখাটি ২১ জুলাই ২০২৫-এর মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘ*টনায় নি*হত ও আ*হত সকল শিশুদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে উৎসর্গ করা হলো।
আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন। আমিন। 🤲

---

📛 কেউ দৃষ্টিকটু চোখে দেখবেন না।
এই লেখা শুধুমাত্র মানবিকতা জাগাতে লেখা।

---

© কপিরাইট সংরক্ষিত।
এই গল্পটি সম্পূর্ণ (আমার) মৌলিক সৃষ্টি।
অনুমতি ছাড়া আংশিক বা পূর্ণ কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তবে চাইলে শেয়ার করতে পারেন মানবিকতা জাগাতে।

গল্প:  #অহংকারের_পরাজয়লেখিকা:  পর্ব : ৫-------সে দিনের পর থেকে তৃষা ভিতরে ভিতরে কিছুটা অস্থির থাকে সব সময় , বিশেষ করে ক্...
16/07/2025

গল্প: #অহংকারের_পরাজয়
লেখিকা:
পর্ব : ৫

-------

সে দিনের পর থেকে তৃষা ভিতরে ভিতরে কিছুটা অস্থির থাকে সব সময় , বিশেষ করে ক্লাস করার সময়।

বইয়ের পাতায় চোখ থাকলে ও মনটা কোথায় যেনো হারিয়ে যায়।
কাকে নিয়ে এতো ভাবছে সে আজকাল ? ঠিক ঠাহর করতে না পারলে ও, তৃষার ভাবনার কেন্দ্র বিন্দুতে এখন এক জনেরই বসবাস, সে আর কেউ না স্বয়ং — রায়হান।

সে স্বীকার করুক আর না করুক, অজান্তেই রায়হান এখন তার কল্পনায় এক বিশাল অংশ দখল করে নিয়েছে।

মাঝে মাঝেই সে ভাবে, রায়হান যদি চশমা না পরতো তখন তাকে চশমা ছাড়া কেমন দেখাতো? হয়তো আরো বেশি হ্যান্ডসাম লাগতো। অথবা, ওর চুল গুলো যদি এভাবে এলো মেলো না রেখে, সুন্দর করে এক সাইডে গুছিয়ে রাখত তাহলে তো নিশ্চিত একে বারে সিনেমার হিরোদের মতো লাগত!

আবার কখনো ভাবতে থাকে , রায়হান যদি একটু ব্র্যান্ডেড ড্রেস পরতো, কিংবা হালকা খয়েরি বা নেভি ব্লু রঙের শার্ট পরতো, ইশ একেবারে নজর কাড়া চেহারা হতো।
এই সব ভাবনা তৃষার মাথায় এখন প্রায়ই ঘুরপাক খায়।
এমন ও হয়, সে রায়হানের হাঁটার ভঙ্গি, হাসির ভঙ্গিমা , চোখের গভীরতা কিংবা তার নির্লিপ্ত চেহারার পেছনে লুকিয়ে থাকা আবেগ খুঁজে বেড়ায়। কখনো নিজের অজান্তেই রায়হানের ফেসবুক প্রোফাইলে ডুকে পরে, পুরনো পোস্ট গুলো দেখে, ছোট ছোট তথ্য খুঁজে বেড়ায়। এমন এক রহস্যময় আকর্ষণ তৈরি হয়েছে তৃষার মনে, যা সে নিজে ও পুরো পুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না।

এই পরিবর্তন শুধু তৃষার মধ্যেই আটকে নেই। তার আশে পাশের মানুষ তার বন্ধুরা ও ব্যাপারটা বুঝে নিয়েছে।
নিহান, রিমি আর স্বর্ণা তারা তিন জনই খেয়াল করেছে তৃষা ইদানীং একটু বেশিই রায়হানকে নিয়ে সিরিয়াস হচ্ছে ।

ক্লাসে ঢুকার পরে ও রায়হান কখন আসে, কোথায় বসে, কী পরে এসেছে, কি করছে — সব কিছুই যেনো তৃষা চোখে চোখে রাখছে আজকাল।

আর শুধু নজরে নজরে রাখছে এতেই থেমে নেই ও , সে রীতিমতো পরিকল্পনা করে এমন জায়গায় বসে। যেনো রায়হান কে স্পষ্ট ভাবে কোনো জড়তা ছাড়াই দেখতে পারে — প্রায় প্রতিদিনই এমন করে ও।

যেমন রায়হান যদি সামনের বেঞ্চে বসে, তাহলে তৃষা ঠিক তার পেছনের সারিতে গিয়ে বসবে । যাতে ক্লাস চলাকালীন সময়ে ও সে রায়হানকে ভালো ভাবে দেখতে পায়। পাশাপাশি বসলে তো সরাসরি ধরা পরে যাওয়ার চান্স থাকে, তাই তৃষার কাছে এইটা অনেক বেশি নিরাপদ এবং কার্যকর উপায়।

কখনো আবার সে ক্লাস শুরুর আগেই এসে রায়হানের পছন্দের জানালার পাশে বসে পড়ে, আর মনে মনে চায়, যেনো হঠাৎ করেই রায়হান এসে তার পাশে বসে। যদি ও সেটা ঘটে না কখনোই। তবে এমন সম্ভাবনা গুলোই যেনো তৃষার মনে এক ধরনের শিহরণ তুলে।

রিমি তো একদিন হেসে হেসে বলেছিল,
“তৃষা তুই কি ক্লাসে পড়তে আসিস, নাকি রায়হানকে দেখতে আসিস?”

তৃষা একটু লাজুক হাসি দিয়ে বলেছিল,
“আরে না না... এমন কিছু না... আসলে হুট করে নজর পরে যায়...”

পাশ থেকে নিহান তখন বলে উঠেছিল,
“আরে থাম থাম...ও কি বলছে হুট করে নাকি রায়হানের দিকে নজর পরে যায়...।
তাহলে এতো দিন ধরে ক্লাস শুরুর আগ থেকেই তৃষার চোখ রায়হানের দিকেই থাকে, এটা বোধহয় আমরা ভুল দেখেছি !”

নিহানের কথা শুনে রিমি আর স্বর্ণা শব্দ করে হেসে পেলে।

তাদের এই সব কথা আর হাসাহাসি শুনে তৃষা একটু রেগে গেলে ও, ভিতরে ভিতরে সে নিজে ও মানতে বাধ্য হচ্ছে ,

হ্যাঁ, সে এখন রায়হানকে একটু বেশিই গুরুত্ব দিচ্ছে। আর এই গুরুত্বটা কেবল এক তরফা নয়, সেটা রায়হান ও বুঝতে পারে।

রায়হান ও খেয়াল করে তৃষা ইদানীং আর তাকে কোনো কটূ কথা বলে না, আগের মতো ছোট করে কথা বলে না, অপমান করে না বরং তাকে এড়িয়ে চলে।

তবে এই এড়িয়ে চলা ও এক ধরনের শান্তি মনে হয় — অন্তত রায়হানের কাছে। সে এখন অন্তত ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারে। তার মনে শান্তি অনুভব হয় আজকাল , কারণ তাকে এখন আর কারো কাছ থেকে বুলির শিকার হতে হয় না।

এই ভাবেই কেটে যায় আর ও কয়েক টা মাস তারপর বছর। সময়ের ঢেউ এসে ধীরে ধীরে মুছে দেয় আগের সব অপমান আর বিদ্বেষ।

এই কয়েক দিনে আরেক টি জিনিস চোখে পরে,,,

রাকিব পুরো পুরি উধা ও হয়ে গেছে! ঐ দিনের ঝামেলার পর তাকে আর ভার্সিটির আশেপাশে দেখা যায় নি,,

আগেকার সময়ের তার সেই জোরগলায় হাসি, অহংকারে ভরা চোখের চাহনি, ক্লাসে ঢুকে মেয়েদের দিকে লালসার দৃষ্টি তে তাকানোর অভ্যেস — সব যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। রাকিব কোথায় গেছে কেউ জানে না, কেউ খোঁজ ও নেয় না। তার অনুপস্থিতি তেই যেনো সবাই শান্তি তে আছে।

ইদানীং তৃষার বন্ধুরা লক্ষ করে,,, তৃষার আচরণ আর পোষাকে ও এসেছে লক্ষণীয় পরিবর্তন।
আগে যেখানে স্লিভলেস টপ আর জিন্স ছিল তৃষার প্রধান পছন্দ,

এখন সেই মেয়েই থ্রি পিস পরে ভার্সিটিতে আসে খুব সাধারণ কিন্তু পরিপাটি ভাবে। চোখে কাজল বা মুখে হালকা মেকআপ থাকে, তবে সেটা এতটাই মৃদু যে দেখলেই মনে হয় — এ যেনো এক শান্ত, পরিণত মেয়ের প্রতিচ্ছবি। তৃষার হাঁটার ভঙ্গিতে এসেছে ধীরতা, কথায় এসেছে কোমলতা। এখন আর সে উঁচু স্বরে কথা বলে না, কাউকে অপমান করে না।

এদিকে নিহানের সঙ্গে রায়হানের বন্ধুত্ব ও দিনে দিনে গভীর হয়। তারা প্রায়ই সময় একসাথে বসে,
এক সঙ্গে লাইব্রেরিতে যায়, মাঝে মাঝে ক্যান্টিনে ও যায় এক সাথে। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে তেমন কথা হয় না রায়হানের ।


আর তৃষার সঙ্গে তো সে এখন ও দূরত্ব বজায় চলে ,

যদি ও সে জানে — তৃষার চোখ আজকাল তার দিকেই বেশি থাকে।

তবে রায়হান নিজে ও যায় না আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে। সে মনে মনে ভয় পায় — যদি আবার আগের মতো অপমানিত হতে হয় তাকে , যদি আবার তৃষার কোনো ফ্রেন্ড এসে ঝামেলা করে বসে।
তাই সে তার নিরপেক্ষ দূরত্ব টাই বজায় রাখে।

--------------

এই তো আজ সকালে ভার্সিটি থেকে ঘোষণা আসে —

সামনের মাসে একটি স্টাডি ট্যুর হবে, দূরের একটি পাহাড়ি এলাকায়। এটা শুনে সবার মধ্যে আনন্দের সঞ্চার হয়। স্যার ক্লাসে এসে একে একে সবার নাম নিচ্ছিলেন। ট্যুরের তালিকা বানাতে হবে, তাই নাম লেখাতে হবে আগে ভাগে। সবাই একে একে নাম বলে যাচ্ছে, আর স্যার তালিকা করছেন। রায়হান এই সব দেখে ও চুপচাপ বসে থাকে।

সে মনে মনে ভাবে , এখন ট্যুরে যাওয়া মানে অনেক টাকা পয়সার ব্যয়। তার পক্ষে এই মুহূর্তে এতো টাকা ব্যয় করা সম্ভব নয়। আশে পাশের ভাড়া বাড়িতে টিউশনি করে যে টাকা টা রোজগার করে, তা দিয়ে মা, আর নিজের খরচ চালাতে হয়। তাই এই মূহুর্তে ট্যুরে গিয়ে বিলাসিতা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।

তৃষা এতোক্ষণ দূর থেকে বসে পর্যবেক্ষণ করছিল সব কিছুই।

স্যার এবার রায়হানের সামনে গিয়ে দাড়ায়, তার নাম তালিকায় উঠানোর জন্য। কিন্তু যখন রায়হান কিছু বলল না, স্যার ও একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন —

“রায়হান, তুমি কি যাবে না ট্যুরে ?”

রায়হান একটু হেসে বলল, “স্যার, পরে অন্য কোনো সময় যাবো এখন যেতে পারবো না, বাসায় মা একা তো তাই...”

এই বলে সে কোনোমতে কথা ঘুড়িয়ে নেয়।

স্যার ও আর বেশি কিছু জিজ্ঞেস করে না...

তবে ‘পরে অন্য সময় যাবো, এই শব্দ টায় যে কত টা অভাবের কষ্ট লুকিয়ে আছে , সেটা তৃষা ভিতরে ভিতরে অনুভব করার চেষ্টা করে। তাতেই যেনো তার ভেতর টা একটু কেঁপে ওঠে।

তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় সে গোপনে রায়হান কে ট্যুরে যেতে সাহায্য করবে, আর যেই ভাবা সেই কাজ,

------------------

লাঞ্চ ব্রেকের সময় সে চুপিচুপি অফিস রুমের দিকে এগিয় যায়। সেখান থেকে স্যারের এক জুনিয়রকে খুঁজে বের করে। তার হাতে সে কিছু অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বলে,
“একটা নাম অ্যাড করে দিতে হবে তোমায়। নাম রায়হান। ও বোধহয় একটু সমস্যায় আছে, তাই টাকা দিতে পারছে না, কিন্তু সবাই যাবে ও না গেলে ওর মন খারাপ হবে।” আর প্লিজ আমার নাম টা যেনো গোপন থাকে। বুঝেছো....

তৃষার এই সব কথা শুনে.. ঐ জুনিয়র ছেলেটা একটু বেশিই অবাক হয়, কারণ রায়হান কে তৃষার করা অপমান কে না দেখেছে ভার্সিটির।
কিন্তু আজ সেই তৃষা নিজেই এসেছে রায়হানের ট্যুরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে।

তৃষা চলে যাওয়ার আগে চোখের ইশারায় বলে যায় , “স্যার যদি জিজ্ঞেস করে তাহলে যেনো বলে, রায়হানের পক্ষ থেকে ওর ফ্রেন্ড নিহান টাকা টা দিয়ে দিয়েছে ।

----------------------------------------------------------

পরের দিন, রায়হান যখন ক্লাসে এসে শুনে তার নামটা ও ট্যুর লিস্টে যোগ হয়েছে, সে ভেবেই পায় না কীভাবে এটা হলো!
প্রথমে ভাবে, হয়তো স্যারের কোনো ভুল হয়েছে। পরে যখন কয়েক জন কে জিজ্ঞেস করে, কিন্তু কারো মুখে সঠিক উত্তর পায় না।

তখন নিহান ওর কাছে এসে কানে কানে বলে,

শোন “টাকা টা তৃষা দিয়েছে , তুই প্লিজ ওকে কিছু জিজ্ঞেস করতে যাস না আবার,, আর আমি যে তোকে এ কথা টা বলেছি এটা যেনো তৃষা না জানে, নাহলে ওর মন খারাপ হবে।”

রায়হান তো এই সব শুনে পুরোপুরি ভাবে স্তব্ধ হয়ে যায়।

আরে এই মেয়েটাই তো তাকে আগের বছর এতো অপমান করেছিল সকলের সামনে !

তবে সেই মেয়েটাই নাকি — কাল গোপনে তার নাম ট্যুরে যাওয়ার লিস্টে লিখিয়ে দিয়েছে, সঙ্গে টাকা পর্যন্ত দিয়েছে!

তাও এমন ভাবে যেনো তার সম্মান অক্ষুণ্ন থাকে। এবং এতে কোনো স্বার্থ নেই, কোনো অহংকার নেই। শুধু একটা নীরব, নিঃশব্দ সহানুভূতি।

রায়হান তখন প্রথমবারের মতো অনুভব করে — কেউ যদি নীরবে ভালোবাসে, সেই ভালোবাসার শব্দ হয়তো কানে আসে না, কিন্তু হৃদয়ের গভীরে তার সুর তুলে।

,

,

চলবে.....

⛔ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌

( এই গল্পের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটা গল্প)

#গল্পফ্যাক্ট #অহংকারের_পরাজয়

গল্প:  #নিঃশব্দ_নীরিক্ষা লেখনীতে:  🔒 কপিরাইট © সংরক্ষিতপর্ব : ১০---আরহাম আজ সকাল থেকে অস্থির হয়ে বসে আছে,  সেই দিন মেহের...
13/07/2025

গল্প: #নিঃশব্দ_নীরিক্ষা
লেখনীতে:
🔒 কপিরাইট © সংরক্ষিত
পর্ব : ১০

---

আরহাম আজ সকাল থেকে অস্থির হয়ে বসে আছে, সেই দিন মেহেরকে যেভাবে মাহিরের সঙ্গে দেখলো, সেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না আজও, বুকের ভেতর কেমন করে, রাগে আর হিংসায় ভেতরটা পুড়ে যায়, অথচ সে কিছু বলতেও পারে না, মুখ ফুটে কিছু জিজ্ঞেসও করতে পারে না, তবুও তার চোখ বারবার মেহেরের সেই মুখ মনে করে, যেখানে সে মাহিরের সঙ্গে খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলছিল, যেনো কত দিনের চেনা তারা, আর সেই দৃশ্যটাই আরহামের চোখে বারবার ভেসে ওঠে।

সে দাঁতে দাঁত চেপে রাগ চাপতে চায় কিন্তু পারছে না, হিংসার তীব্র আগুন তার ভেতরে জ্বলছে,
সে ভাবে..... কে এই লোক ? মেহেরের কি হয়? কেনো এত স্বাভাবিক ব্যবহার করেছিলো মেহের ?

হঠাৎ তার নিজের মনেই সন্দেহ জন্মায়, মেহের কি ঐ লোকটার সঙ্গে ডেট করছে? নাকি তাদের মধ্যে আগে থেকেই কিছু ছিলো? নাকি এখনো আছে?

এইসব সে আগে কেনো ভেবে দেখেনি। এই ভেবে সে নিজের কপাল নিজেই চাপড়াতে থাকে।

আরহাম ঠিক করে, সে এই রহস্য ভাঙবেই, সে জানবেই ঐ লোকটা কে, তার পরিচয় কি, কেনো মেহেরের আশেপাশে এতো ঘুরঘুর করে ।
আর মেহেরের কাছে তার সম্পর্ক কি, কী পরিচয় তার মেহেরের কাছে।

সবকিছু তাকে জানতে হবেই, আর আজকের মধ্যেই তা জানতে হবে, নাহলে এতো সময় অপেক্ষা করা তার ধৈর্য্য কুলাবে না ,

এইসব হিবিজিবি চিন্তায় তার মাথা আরও গরম হয়ে যায়, রাগে তার চোখ মুখ লাল হয়ে যায়,

সে নিচু কন্ঠ স্বরে বলে উঠলো...

~আরহাম: ‘তুমি শুধু আমার মেহের , আমি ব্যতীত তোমার পাশে আমি নিজের ছায়া কে ও সহ্য করবো না !’ সেখানে ঐ লোকটা তোমায় ছুঁয়েছে, এর শাস্তি ঐ লোকটা কে পেতেই হবে, তুমি ও পাবে তবে সেটা স্পেশাল ভাবে। তোমাকে ছোঁয়ার অধিকার একমাত্র আমার, আর কেউ ছুঁতে পারবে না তোমায় কেউ না।

তার রাগ এমন পর্যায়ে যায়,,,
যে সে অফিসের ডেস্কে রাখা কলম ছুড়ে ফেলে দেয়, টেবিলের ফাইলগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়, চেয়ারটা ঠেলে উঠে দাঁড়ায়, ভেতরটা উত্তেজনায় কাঁপছে।

তখন ফারহান দরজায় নক করে ঢুকে,
রুমের অবস্থা দেখে তার মুখে অস্বস্তিতীর চাপ, কিছু বলবে কি বলবে না বোঝে উঠে না, কিন্তু শেষমেশ নরম কণ্ঠে বলে—

‘স্যার, সব ঠিক আছে তো? আপনি কি কোনো বিষয়ে রেগে আছেন।’

আরহাম গম্ভীর গলায় বলে—‘
~ফারহান, তোমাকে কাল রাতের বলা ঐ লোকটার সব খুঁটিনাটি বের করে দাও, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব, সব ইনফরমেশন, ঠিকানা, পরিবার, ব্যাকগ্রাউন্ড, সব সব লাগবে আমার আর আজকে মধ্যেই চাই।’

~ফারহান একটু চমকে যায়, কারণ স্যার সচরাচর কাউকে নিয়ে এতটা আগ্রহী হয় না বিশেষ করে মেয়েদের বিষয় ,

কিন্তু মুখে কিছু না বলে সে সোজা মাথা নেড়ে বলে..

~‘ঠিক আছে স্যার, আমি এক্ষুনি গিয়ে সব ডিটেইলস খুঁজে বের করছি, আর আজকের মধ্যেই সব বের করে আপনাকে পাঠাচ্ছি ।’

ফারহান বের হয়ে যায়, আরহাম আবার চেয়ারটায় বসে পরে, কিন্তু তার ভেতরের অস্থিরতা এখনও কমে নি, সে দুই হাত দিয়ে কপাল চেপে ধরে, চোখ বন্ধ করে,

একটানা ভাবে—‘মেহের, তুমি কি সত্যিই অন্য মেয়েদের মতো ? যখন আমি তোমার জীবনে থাকবো তখন ও কি, আমি থাকা স্বত্বেও অন্য কারো সঙ্গে মিশবে?

তারপর বাঁকা হেসে আবার বললো...

~আরহাম: তুমি যতোই অন্যদের সঙ্গে মিশো, আমি কি তোমাকে অন্য কারো হতে দিতে পারি? না, কোনোভাবেই না!’ যা উড়ার উড়ে নাও সেই তোমায় বন্দী হতে হবে আমার রাজত্বে।

এই বলে সে উন্মাদের মতো হাসতে লাগলো।

-------------------------

ফারহান ফিরে আসে প্রায় ২ ঘণ্টা পরে, হাতে কিছু ফাইল আর ফোনে কিছু ছবি, আরহামের টেবিলে সব সাজিয়ে রেখে বলতে লাগলোো—

‘স্যার, যতটুকু পেরেছি জেনে ফেলেছি। লোকটার পুরো নাম মাহির সাদমান হক। বয়স আনুমানিক আপনার কাছাকাছি,, বা এর কম বেশি। ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে, ধনসম্পদের অভাব নেই, পড়াশোনা ও অনেক করেছে, দেশের বাইরে থেকেও পড়েছে কিছুদিন, অন্য কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড পাই নি আপতত । আর মেডামের সঙ্গে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক খুঁজে পাইনি, অন্তত রেকর্ডে নেই, হয়তো বন্ধুত্ব, অথবা পরিচিত কেউ। তবে মেডাম যে ভার্সিটি তে পড়াশোনা করে,,, একসময় ঐ ভার্সিটির ছাত্র ছিলো ঐ লোকটা। এগুলো ছাড়া আর কোনো কিছুই পেলাম না।

তবে আপনি যদি চান, আমি আরও খুঁটিয়ে দেখবো।

আরহাম ঠান্ডা গলায় বললো...

~আরহাম: হুম ভালো কাজ করেছো। বাকি সময় থাকলে তুমি যাচাই করে দেখো, মেহেরের সঙ্গে তার সম্পর্ক কী, আগে থেকে চেনে নাকি নতুন করে পরিচয়। আর সাবধানে করো, কোনো প্রকার ঝামেলা চাই না আমি।’

ফারহান আবার মাথা নেড়ে বললো,,
‘ঠিক আছে স্যার।’

ফারহান বেরিয়ে গেলে আরহাম কাগজগুলো আবার পড়ে দেখে, তারপর মাহিরের ছবিটা কে কিছুক্ষণ ঘুড়িয়ে পিরিয়ে দেখতে লাগলো।

ঠোঁটের কোণে তীব্র বিদ্রুপের হাসি খেলে যায় তার,

~আরহাম: ‘ তো তুমি তাহলে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে এসেছো? হা হা হা....
ভালো, খুব ভালো! আমি ও দেখবো তুমি কতদূর যেতে পারো।’

তারপর কিছু একটা ভেবেই ওর ঠোঁটে হাসি খেলে গেলো... তারপর আবেগ ভরা কন্ঠে বলে উঠলো..

~আরহাম: মেহের আমার মন ময়ূরী,,, এখন থেকে যা হবে সামনা-সামনিই হবে,, অনেক হয়েছে আর না, এবার তোমার সামনে আমাকে ধরা দিতেই হবে দেখছি।

--------------------------------

এদিকে রিকা নিজের কক্ষে বসে আছে,

তার চোখে আগুনের ঝিলিক, মুখে বিদ্বেষের ছাপ, সে কলম দিয়ে কাগজে মেহেরের নাম লিখে, বারবার কেটে দিচ্ছে, ওর হাবভাব এমন যেনো মেহের কে একেবারেই সারাজীবনের জন্য মুছে ফেলতে চায় পৃথিবী থেকে..!

তার শ্বাস ভারী হয়ে আসে, চোখ ফেটে যায় রাগে।

মনে মনে সে ভাবে......

~রিকা: ‘তুই মাহিরের কাছে এতটা দামি কেনো মেহের ? তুই কি মনে করিস তুই মাহিরের খুব যোগ্য? তোর ওই সুন্দর চেহারা, শীতল চাহনি, সবকিছু নষ্ট করে দেবো আমি! তোর মুখ আমি মাটিতে
ঠেকিয়েই ছাড়বো! সবাইকে দেখাবো তুই কতটা তুচ্ছ!’

রিকা রাগে কাগজটা ছিঁড়ে ফেলে, ঘরে পায়চারি করে, আবার থামে।

ঠান্ডা মাথায় ভাবে—‘না না, এভাবে রাগ করে হবে না, পরিকল্পনা করতে হবে, খুব সূক্ষ্ম ভাবে প্ল্যান করতে হবে, যাতে কেউ বুঝতে না পারে, এর পিছনে আমি আছি।

~রিকা: আমি ওর এমন অবস্থা করবো, যাতে ও নিজের মুখ টাও কাউকে দেখাতে ভয় পায়, ওর সব সম্মান আমি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবো!’

সে তার মোবাইলে কাউকে কিছু একটা লিখে পাঠায়, চোখে সেই ভয়ঙ্কর হাসি,
ঠোঁটে শুষ্ক চাপা স্বর....

~রিকা: ‘মেহের, তোকে তো শেষ করেই ছারবো! এবার আমি আমার আসল খেলা শুরু করবো!’ কে বাঁচাবে তোকে।

-------------------------------------------------------------

রাত ১২ টায় আরহাম বাসায় ফিরে,,,,,,

দিনের ক্লান্তি পেছনে ফেলে, সে গাড়ি থেকে নেমে,

ধীরে পা ফেললো বাসার দিকে।
পরিচিত বাড়ির দিকে তাকিয়ে একটু হাসল...।
এটাই তার শান্তির জায়গা, তার সবচেয়ে আপন এই বাড়ি টা,, তার ছোট বেলার কত-শত সৃতি চোখের সামনে ভাসতে লাগলো।

এরপর এগিয়ে যায় দরজার সামনে,
কলিং বেল বাজাতেই কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে গেলো।

সামনে তার মা লুবনা সিদ্দিকী দাড়িয়ে আছে.... মুখে চিরচেনা মমতা মাখানো হাসি, একটু অবসন্ন চেহারা।

তা দেখে আরহামের বুকটা ধক করে উঠলো...

~আরহাম: “মা!”

একদম শিশুদের মতো আবেগী কন্ঠে ডেকে ওঠে আরহাম।

সে ঝট করে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে, মাথাটা মায়ের কাঁধে রেখে বলে,

~আরহাম: তোমার চেহারা এমন লাগছে কেনো মা? “বলো তো আজ তোমার শরীর কেমন আছে?” ঔষধ ঠিক মতো নিচ্ছো তো??

লুবনা সিদ্দিকী হালকা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,

~লুবনা সিদ্দিকী: “আমার বয়স হয়েছে বাবা... শরীর আজ ভালো তো কাল খারাপ। তুই তো সারাদিন অফিসে পরে থাকিস, আর দেখার মতো কেউও তো নেই। তুই ও ঠিক করে সময় দিস না...”

মায়ের কণ্ঠে অভিমানের কোমল রেশ, আরহাম তা টের পায়। হালকা হেসে বলে,

“আচ্ছা মা, এবার থেকে একটু আগে আসবো। কথা দিচ্ছি।”

কিন্তু লুবনা সিদ্দিকী চুপচাপ থাকে না। তিনি বলেই ফেলে,

~ লুবনা সিদ্দিকী : “তোর তো অনেক বয়স হলো বাবা... এবার বিয়েটা কর। আমি তোকে কিছু মেয়ের ছবি দেখাচ্ছি । যদি পছন্দ করিস, তাহলে...”

~আরহাম হেসে বলে,
“উফফফ মা! বাড়িতে আসতে না আসতেই আবার সেই বিয়ের কাহিনি শুরু করলে?”

~ লুবনা সিদ্দিকী : আচ্ছা আর বলবো না“ তবে তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি ?”

~আরহামের মুখের হাসিটা হালকা চুপসে যায়। তবে কিছুটা আন্দাজ করে মাথা নিচু করে বলে,

~আরহাম: “হুম, বলো।”

~লুবনা সিদ্দিকী চোখ সরু করে বলে,,,

“ মেয়েটা কে?

আহরাম অবাক হওয়ার ভান করে বললো..

~আরহাম: কোন মেয়ে; আমি তো কোনো মেয়ে কেই চিনি না।

তখন লুবনা সিদ্দিকী ওর কান চেপে ধরে বললো...

~যার ছবি নিজের ওয়ালেটে লুকিয়ে রেখেছিস?তার কথা বলছি। আজ রুম ঘুচাতে গিয়ে ও বেডশিটের নিচে একটা স্কেচ পেয়েছি। এক জোড়া চোখ... , কে সে মেয়ে?”

মায়ের চোখে কৌতূহলের আলো জ্বলে উঠে। আরহাম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে, তারপর ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে। তবে ভয় ও হয় মা যদি রাগ করে।

তবে লুবনা সিদ্দিকীর চোখ ততক্ষণে আনন্দে ঝলমল করছিলো।

তিনি নিজের মনে ভাবেন...

~লুবনা সিদ্দিকী: যাক আমার পাগল ছেলে টা বুঝি অবশেষে কারো প্রেমে পরেছে! আল্লাহ, ওর সকল মনের আশা পূরণ করুক, ও যেনো সবসময় ভালো থাকে।

তখন আরহাম বললো...

~আরহাম: “সব বলবো মা, আগে একটু ফ্রেশ হয়ে আসি, তারপর না হয় বসে গল্প করা যাবে,”

এই বলে আরহাম তার রুমে চলে যায়।

---

লুবনা সিদ্দিকী ফ্রিজ থেকে তরকারি বের করে,,।
তা গরম করে টেবিলে সাজিয়ে রাখছিলো।

এমন সময় আরহাম ফ্রেস হয়ে নিচে নামে।

তাকে দেখে লুবনা সিদ্দিকী একটু হেসে বললেন,

~লুবনা সিদ্দিকী: “আজ সকালে জিনিয়া চলে গেছে। তাই আগের মতো তাড়াতাড়ি বাড়ি পিরিস,, এতো রাত করিস না আর।

তারপর একটু থেমে আবার বলে উঠলো..

~এই কয়দিন বাইরে খেয়ে খেয়ে চেহারার এমন হাল করেছিস, আমার বউমা তোকে দেখে, পাত্তা দিবে তো?”

~আরহাম চোখ বড় বড় করে মায়ের দিকে তাকায়।

“আরে ! এখনও তো বিয়েই করলাম না, তাতেই বউমার পক্ষে চলে গেলে? যখন বিয়ে করবো, তখন তো আমাকে চিনবেই না তুমি!”

~ লুবনা সিদ্দিকী খিলখিল করে হেসে বলেন,

“বিয়ে করিস না কেনো, বল? আমি কি তোকে বারণ করেছি কখনো? বরং আমি তো চাচ্ছি তুই তাড়াতাড়ি বিয়ে কর। আমি ও একটু নিশ্চিন্ত হবো ।

আর প্রতিদিন এতো রাত পর্যন্ত তোর জন্য অপেক্ষা করতে পারবো না আমি, দেখ চোখের নীচে কালি পরে গেছে ! ভাবছি, তোর দায়িত্বটা এবার থেকে তোর বউকে বুঝিয়ে দেবো। তাহলে আমি একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। তার জামাই কে পাহারা দেওয়াটা দিন দিন কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে আমার জন্য ।”

আরহাম এবার মন থেকে হাসি ফেললো। এমন হাসি যা তার ভিতরের সব ক্লান্তি দূর করে দেয়।
সে মন প্রাণ উজাড় করে নিজের মা’কে দেখে—এ মানুষটাই তো তার জীবনের নিরাপদ আশ্রয়। তার সব ব্যথার ঔষধ।

তার মা তখন একটু নরম হয়ে বলেন,

~লুবনা সিদ্দিকী: “মেয়েটা নিশ্চয়ই খুব লক্ষ্মী, তাই না রে অভ্র? আমি তো লক্ষ্য করেছি, ইদানীং তুই আগের তুলনায় খুব বেশি মন খুলে হাসিস। আগের থেকে ও বেশি পরিপাটি হয়ে থাকিস, সময় মতো খাস, কথাবার্তায় ও এক ধরনের শান্ত ভাব এসেছে। কে সে, বল না?”

(‘অভ্র’—এই নামটা তার মা শুধুই আবেগে ভরা মুহূর্তেই ডাকে। আর সেই ডাকেই যেনো আরহাম ভেতরটা ঠান্ডা হয়ে যায়)

সে মুখ নিচু করে মাথা নাড়ে, একটা লাজুক হাসি তার ঠোঁটের কোণে খেলে যায়।

এতেই লুবনা সিদ্দিকী বুঝে যায়, তার ছেলের এই হাসি একেবারেই মিথ্যে হতে পারে না।

লুবনা সিদ্দিকী আলতো করে আরহামের মাথায় হাত রাখে,,,।
চুলে বিলি কেটে বলেন,
~ “মেয়েটার জন্য মন থেকে দোয়া করি রে। আল্লাহ যেনো ওকে সবসময় সুখে রাখে, আর তার পাশাপাশি আমার ছেলের জীবনটাকে ও যেনো রঙিন করে তুলে। তোর মুখে হাসি যেনো এভাবেই লেগে থাকে সারাজীবন ।”

একটু থেমে আবার বলেন,
~ওর নাম কি রে অভ্র আর “দেখাবি না আমায় মেয়েটাকে?”

আরহাম এবার একটু ঝুঁকে গিয়ে বলেন,
— “দেখাবো মা, অবশ্যই দেখাবো। তবে এখন না। যখন সময় আসবে, তখন তোমার সামনে একেবারে দাঁড় করিয়ে দিবো, তখন তুমি দেখো মন ভরে।” আর ওর পরিচয় ও তখনই বলবো তোমায়।

লুবনা সিদ্দিকী হাসে। সেই হাসির মাঝে মিশে থাকে তৃপ্তি, ভালোবাসা, আর এক মায়ের অপেক্ষার অবসানের ছোঁয়া।

---------

রাতের ডিনারটা আজ অন্যরকম হয়ে ওঠে।
মা-ছেলের মাঝে এক নরম আসার আলো জ্বলে ওঠে।

রাতের খাবার টেবিলে বসে আরহাম আজ নিজের ডায়েটের কথা ভুলেই তৃপ্তি নিয়ে পেট ভরে খায়।

লুবনা সিদ্দিকী অবাক হয়ে বলেন,
~ “কি ব্যাপার, আজ তো দেখি সব খেয়ে নিচ্ছিস! আজ তোকে দেখে মনে হচ্ছে মনটা একেবারে ফুরফুরে!”

আরহাম মুচকি হেসে বলে,
~তুমিই তো বলো “মাঝে মাঝে নিজের মনকেও খুশি রাখতে হয়, তাই না মা?”

লুবনা সিদ্দিকী চুপচাপ, আবেগী ভরা চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকেন।

মনে মনে বলে....

আজ কতো টা বছর পর তোকে আবার আগের মতো দেখছি আমি, অভ্র।
আমি মন প্রাণ থেকে দোয়া করি মেয়েটা যেনো তোর জীবন আলোকিত করে আসে,, সে যেনো আমার ছেলের মন বুঝে। আর ও যখন এবাড়িতে আসবে, তাকে আমি কখনোই কষ্ট পেতে দিবো না, কারণ সে আমার ছেলের মন ছুঁয়েছে...।

_____________________________________

শহরের অন্য প্রান্তে মাহির নিজের ফ্ল্যাটে শুয়ে আছে, রাত গভীর হয়ে গেছে, জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস ঢুকছে, পর্দা গুলো হালকা দুলছে, কিন্তু মাহিরের চোখে ঘুম নেই, সে একমনে ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে, হঠাৎ হাসে, হঠাৎ গম্ভীর হয়, তার মনের ভেতর হাজারটা চিন্তা— তবে সবই মেহেরকে ঘিরে ।

সে ভাবে....

~মাহির: মেহের কি জানে আমি ওর জন্য কতটা সিরিয়াস? নাকি ও আমায় নিয়ে কিছুই ভাবে না?

ওকে যখন হাসতে দেখি, মনে হয় এই পৃথিবীর সব আলো ওর চেহারায় নেমে আসে, অথচ ওর দূরত্ব আমার বুকে ছুরির মতো আঘাত করে ।

কেনো এত কঠিন তুমি মেহের? তোমার কোলে মাথা রেখে একটু শুতে চাই,,,, কিন্তু পারি না, কারণ সেই অধিকার আমার নেই।

সেইদিন ও তোমার চোখে আমার জন্য কোনো অনুভূতিই ছিলো না, শুধু ঠান্ডা শীতলতা, যেনো আমি তোমার কিছুই না, একদম অপরিচিত কেউ।

কিন্তু আমি কেনো পারি না তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে!

~মাহির: মেহের তুমি কি সত্যিই আমায় বুঝতে পারো না?’ নাকি বুঝেও, না বুঝার ভান করো।

এই বলে মাহির হেসে ফেলে নিজের উপর, চোখ দুটো পানিতে টলমল করে,

একদম নিচু স্বরে বলে—‘মেহের, তুমি জানলে ও না , আমি কতবার তোমাকে কল্পনায় ছুঁয়েছি, তোমার চুলে আঙুল বুলিয়েছি, তোমার কপালে চুমু খেয়েছি, তোমার রাগে নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে থেমে গেছি, তোমাকে ভালোবেসে হাজার স্বপ্ন বুনেছি, অথচ এই বাস্তবে তোমার কাছে আমি কিছুই না!’

তারপর আবার উঠে বসে, বালিশে মুখ চেপে ধরে, চোখের পানি লুকাতে চায়, কারণ পুরুষ হয়ে কাঁদা বেমানান, কিন্তু ভালোবাসা তো বাছাই করা যায় না, তাকে পায়ের নিচে চাপা দেওয়া যায় না।

সে আবার শুয়ে পড়ে, বাতি নিভিয়ে দেয়, চোখ বন্ধ করে ভাবতে থাকে—‘যা-ই হোক, আমি তোমাকে ছাড়বো না মেহের, যতোই তুমি আমায় পাত্তা না দাও, আমি সব সময় তোমার আশেপাশেই থাকবো , কারণ আমি আর অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতে বা কল্পনা করতে পারি না!’ আমার তোমাকেই লাগবে।

------------------------------------------

শহরের আলো-আঁধারি রাতে আলাদা আলাদা মানুষ আলাদা আলাদা চিন্তায় ডুবে আছে—

একজন রাগে, হিংসায় শত্রুতা, অপমান আর লজ্জার ষড়যন্ত্রে মেহেরকে মাটিতে টেনে নামাতে চাইছে।
অন্য দিকে দুইজন দুই প্রান্তের মানুষ নিঃশব্দে প্রেমের জালে মেহেরকে কল্পনায় বুনছে,,,,।

এদিকে মেহের নিজে যুদ্ধ করছে নিজের দায়িত্ব, কর্তব্য আর,, হৃদয়ের নিঃশব্দ অতীতের যন্ত্রণার সঙ্গে।

ওরা নিজেদের মতো করে তাকে দখল করতে চাইছে, অথচ মেহের কাউকেই আজ পযন্ত নিজের মন খুলে বলতে পারে নি .... সে কেমন করে ক্লান্ত হয়, কেমন করে একা পথ হেটে এতো দূর এসেছে, যেই মেয়ে অন্ধকারের ভয়ে কাঁদত , অথচ আজ সেই মেয়ে হাতে পিস্তল তুলে নিয়ে শত্রুদের সামনে দাঁড়ায়।

রাত গভীর হতে হতে এই শহর নিঃস্তব্ধ হয়, শুধু মানুষের মনের যন্ত্রণা গুলো থেকে যায়, অন্ধকারে চাপা পরে না তা —আর সেই যন্ত্রণা থেকেই জন্ম নেয় ভালোবাসা, হিংসা, প্রতিযোগিতা, আর ষড়যন্ত্রের সূক্ষ্ম বীজ।

'

,

চলবে....

ভুল ভ্রান্তি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন যেহেতু রিচেক করা হয় না; আর ভালো না লাগলে দয়া করে এড়িয়ে যাবেন।

(সম্পূর্ণ কাল্পনিক গল্প কেউ বাস্তব ভেবে নিবেন না)

👉দুঃখিত কিছু সমস্যার কারণে গল্পের আগের থিম & নায়কের নাম সহ চেঞ্জ করা হয়েছে।

#নিঃশব্দ_নীরিক্ষা #গল্পফ্যাক্ট

গল্প:  #অহংকারের_পরাজয়লেখিকা:  পর্ব : ৪---তৃষা আজ ভার্সিটি থেকে একটু মন খারাপ নিয়েই বাড়ি ফিরে। দরজা ঠেলে ঢুকে মায়ের মুখে...
12/07/2025

গল্প: #অহংকারের_পরাজয়
লেখিকা:
পর্ব : ৪

---

তৃষা আজ ভার্সিটি থেকে একটু মন খারাপ নিয়েই বাড়ি ফিরে। দরজা ঠেলে ঢুকে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দেয়, তবে কথাবার্তায় আগের মতো সেই প্রাণ নেই।
~ কী রে, ক্লান্ত লাগছে ? –তার মা জিজ্ঞেস করল।
ছোট করে জবাব দিল তৃষা....
~না মা, ঠিক আছি,

তার মা আর কিছু জিজ্ঞেস করেন না। তৃষা সরাসরি নিজের রুমে চলে যায়। ব্যাগটা পাশে রেখে আয়নার সামনে দাঁড়ায়। মুখটা বিবর্ণ লাগছে, সে ধীরে ধীরে কাপড় পাল্টিয়ে, মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়, বেরিয়ে এসে চুল গুলো আঁচড়ে গুছিয়ে নেয়। তারপর বিছানায় বসে উপরে ছাদের দিকে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ। বাইরে থেকে ভেসে আসে বিকেলের ঠান্ডা হাওয়া।

-----------------------

অন্যদিকে রায়হান ও আজ ভার্সিটি শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে।

মা তাকে দেখে খুশি হয়ে বলেন..
~ আয় বাবা, হাতমুখ ধুয়ে নে।

রায়হান চুপচাপ মায়ের কথামতো কাজ করে। তারপর মায়ের সাথে বসে গল্প করে।
তার মা রান্না করছিলো, তাই সে তার মা কে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করছিলো,,।
যেমন তাকে পেঁয়াজ কেটে দেয়, আলু ধুয়ে দেয়, থালা- বাসন সরিয়ে রাখে।

তার মা খুশি হয়ে বলেন,
~বিয়ের পরে ও সবসময় এভাবে বউয়ের পাশে থাকিস বাবা, কেমন?

রায়হান লজ্জা পেয়ে মৃদু হেসে মাথা নেড়ে বলে,
~ আচ্ছা মা।

রাতের খাবার তাদের বাসায় আহামরি কিছু রান্না হয় না সাদামাটাই হয়, আজ ও তার ব্যতিক্রম হয় নি। রায়হান খুব স্বাভাবিকভাবে খেয়ে উঠে যায়। মা তাকে আদর করে কপালে হাত বুলিয়ে দেন।

-----------------------

আর ওদিকে তৃষা খাবার টেবিলে বসে, খাবার আঙ্গুল দিয়ে নাড়াচাড়া করছিলো, মনে হচ্ছে তার মন খাবারে না অন্য কোথাও পরে আছে।

তার মা জিজ্ঞেস করলো..
~কিরে খাচ্ছিস না কেনো? রান্না ভালো হয় নি আজ ?

তৃষা হকচকিয়ে উঠে সংক্ষেপে উত্তর দেয়...
~হুম ভালোই।

খাবার খাওয়ার পর তৃষা নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পরে। তবে আজ আর কিছুতেই ঘুম চোখে ধরা দেয় না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে তার রায়হানের কথাই বারবার মনে পরে।

~তৃষা: কেমন ছেলে রে এটা!
( মনে মনে ভাবে তৃষা)
এত বড় ছেলে হয়েও মুখ ফুটে কিছু বলে না। কোনো রাগই নেই ওর মধ্যে ? কেউ কিছু বললে ও প্রতিবাদ না করেই সহ্য করে যায় প্রতিনিয়ত। আর কখনো হাসতেও দেখলাম না ওকে। সবসময় কেনো এতো চুপচাপ থাকে!

এইসব ভাবতে ভাবতেই চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে, টেরই পায় না।

_________

হঠাৎ মাঝরাতে একটা স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায় ওর। বুক টা ধড়াস ধড়াস করছে এখন ও। নিঃশ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে স্বাভাবিকভাবে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে – রাত ৩ টা বাজে।

সে একটু আগে যা স্বপ্নে দেখেছে, সেটা এখন ও খুবই স্পষ্ট ভাবে মনে আছে তার।

সে দেখেছে – তার বিয়ে হচ্ছে। সে সুন্দর করে বিয়ের কনে ও সেজেছে । কপালে টায়রা , ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, পরনে পরিপাটি লাল শাড়ি। মুখে মিষ্টি হাসি লেগে আছে। আশেপাশে মেয়েরা খুশি হয়ে হইচই করে বলছে –
~ বর এসেছে, বর এসেছে!

তৃষা কৌতূহল নিয়ে বসে আছে – কখন বরকে দেখবে। অবশেষে তার অপেক্ষার অবসান করে, বর তার কাছে আসে। আস্তে করে মাথার ঘোমটা টা সরিয়ে তার কপালে আলতো করে একটা চুমু খায়।

~তৃষা চোখ বন্ধ করে স্বপ্নের মধ্যেই,,,, তৃপ্তি নিয়ে সেই স্পর্শ গুলো উপভোগ করে।

তারপর চোখ মেলে তাকায় বর কে দেখার জন্য ....

বর কে দেখে তার মুখ দিয়ে আপনাআপনি বেরিয়ে আসে একটা নাম,,,

~তৃষা: রায়হান!

তবে স্বপ্নে দেখা রায়হান আর বাস্তবের রায়হান দুজনেই একদম আলাদা।
বর বেশে দাড়িয়ে থাকা রায়হানের চোখে চশমা নেই। আর তার চোখ দুটো গভীর আর আত্মবিশ্বাসী। গালে হালকা খোঁচা খোঁচা দাড়ি। ও হাসলে মনে হচ্ছে হাসির সঙ্গে চোখ দুটি ও হাসছে।

তৃষা এতটাই অদ্ভুত আবেশে ডুবে যায়, যে বুকের ভেতর কেমন খামচে ধরে।

তারপর হঠাৎ এই স্বপ্নের দৃশ্যে দেখেই তার ঘুম ভেঙে যায়। তৃষা এখন ও হাপাতে থাকে,
বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়। তারপার আস্তে করে কপালে হাত রাখে – যেখানে রায়হান স্বপ্নে চুমু খেয়েছিলো।

~তৃষা: কী সব আজে বাজে স্বপ্ন দেখছি আমি!

সে ঘামতে থাকে,,,, আর নিজের সাথে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো....

~ রায়হানের সঙ্গে আমার বিয়ে! অসম্ভব,,, এটা কখনো হতেই পারে না। ওর সঙ্গে আমার যায় নাকি,,,,

ওর সঙ্গে তো আমার এখন ও কথাই হয় নি ঠিক করে। আর এত গম্ভীর টাইপের ছেলে ও , কখনো হাসতে পযন্ত দেখি নি এই কয়েক দিনে । আত্মসম্মান বা রাগ বলতে ও কিছু নেই ওর মধ্যে,,,,, আসলেই ও একটা ছোটলোক ।

এভাবে কিছুক্ষণ বসে থাকে সে,,, তবে ঘুম আর চোখে ধরা দেয় না।

-------------------------------

রাতের স্বপ্নটা তৃষাকে আজ পুরো পুরি ভাবে এলোমেলো করে দিয়েছে।
যতই সে চোখ বন্ধ করে ভাবে সে এইসব আর ভাবতে চায় না, ততই চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে সেই দৃশ্য।
বরের সাজে রায়হান, তার দিকে তাকিয়ে সেই নরম হাসি, কপালে আলতো চুমু— যেনো সত্যি সত্যিই কপালে এখন ও সেই স্পর্শ লেগে আছে।

ভোরের আলোয় চোখ মেলে সবার আগে কপালে হাত দিয়ে দেখে—
~তৃষা: এ কেমন অনুভূতি,,, কেমন পাগল পাগল লাগছে নিজেকে,,,, উফফ কিচ্ছু ভালো লাগছে না আমার।

আজকের সকালটা অন্য দিনের মতো শুরু হলে ও তৃষার মনে আজ ছিলো অদ্ভুত অস্থিরতা।
কাল রাতের স্বপ্ন তার ভেতর যেনো নরম কিছু বীজ ফেলে গেছে।
বিছানা ছাড়তে গিয়ে ও তার মনে পরে যায় স্বপ্নের রায়হানের সেই হাসিটা।
অস্বস্তিতে নাক সিঁটকায় সে।

আর ভাবে.....
“ নিশ্চিত কিছু একটা হয়েছে আমার… নাহলে ঐ ছেলেটা কে নিয়ে কেনো এতো ভাবছি আমি!”

এইসব ভাবতে ভাবতেই ওয়াশরুমের দিকে এগোয়,,,, ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে,,আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
এলোমেলো চুল গুলো আঁচড়ে গুছিয়ে নেয়,
তারপর হালকা কাজল টেনে নেয় চোখে ।
তবে নিজের চোখে আজ যেনো অন্য কিছু খুঁজে পায়।
এক ধরনের শীতলতা,, যেনো আস্তে আস্তে একটু নরম হয়ে আসছে তার মন।

~তৃষা: “না না! আমি এইসব কি ভাবছি? আমি তো এমন ছিলাম না!” নিশ্চয়ই ঐ ছোটলোকের বাচ্চা টা কিছু একটা করেছে আমার সঙ্গে। আমার থেকে প্রতিশোধ নিতে।

রাগে তার চোখ দুটো লালা হয়ে যায়।

তারপর বই- খাতাপত্র গুছিয়ে ভার্সিটি যাওয়ার উদ্দেশ্য বাড়ির বাইরে পা বাড়ায়।
গাড়িতে বসে হাওয়ায় উড়ানো চুল সামলাতে সামলাতে ভাবে,,,,
~ “রায়হান? ওই ছেলেটা? যাকে আমি এই কয়েক দিনে কত অপমান করেছি, প্রতিনিয়ত ছোট করে কথা বলেছি,
যার সঙ্গে আমার কথা বলতে ও ভালো লাগে না… আর তাকেই আমি আমার স্বপ্নে দেখলাম,,,আবার যেমন তেমন স্বপ্ন না ডাইরেক্ট বিয়ে ?”

একদম গা জ্বলে যায় নিজের ওপর।
~তৃষা: “ আর আমার জন্য এটা কি করে স্বপ্ন হতে পারে , এটা তো আমার জীবনের একটা দুঃস্বপ্ন ! আমি আর এইসব নিয়ে ভাববো না!”

কিন্তু ভাবনা কি আর এতো সহজে থামে?
এরই মধ্যে তার গাড়ি ভার্সিটির সামনে এসে থামে।

---------------------------------

ভার্সিটির গেইটের কাছে আসতেই রিমি আর স্বর্ণা দৌড়ে এসে তৃষার গায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পরে।

~রিম: “এই তৃষা তোর এই অবস্থা কেনো!” ফ্রেশ না হয়েই চলে এসেছিস নাকি।

~স্বর্ণা: হ্যাঁ, আমি তো তোকে দূর থেকে চিনতেই পারি নি,,, তারপর আংকেলের গাড়ি দেখে সিউর হলাম।

তখন নিহান পিছন থেকে এসে মজা করে বললো।

~নিহান: কিরে তৃষা আজ সূর্য কোন দিকে উঠলো?
যে তুই কোনো মেকআপ না করেই সাধারণ একটা ড্রেস পরেই ভার্সিটি তে চলে এসেছিস।

~তৃষা তখন খেয়াল করলো আসলেই তো,,,,সে রাতের পরা থ্রি পিচ টা পরেই ভার্সিটি তে চলে এসেছে।

তৃষা সাধারণত নাইট ড্রেস পরেই ঘুমায়,, কিন্তু কাল রাতে কি হলো কে জানে,, হঠাৎ করেই অনেক দিন পর তার থ্রি পিচ পরতে মন চাইলো, তাই ঝোঁকের বসে পরে ও ছিলো।
আর তাড়াহুড়ো করে আসার ফলে,,, সে এটা পরেই ভার্সিটি তে ও চলে এসেছে।

এই ভেবে সে নিজের কপাল চাপড়াতে লাগলো।

আর কথা ঘুরানোর জন্য বললো....

~তৃষা: আরে বলিস না, আজ আমার কি হয়েছিলো আমি নিজে ও জানি না। সব সময়ই তো স্লিভলেস পরি তাই আজ হঠাৎ করেই মন চাইলো থ্রি পিচ পরতে, অনেক দিন পরা হয় না তো তাই।

~রিমি বললো..
come on তৃষা,, আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না তুই এই সব বলছিস, যে মেয়ে স্লিভলেস ছাড়া চলতে পারে না,,, সে নাকি থ্রি পিচ পরে আমার সামনে দাড়িয়ে আছে... আমি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।

~স্বর্ণা: হ্যাঁ তৃষা, তুই আবার কবে থেকে এইসব গাইয়া মার্কা জামা কাপড় পরা শুরু করলি, ছিঃ

~নিহান: এভাবে বলার কি আছে স্বর্ণা, ওকে তো ভালোই লাগছে বরং স্লিভলেস পরলে ওকে বাজে দেখায়।

তখন রাকিব বললো..
~রাকিব: তোরা এই সব ছাড় তো, তৃষা যাই পরে তাতেই ওকে হেব্বি হট লাগে, উফফস ওকে দেখলেই মন চায়...

আর কিছু বলার আগেই তৃষা রেগে গিয়ে বলে...
~মুখ সামলে কথা বল রাকিব।

নিহান ছুটে গিয়ে রাকিবের সামনে দাড়ালো। ওর কলার চেপে চোখ মুখ লাল করে বললো..

~নিহান: তোর সাহস হয় কি করে তৃষা কে এই ভাবে বাজে ইঙ্গিতে কথা বলার? তোকে তো আমাদের বন্ধু ভাবতে ও লজ্জা করছে আমার

~রাকিব: আরে,, তোরা আমার সামান্য একটা কথা কে এতো বড় করে নিচ্ছিস কেনো,,, আমি তো মজা করেই বললাম।

~নিহান: কিসের সামান্য? তুই তৃষা কে এক্ষুনি Sorry বলবি।

তৃষা মাথা নিচু করে বললো..
~তৃষা: আহ্ নিহান বাদ দে না ও তো বললো মজা করে বলেছে।

~রিমি: হ্যাঁ নিহান তুই সব কিছু এতো সিরিয়াসলি নিস কেনো,, রাকিব তো বললো ও মজা করে বলেছে।

নিহান রেগে বললো আমি বলেছি যখন ওকে Sorry বলতেই হবে, আর রিমি আমি নিজে ও একটা ছেলে।

তারপর রাকিবের দিকে তাকিয়ে বললো..
So, আমি জানি কার নজর কেমন,, কোনটা মজা আর কোনটা বাজে ইঙ্গিত সেটা আমি খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারি।

নিহানের কথা শুনে কেউ আর কিছু বললো না...
তবে তৃষা মনে মনে খুব আঘাত পেয়েছিলো রাকিবের কথায়।

তারপর নিহান রাকিব কে বললো..

~নিহান: এখনো দাড়িয়ে আছিস কেনো রাকিব,,, তাড়াতাড়ি তৃষা কে চরি বল,,,, আর এটাও বল, এমন ধরনের মজা আর কখনো করবি না ওর সঙ্গে,,
কি হলো বল।

নিহানের চিল্লাচিল্লি তে আসেপাশের অনেকেই জড়ো হয়ে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলো আর কানাঘুষা করছিলো।

তখন তৃষা লজ্জায় মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ছিলো,
আর সে রায়হানের কথা ভাবতে লাগলো প্রথম দিন যখন সে রায়হানের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করছিলো, তখন ঠিক এই ভাবেই আশেপাশের সবাই মজা উড়াচ্ছিলো। রায়হান হয়তো কোনো প্রতিবাদ করেনি কিন্তু সময় ঠিকই তাদের একই জায়গায় দাঁড় করিয়েছে।

তৃষা এইসব ভেবে অনুশোচনায় চোখ বন্ধ করে পেললো,, আর তার চোখ বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো।

রাকিব নিহানের সঙ্গে আর পেরে না উঠে শেষমেশ তৃষা কে চরি বলতে বাধ্য হয়।
তারপর সে চলে যায়,, তবে যাওয়ার আগে বলে যায়..

~রাকিব: আমি তোকে দেখে নিবো তৃষা।

রাকিব চলে যাওয়ার পর নিহান আশেপাশের সবাই কে ধমক দিয়ে চলে যেতে বলে।
এরপর সবাই সবার গন্তব্যে চলে যায়।

-------------------------------------------

ক্লাসে গিয়ে তৃষা মন মরা হয়ে বসে থাকে। সে ভিতরে ভিতরে ভেঙে পরছিলো,,, স্বর্ণা তার পাশেই বসে তাকে শান্তনা দিচ্ছিলো।
তবে হঠাৎ করে রায়হানকে দূর থেকে দেখেই তৃষার বুক ধক করে ওঠে। নিজের অজান্তে হাত কপালে চলে যায়।

আর মনে মনে বলে..

~তৃষা: উফ! এই ছেলেটার কথা ভাবলেই কেমন অস্থির অস্থির লাগে আজকাল!

রায়হান দূরে মাঠ পেরিয়ে ক্লাসে ঢুকে। তার মুখে সেই নির্লিপ্ত ভঙ্গি, চোখে চশমা। তৃষা তাকিয়ে থাকে আড়চোখে।

~তৃষা: ইশ! চশমা টা খুলে যদি হাসতো একবার! কেমন লাগতো তখন?

এইসব অদ্ভুত ভাবনায় তৃষা নিজেই লজ্জা পায়।

_____________________

ক্লাস শুরু হয়.....

তৃষা বই খুলে বসে। কিন্তু মন পড়ায় বসে না। রায়হান একবার নোট করে বইয়ের দিকে তাকায়, একবার জানালার বাইরে। তৃষা তাকিয়ে থাকে তার দিকে।

~তৃষা: একদম চুপচাপ, নির্বিকার ছেলেটা।

তৃষার মনের ভেতর কি যেনো গলগল করে। স্বপ্নে দেখা রায়হান কে বারবার চোখে ভেসে ওঠে।

আর তখনই সে টের পায় – কিছু তো হচ্ছে! কিছু তো বদলে যাচ্ছে তার ভেতরে ভেতরে।

---

চলবে,,,

⛔ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌

( এই গল্পের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটা গল্প)

#গল্পফ্যাক্ট #অহংকারের_পরাজয়

Address

Purba Laksam

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Marufa Afrin posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share